শেখ জাহাঙ্গীর আলম শাহীন, লালমনিরহাট থেকে:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২ আগষ্ট রংপুরে আগমন উপলক্ষ্যে পুরো উত্তরাঞ্চল জুড়ে সাজ সাজ রব পড়ে গেছে। আগষ্ট মাস মানে বাঙ্গালি জাতীর কাছে শোকের মাস। এবারের বিষয়টি একটু ভিন্নতা পেয়েছে।
এবারের রংপুরের মানুষ দেশের উন্নয়নে আগষ্ট শোকের মাসকে শক্তিতে পরিণিত করে ফেলেছে।
এই জনসভা ও শেখ হাসিনার আগমন রংপুর বাসীর জন্য অর্থনৈতিক ভাবে খুবেই গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে।
ঘোষনা আসতে পারে তিস্তা মহা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের । এই প্রকল্প ব্যয় নিধাণর হতে পাওে সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা। যাহা এযাবৎকালে দেশের সবচেয়ে বৃহত্তর বাজেটের পরিকল্পনা। যাহা পম্মাসেতুর বাজেটের চেয়ে বেশী।
শেখ হাসিনার উপর রংপুর বিভাগের মানুষের এবারেরও আস্থা রাখতে চায়। রংপুরের মানুষকে পুত্র বধু হিসেবে যে সকল স্বপ্ন দেখিয়ে ছিলেন অতীতে। তার প্রায় সকল স্বপ্নে চুড়ান্ত বাস্তবায়ন ঘটেছে। যেমন- মঙ্গা, শিক্ষা, যোগাযোগ ব্যবস্তা ও আইনশৃংখলা পরিস্থিতির উন্নয়ন। অন্য সব স্বপ্নের চুড়ান্ত বাস্তবায়নের পথে হাটছে। যার মধ্যে তিস্তা মহাপরিকল্পনা অন্যতম। রংপুরের মানুষ আলোচনার টেবিলে বসলেই বলেন, শেখ হাসিনা গত নির্বাচনের প্রায় সকল প্রতিশ্রুতি রংপুরের উন্নয়নে বাস্তবায়ন করে ফেলেছেন।
১৩ বছর আগে প্রধানমন্ত্রী রংপুর অঞ্চলের মঙ্গা দুরকরার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছিল রংপুর জেলা স্কুলের এই একই মাঠ। সরকারে এসে নানা সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করে সেই প্রতিশ্রুতির স্থায়ী সমাধান করেছেন। মঙ্গা এখন চলে গেছে যাদু ঘরে। এই অঞ্চলে আর কখনো মঙ্গা ফিরে আসবে না। সৃষ্টি হয়েছে স্থায়ী অর্থনৈতিক সামর্থ। বিগত ১৪ বছরে রংপুর অঞ্চলে চোখে ধরা উন্নয়ন গুলোর মধ্যে লালমনিরহাট জেলা সদরের বঙ্গবন্ধু আ্যারোনোটিক্যাল এন্ড এ্যাভিয়েশন বিশ্ব বিদ্যালয় স্থাপন হয়েছে সাড়ে সাতশত একর ক্যাম্পাস জুড়ে। ইতেমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪টি সেকশনের শিক্ষার্থী অনার্স চুড়ান্ত বর্ষে পা রেখেছে। কুড়িগ্রামে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পথে ভিসি নিয়োগ পেয়েছে। ক্যাম্পাসের অবকাঠামো নির্মাণ শুরু হয়েছে।
নীলফামারীতে মেডিক্যাল কলেজ স্থাপন হয়েছে, চালু হয়েছে ইপিজেট, দিনাজপুরে মেডিক্যাল কলেজ ও শিক্ষা বোর্ড় কার্যক্রম চালু হয়েছে। তিস্তা ও ধরলা নদীর উপর দুইট দুইটি কওে ৪টি সেতু নির্মান হয়েছে। গাইবান্ধায় তিস্তা নদীর উপর পৃথক অপর একটি সেতু নির্মানের কাজ শুরু হয়েছে। ফাকা টু রংপুর হয়ে লালমনিরহাটের উপর দিয়ে বুড়িমারী পর্যন্ত ফোর লেন রাস্তা কাজ এই সরকার শুরু করেছে ফাকা হতে রংপুর পর্যন্ত কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। শেখ হাসিনার সরকার কৃষিতে এনে দিয়েছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। রংপুর অঞ্চল এখন খাদ্যশস্য, প্রাণিসম্পদ, মাছ, সবজি, দেশি বিদেশী ফল চাষে মহাবিল্পব ঘটিয়েছে। জেলার খাদ্য ও পুষ্টির চাহিদা পুরন করে অভ্যন্তরিন দেশে অন্য জেলার চাহিদা মিটাচ্ছে। চা চাষে এসেছে বিল্পব। যাহা সমতলের চা চাষ হিসেবে দেশে বিদেশে ব্যাপক পরিচিতি ও অর্থনৈতিক সম্ভবানার দ্বার উম্মোচন করেছে। চা শুধু অর্থকরী ফসল নয়, চা পর্যটন শিল্প বিকাশে ব্যাপক ভুমিকা রেখেছে। এখন উত্তরের প্রায় প্রতিটি গ্রামে গ্রামে নারীদের চা বাগানে স্থায়ী ভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর সামাজিক ১০টি কর্মসূচি আমার বাড়ি আমার খামার, আশ্রয়ণ প্রকল্প, ডিজিটাল বাংলাদেশ, শিক্ষা সহায়তা কার্যক্রম, নারীর ক্ষমতায়ন কার্যক্রম, ঘওে ঘওে বিদ্যূৎ, সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রম সমূহ, কমিইনিটি ক্লিনিক ও মানসিক স্বাস্থ্য, বিনিয়োগ বিকাশ ও পরিবেশ সুরক্ষা। এসব কার্যক্রমের ফলে মাতৃর্মত্যুও হার শূন্যে নেমে এসেছে। দারিদ্রতার হার ৪১ ভাগ হতে ১৩ তে নেমে এসেছে। স্বাক্ষরতার হার পূর্বে ছিল ৪৫ ভাগ, বর্তমান সরকারের আমলে ৩০.