সিলেট অফিস: সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ঘরে ঘরে আবাসিক গ্যাস লাইন সংযোগ সহ স্থানীয়দের চাকুরীতে অগ্রাধিকার দেয়ার দাবীতে জাতীয় তেল গ্যাস রক্ষা অধিকার বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদের নেতৃবৃন্দ কৈলাশ টিলা গ্যাস ফিল্ড ও পেট্টোবাংলার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মিজানুর রহমানের আহবানে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
রবিবার সন্ধ্যায় গোলাপগঞ্জের পেট্রোবাংলার হল রুমে আয়োজিত মতবিনিময় কালে পেট্রোবাংলার জিএম পান্না লাল ধর, জিএম মোঃ ফারুক হোসেন, জিএম প্রদীপ কুমার বিশ^াস, জিএম কামরুল ইসলাম সরদার, জিএম আব্দুল জলিল প্রামানিক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে পরিষদের আহবায়ক ও গোলাপগঞ্জ পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফারুক আহমদ, সদস্য সচিব আব্দুল লতিফ সরকার, যুগ্ম আহবায়ক সাবেক কাউন্সিলর জানাল আহমদ জামাল, কাউন্সিলর নাজিম উদ্দিন, সমাজসেবী মোঃ জাহির উদ্দিন, মাসুদুর রহমান চৌধুরী মাসুদ, শ্রমিক নেতা মনিরুজ্জামান মনির, জাতীয় পার্টি গোলাপগঞ্জ উপজেলা আহবায়ক মুজিবুর রহমান মুজিব, বিএনপি নেতা মোঃ সিরাজুল ইসলাম, হাফিজ নুরুল হক, আসজাদুর রহমান রুম্মান, মজনু মিয়া, আব্দুর রউফ, নিরাপদ সড়ক চাই গোলাপগঞ্জের সভাপতি ইলিয়াস বিন রিয়াছত, নারীনেত্রী হামিদা পারভীন, মনোয়ারা ফেরদৌস, মনোয়ারা বেগম, উপজেলা প্রেসক্লাবের আহবায়ক আব্দুল জলিল, নিজাম উদ্দিন জুয়েল, কেএম আব্দুল্লাহ, রাজন আহমদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
নেতৃবৃন্দ তাদের পৃথক পৃথক বক্তব্যে পেট্রোবাংলার প্রশাসনকে বলেন, গোলাপগঞ্জ এলাকায় ৮টি গ্যাস কূপ রয়েছে। সেখানে তেল-গ্যাস উৎপাদন করায়, স্থানীয় বসতবাড়ির পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। দু’শ ফিট খনন করে লাখ টাকা খরচ করে পানি পাওয়া যাচ্ছে না। ৮নং গ্যাস কূপ খননের ফলে এবং জায়গা জমি অধিগ্রহণ করার পর ক্ষতিপূরণ পাওয়া যায়নি। অভার ডিলিং এর কারণে স্থানীয়রা রাতের বেলায় ঘুমাতে পারছে না। পেট্টোবাংলায় স্থানীয়দের চাকুরী স্থায়ীকরণ, গোলাপগঞ্জে উৎপাদিত তেল-গ্যাস দিয়ে গ্যাস ভিত্তিক ৫০ মেঘাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র গড়ে তোলার দাবী জানান। নেতৃবৃন্দ বলেন, স্থানীয় গোলাপগঞ্জবাসীকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চাকুরী দিতে হবে। বিগত কয়েক বছর আগে স্থানীয় জনসাধারণের বাড়িতে আবাসিক গ্যাস লাইন সংযোগ নিতে আবেদনের সঙ্গে লাখ লাখ টাকা জামানত দেয়া হয়েছিল। আজ পর্যন্ত গ্যাস সংযোগ দেয়া হয়নি। নেতৃবৃন্দ বলেন, গোলাপগঞ্জে ৩টি গ্যাস কূপ থেকে উৎপাদিত তেল গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যাচ্ছে। অথচ স্থানীয়া এরই সুবিধা ভোগ করতে পারছে না। ৭নং কূপে যারা লুটপাট করেছে, তাদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত করার দাবী জানানো হয়। নেতৃবৃন্দ বলেন, ৮নং কূপ খননের আগে পেট্রোবাংলার প্রশাসন বলেছিলেন, স্থানীয়দের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চাকুরী দেয়া এবং ঘরে ঘরে গ্যাস সংযোগ প্রদান করা হবে।
পেট্রোবাংলার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান নেতৃবৃন্দের বক্তব্য শোনে বলেন, স্থানীয়রা যেসব ন্যায্য দাবী তুলে ধরেছেন, সে সবের প্রতি তিনির দৃষ্টি হয়েছে। আগামীতে আরো গ্যাস কূপ খননের পরিকল্পনা রয়েছে। এলপিজি প্লান্ট বর্তমানে চালু রয়েছে। প্রশাসন বলেন, স্থানীয় অত্র পেট্রোবাংলায় চাকুরী অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেয়ার ব্যবস্থা করবেন। এলাকাবাসীর ন্যায্য দাবির প্রতি তিনি আন্তরিকতার সাথে বিবেচনা করবেন বলে আশ^াস দেন। অত্র প্রতিষ্ঠানে যে বা যারা দুর্নীতি করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন। অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত ১৭ জনের নিয়োগ বাতিল করা হবে। সেখানে কর্মরত সিবিএ নেতৃবৃন্দ অবৈধ কর্মকান্ড করেছেন সেগুলোর তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন। এছাড়াও পেট্রোবাংলা প্রশাসন বলেন, গোলাপগঞ্জে তেল-গ্যাস উত্তোলনের সময় পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে গিয়ে যে সব শব্দ হয়, এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আর যদি জন সাধারণে ক্ষতি হয় সেগুলোর ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য।
খালিদ সাইফুল, দৈনিক দেশতথ্য, ২৬ আগষ্ট ২০২৪