প্রবাসী সাইফুল ইসলাম (৩৫) দেশে এসে শ্বশুর গিয়ে শ্বশুর শাশুড়ী স্ত্রী ও শ্যালিকার হাত-পা বেঁধে বটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে। তাদেরকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রচুর রক্ত ক্ষরনে তিন জনের অবস্থা খুবই আশংকা জনক। হত্যা চেষ্টাকারী প্রবাসী সাইফুলকে স্থানীয় লোকজন আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
আজ শুক্রবার (১২ নভেম্বর) ভোরে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ১০ নং গোড়াই ইউনিয়নের সোহাগপাড়া মৈশালপাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে।
প্রবাসী সাইফুলের স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার (১৮) এসএসসি পরীক্ষার্থী। শাশুড়ী গার্মেন্টস কর্মী নাসিমা বেগম (৫০) এবং শালিকা স্কুল ছাত্রী সিমু আক্তার (১৪)।
সুমাইয়ার খালাতো বোন শ্যামলী আক্তারসহ তার স্বজনা জানায়, সাইফুলের পিতার নাম বিল্লাল হোসেন। গ্রামের বাড়ি মির্জাপুর উপজেলার বাঁশতৈল ইউনিয়নের আমরাতৈল গ্রামে।
সাইফুল দীর্ঘ ১০ বছর সাউথ আফ্রিকা থেকে গত এক বছর পুর্বে দেশে ফিরে আসেন। ৬/৭ মাস পুর্বে সোহাগপাড়া মৈশালপাড়া গ্রামের স্বামী পরিত্যাক্ত নাসিমা বেগমের কন্যা সুমাইয়াকে বিয়ে করে। সুমাইয়য়া গোড়াই উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী। আগামী রবিবার এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। এই ঘটনার পর সুমাইয়ার এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
সুমাইয়ার পিতার নাম খায়রুল ইসলামের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনা। নাসিমা বেগম স্বামী পরিত্যাক্ত হওয়ায় অভাবেরর সংসারে দুই কন্যা সুমাইয়া ও সিমু এবং তার মা জয়নব বেগমকে সঙ্গে নিয়ে গোড়াই এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে মন্ডল গ্রুপে নারী শ্রমিকের কাজ করতেন।
সাইফুল দীর্ঘ দিন প্রিবাসে থাকলেও সমস্ত টাকা পয়সা তার পিতাকে পাঠাতেন। দেশে ফিরে এসেও পরিবারের কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতা না পাওয়ায় হতাশায় ভুগছিল।
এ নিয়ে তার পরিবারের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো বলে সুমাইয়ার পরিবার জানায়। এছাড়া বিয়ে করলেও স্ত্রীকে ভরন পোষন দিতেন না।
গত রবিবার সাইফুল সোহাগপাড়া মৈশালপাড়া গ্রামে শাশুড়ীর ভাড়া বাড়িতে আসে। স্ত্রী এসএসসি পরীক্ষা দিবে এ নিয়ে শাশুড়ীসহ পরিবারের লোকজনদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এতে সাইফুল তাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যদের হত্যার পরিকল্পনা নেয়।
আজ শুক্রবার ভোর রাতে বাসার সকলের অজান্তে রান্না ঘর ধেতে বটি নিয়ে এসে ভয় ভিতি দেখিয়ে স্ত্রী, শাশুড়ী ও শালিকাকে হাত-পা বেঁধে ফেলে।
তারা চিকৎকার করলেও সবাইকে বটি দিয়ে এলোপাথাড়িভাবে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। আশপাশের লোকজন ঘটনার টের পেয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় মা ও দুই মেয়েসহ তিনজনকে উদ্ধার করে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করে।
এসময় সাইফুলকে বটিসহ আটক করে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অজ্ঞান অবস্থায় সাইফুলকে আটক করে হাসপাতালে চিকিৎসা দেন। এখন সে পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। এ ঘটনায় নাসিমা বেগম মা জয়নব বেগম বাদী হয়ে মির্জাপুর থানায় মামলা দায়ের করেচেন। মামলা নং ১৩, তাং-১২-১১-২০২১ইং।
এ ব্যাপারে কুমুদিনী হাসপাতালে যোগাযোগ করা হলে চিকিৎসকগন জানান, তিন জনের মধ্যে নাসিমা বেগম ও সুমাইয়ার আশংকা জনক। তাদের চিকিৎসা চলছে।অপর দিকে সুমাইয়ার পরিবার ও তার স্কুলের সহপাঠিরা অমানবিক এই ঘটনার মুলহোতা সাইফুলকে দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবী জানিয়েছে।
এ ব্যাপারে দেওহাটা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আইয়ুব হোসেন খান বলেন, ঘটনাটি খুবই অমানবিক। ঘটনার মুল্য রহস্য উৎঘাটনের চেষ্টা চলছে।
![প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন](http://dailydeshtottoh.com/wp-content/plugins/wp-print/images/printer_famfamfam.gif)
Discussion about this post