৬ হাওে বৃদ্ধি পেয় দাঁড়িয়েছে ৭৫ ভাগে। ২০০৬ সালে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৫.৪০ ভাগ, এখন বর্তমান সরকারের আমলে এসে দাঁড়িয়েছে, ৭.২৩ ভাগ ( শতকরা হারে)। পূর্বেও সরকারের আমলে কৃষি উৎপাদন ছিল ২ হাজার কোটি ৬১ লক্ষ টন, বর্তমান সরকারের আমলে কৃষি উৎপাদন এসে দাঁড়িয়েছে ৯ কোটি ৮০ লক্ষ মে: টন। ২০০৬ সালে শ্রমিকের ন্যন্যতম মজুরী ছিল ১৪৬২ টাকা, বর্তমান সরকারের আমলে তা দাঁড়িয়েছে ৮৩০০ টাকা। ২০০৬ সালে বেকারত্বেও হার ছিল ৬.৭৭ ভাগ শতকরা, এখন বেকারত্বেও হার বর্তমান সরকারের আমলে কমে এসে দাঁড়িয়েছে ৩.৬ ভাগ । মাতৃমৃত্যুও হার পূর্বে ছিল লাখে ৩৭০ জন, বর্তমান সরকারের আমলে হ্রাস পেয়ে দাঁড়িয়েছে লাখে লাখে ১৬১ জন।
একটি দেশের সার্বিক পরিস্থিতির উন্নয়ন সূচক গুলো বলে দেয় দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিও সূচক উর্ধ্বে উঠেছে। অর্থনৈতিক সামর্থ ও সমৃদ্ধি কয়েক মগুণ বেড়েছে। সমৃদ্ধিও পথে বাংলাদেশ। দেশে এখন শতভাগ গ্রামে বিদ্যূৎ প্যেচ্ছে গেছে। যেকোন সরকারের তুলনায় এখন দেশে বিদ্যূৎবিভ্রাট হ্রাস পেয়েছে। করোনা ও যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বেশ কয়েকটি উন্নয়নশীল দেশে অর্থনীতি টালমাটাল পরিস্থিতিতে রয়েছে। শৃলংকারমত দেশ দেউলিযা হয়ে পথে বসেছে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ তার দেশের অর্থনৈতিক সূচক নি¤œমুখী হতে দেয়নি। বরং কোন কোন ক্ষেত্রে বেড়েছে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখতে শেখ হাসিনা ও তার সরকারের অবদান অতুলনীয়। যার কারণে আগামী জাতীয় নির্বাচনের সামনে রংপুরের এই জনসভা তাঃপর্যপূর্ণ গুরুত্ব বহন করতে যাচ্ছে। দেশের মানুষ মুখিয়ে আছে জনসভা হতে কী দিক নির্দেশনা আসছে। শেখ হাসিনা চলমান সরকার বিরোধদলের সরকার হঠাও আন্দোলন সম্পর্কে ধেশবাসীকে কী মেসেজ দিতে যাচ্ছেন। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন সম্পর্কে কী সিদ্ধান্ত আসছে সেটা শুনার জন্য অধির আগ্রহে ও উৎকন্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন। রংপুরের মানুষ মনে প্রাণে বিশ্বাস কওে শেখ হাসিনা মানে রংপুরের উন্নয়ন। শেখ হাসিনা ব্যক্তিগত ভাবে রংপুরের উন্নয়নে অবদান রেখে দৃষ্টান্ত স্থাপন কওে গেছেন। রংপুর এখন সমৃদ্ধি এক জনপদেও নাম। তিস্তা মহা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়ে দেশের এক নম্বও অর্থনৈতিক উন্নয়নের বিভাগ হবে রংপুর। এক নম্বর অর্থনৈতিক উন্নয়নের জেলা হবে লালমনিরহাট। শেখ হাসিনার এই জনসভা তাই খুবেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। রংপুরেরর মানুষ তারপুত্র বধুকে বরণ করতে ফুল, ধান, দুবলার ঘাসের ডালা সেজে বসে রয়েছে।
লালমনিরহাট জেলাবাসী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আগামী দিনে যে সকল উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের দাবি তুলেছে সেগুলো হচ্ছে- বুড়িমারী ল্যান্ডপোর্টের অবকাঠামো উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ , মোগলহাট রেললাইন চালু করণ ও মোটলহাট ত্রিমাত্রিক বন্দর হিসেবে বাস্তাবয়ন, জেলা সদরের অদুরে মহেন্দ্র নগরে প্রতিশ্রুত ইপিজেট বাস্তবায়নে কার্যক্রম চালু, লালমনিরহাট রেলওয়ে লাইন কে মিটার গেজ রেখে পাশে ব্রডগেজ নির্মাণ, লালমনিরহাট সদও হাসপাতল কে ৫শত বেড় ঘোষনা করে মেডিক্যাল কজেজে রুপান্তর করা, লালমনিরহাট৬ বিমান বন্দও চালু করা ইত্যাদ্দি দাবি তুলেছেন। এগুলো দাবির প্রতি বিগত দিনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিগতদিনে সর্মথন ছিল। তাই জনগণ দ্রুত বাস্তবায়ন চায়।
Discussion about this post