শেখ দীন মাহমুদ,পাইকগাছা(খুলনা) প্রতিনিধি॥ পাইকগাছার কপিলমুনিতে মসজিদের জমি জবর দখলের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় জনৈক তোকাজ্জামান গং রাতের আঁধারে ঐ জমি দখল করে উল্টো বিভিন্ন আদালতে মামলা দিয়ে জমি দাতাসহ মসজিদ কমিটি নের্তৃবৃন্দদের হয়রাণি করছে বলে অভিযোগে জানানো হয়।
অভিযোগে জানানো হয়, উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের কাজিমুছা গ্রামের মৃত চাঁদ গাজীর ছেলে বাদল গাজী তার ওয়ারেশ সূত্রে প্রাপ্ত রামচন্দ্র নগর মৌজার এসএ ৬৮৪ খতিয়ানের ৮৬৮ দাগের মধ্য থেকে গত ১৯৪৬ সালের ১৭ এপ্রিল ১২০৬ নং পাট্টা দলিল মূলে স্থানীয় সোনাই গাজীর স্ত্রী দেলজান বিবির নামে ১৯ শতক জমি বিক্রি করেন। এরপর ১৯৬২ সালের এসএ জরিপে দেলজান বিবির নামে উক্ত জমি রেকর্ড প্রস্তুত হয়। এরপর দেলজান বিবি উক্ত জমি ১৯৭৮ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ৮৭৪৯ নং দানপত্র দলিল মূলে তার ছেলে মো: নাজেম কাগজীকে হস্তান্তর করেন। সর্বশেষ বিআরএস জরিপে মোট ১.৬৪ একর সম্পত্তির মধ্য হতে উক্ত ২০ শতক সম্পত্তি নাজেম কাগজীর নামে প্রস্তুত হয়। যার খতিয়ান নং-১৩১৬,দাগ নং- ১৬৫২। নাজেম কাগজী উক্ত ২০ শতক জমির মধ্য হতে ১৬ শতক জমি ১৯৯৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারী কাজিমুছা পূর্বপাড়া জামে মসজিদের নামে দানপত্রমূলে হস্তান্তর করেন। যার দলিল নং- ৪৫২। এরপর থেকে মসজিদ কমিটির পক্ষে উক্ত জমি ভোগ-দখল করে আসছে।
স্থানীয় সাংবাদিক ও মসজিদ কমিটির নেতা মো: রফিকুল ইসলাম খান জানান, প্রথমত উক্ত জমিতে তারা নিজেরা মাছ চাষ করছিল। পরে তোকাজ্জামান গাজীদের কাছে চুক্তিভিত্তিক হারিতে ইজারা দেন। কিন্তু তারা প্রতি বছর হারির টাকা নিয়ে নানাবিধ টাল-বাহানা করতে থাকেন। যার প্রেক্ষিতে মসজিদ কমিটি চলতি মৌসুমে মসজিদের ১৬ শতক জমি মাপ-জরিপপূর্বক বের করে বেড়ি-বাঁধ দিয়ে স্থানীয় হুসাইন কাগজীকে চুক্তি ভিত্তিক ইজারা প্রদান করেন। হুসাইন উক্ত ঘেরে ঘেরা-বেড়া ও নেট দিয়ে প্রস্তুত করে প্রায় ৮০ হাজার টাকার চারা মাছ অবমুক্ত করেন। তবে সর্বশেষ গত ২ সেপ্টেম্বর তোকাজ্জামান গং উক্ত ঘেরের বাঁধ কর্তন করে সমুদয় মাছ তাদের ঘেরের মধ্যে ঢুকিয়ে নেয়। এছাড়া তারা ঘেরের ঘেরা-বেড়া ও নেট-পাটা উঠিয়ে তাদের বাড়িতে নিয়ে রাখে।
শুধু এখানেই শেষ নয়, তারা উল্টো মসজিদের জমিদাতাসহ মসজিদ কমিটির নের্তৃবৃন্দের নামে পাইকগাছা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। যার তদন্তভার স্থানীয় কপিলমুনি পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আব্দুল আলীমের উপর ন্যাস্ত হয়। এরপর তিনি সরেজমিনে তদন্তপূর্বক ঘটনার সত্যতা পেয়ে উভয় পক্ষকে নিয়ে মিমাংশার চেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হন।
এদিকে তোকাজ্জামান গাজী, রেজাউল ও মনিরুলরা উক্ত সম্পত্তি তাদের দাবি করে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন আদালতে হয়রাণি করে আসছে। এরআগে তারা পাইকগাছা নির্বাহী আদালতে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে একটি মামলা দিলে বিজ্ঞ আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য ও কাগজপত্র দৃষ্টে মামলাটি প্রথম দিনেই খারিজ করে দেন। এছাড়া তারা পাইকগাছা জর্জ আদালতে সকলকে সম্পৃক্ত করে একটি বাটোয়ারা মামলা করেছে যাতে নিজেদের দখল দেখাতে তারা মসজিদের জায়গা নিজেদের দখলে নিয়েছে।
সর্বশেষ জমি দখলের ঘটনায় মসজিদ কমিটি ও তাদের ইজারা গ্রহীতা ঘের মালিক তার ঘেরের বেড়ি-বাঁধ কর্তনপূর্বক ৮০ হাজার টাকার মাছ সরিয়ে নিয়ে অবৈধ দখলের প্রতিকার চেয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানানো হয়েছে।
এব্যাপারে তারা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের প্রতি জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
প্রিন্ট করুন
Discussion about this post