জীবনের সুস্থতা নির্ভর করে নিরাপদ খাদ্যের উপর। খাদ্য নিরপাদ না হলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি প্রবল হয়। তাই সারা বিশ্বে নিরাপদ খাদ্য এখন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে জাতীসংঘ। জাতী সংঘের অঙ্গ সংগঠন FAO এর উদ্যোগে বিশ্বব্যাপি রয়েছে নানা ধরণের কর্মকান্ড। এসব কর্মকান্ডের অংশ হিসেবে গঠিত হয়েছে কোডেক্স এবং আইএসও। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে খাদ্যের মান কেমন হওয়া দরকার তা নির্ধারণ করেছেন তারা।
তাদের নির্ধারিত মান নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন দেশে গঠিত হয়েছে অনেক সংস্থা। বাংলাদেশ খাদ্য নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ তেমনই একটি সংস্থা। এই সংস্থা ও বিশ্ব খাদ্য এবং কৃষি সংস্থার উদ্যোগে প্রেস ইন্সটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) এর আয়োজনে ঢাকায় একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গত ১৬ মার্চ প্রেস ইন্সটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) র আয়োজনে তাদের সেমিনার কক্ষে বাংলাদেশ খাদ্য নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ এবং মিটিং দ্যা আন্ডারনিউটেশন চ্যালেঞ্জ (এমইউসিএইচ) প্রজেক্ট, এফএও (গটঈঐ) প্রকল্পের সহযোগিতায় এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে প্রেস ইন্সটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য মো. মঞ্জুর মোরশেদ অপুষ্টি চ্যালেঞ্জ (গটঈঐ) প্রকল্পের জাতীয় নিরাপদ খাদ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন ফাওয়ের জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ মিজানুর রহমান বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিক ও পিআইবির প্রশিক্ষক সহ ৪০ জন উপস্থিত ছিলেন। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে দেশে এবং দেশের বাইরে যেসব সংস্থা কাজ করছে তাদের বিভিন্ন কর্মকান্ড নিয়ে সেমিনারে বিশদ আলোচনা করা হয়।
ওই সেমিনারে কোডেক্স ও আইএসও কিভাবে নিরাপদ খাদ্যের মান নির্ধারণ করে সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। কোডেক্স এবং আইএসও নির্ধারিত মান নিশ্চিত করণে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ কিভাবে কাজ করে তা নিয়েও আলোচনা করা হয়।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ খাদ্য নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষের সদস্য সদস্য মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন ২০১৫ সালে জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ গঠন করা হয়। ২০১৭ সাল থেকে এই সংস্থার কার্যক্রম জোরদার করা শুরু হয়। এই সংস্থা পাঁচ বছরে ১৩ টি রেগুলেশন তৈরি করেছে। এইসব রেগুলেশন বাস্তবায়নের জন্য জেলা পর্যায়ে তাদের কার্যক্রম সম্প্রসারিত করা হয়েছে।
পর্যাপ্ত অবকাঠামো ও লোকবল সুবিধা না থাকায় এই সংস্থার কার্যক্রম আশানুরূপ পর্যায়ে পৌঁছাতে পারেনি। তবে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করণে তারা যেসব পদক্ষেপ নিয়েছেন তার প্রতিফলন প্রস্ফুটিত হতে শুরু করেছে। এখন তাদের প্রয়োজন জনসচেতনা। আর এই কাজটির প্রধান সহায়ক গণমাধ্যম। তাদের মাধ্যমে গৃহিত কর্মসূচির প্রচার বাড়লেই জনগণ তাদের ওয়েব সাইট ভিজিট করবে। আর সেখানেই তারা নিরাপদ খাদ্য বিষয়ে যেসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা জানতে পারবে। কোথাও নিয়মের অনুসরণ না হলে জনগণ হটলাইন ব্যবহার করে তাদেরকে অবহিত করতে পারবেন।
(পিআইবি) মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ বলেন, জনসচেতনা নেই বলেই আজও এদেশের খোলা বাজারে অনিরাপদ খাদ্য অবাধে বিক্রি হতে পারছে। এর ভয়াবহ দিকগুলো প্রচারণায় আনতে পারলে রাস্তার ধারে খোলা খাবারের ক্রেতা থাকবেনা। এই জন্য আমরা এই কর্মশালার আয়োজন করেছি। আমরা আশা করবো মিডিয়া সংশ্লিষ্টরা এব্যাপারে অত্যান্ত জোরালো ভূমিকা পালন করবেন।
” FAO-MUCH ” project বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক বোরহানউদ্দিন বলেন, ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ কোডেক্স এর সদস্য হয়। খাদ্যের ব্যাবসা বাণিজ্যে-আমদানি রপ্তানিতে খাদ্যের মান নিশ্চিত করতে ১৮৯ দেশ একসাথে কাজ করে চলেছে। ২০২২ সালে ১০৭টি দেশে ১৭০টি প্রোডাক্ট হেলথ কেয়ারের জন্য সেইফফুড চূড়ান্ত করতে আইন প্রনয়ন হয়। কোডেক্সের নিয়ম-কানুন প্রচারের জন্য জরুরি ভূমিকা রাখতে পারে গণমাধ্যম ও তাদের সাংবাদিকরা। কোডেক্স কিভাবে নিরাপদ খাদ্যের মান নির্ধারণ করে সে বিষয়ে তিনি বিস্তারিত আলোচনা করেন।
বিশেষজ্ঞদের আলোচনার বিষয় নিয়ে সাংবাদিকরা তাদের মতামত তুলে ধরেন।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//মার্চ ১৯,২০২৩//

Discussion about this post