দেশতথ্য রিপোর্ট
জাতীয় পার্টির (জাপা) জিএম কাদের সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা, ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বিরোধী দলীয় উপনেতা এবং জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ নির্বাচিত হয়েছেন। আর সংসদ সদস্য হাফিজউদ্দিন আহম্মেদকে বিরোধীদলীয় হুইপ মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। পার্টির সংসদীয় দলের এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবনে বিরোধী দলীয় উপনেতার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভা থেকে তাদের নির্বাচন করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন একাদশ সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতা জি এম কাদের। বিগত দুইটি সংসদের মতো এবারও বিরোধী দল হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়
সভা থেকে। সভার সিদ্ধান্ত লিখিতভাবে স্পিকারকে জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান জাপার মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।
তিনি বলেন, আমাদের সংসদীয় সভায় সংসদের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিরোধী দল হিসেবে জাপা কিভাবে আরও কার্যকর ভূমিকার রাখতে পারে সেসব বিষয়ে কথা হয়েছে। দলের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে দলীয় ফোরামে আলোচনা হবে। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি বিরোধী দলের আসনে বসছে, এটা নিশ্চিত। কার্যপ্রণালি বিধি
অনুযায়ী অন্য কারো সংসদে বিরোধী দল হওয়ার সুযোগ নেই।
একই কথা বলেন জাপার কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি। জাপার আরেক এমপি মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী জানান, শপথ নেওয়ার পর থেকে হাসপাতালে ছিলেন। তিনি সংসদীয় সভায় অংশ নিতে পারেননি। দলে কেন এমন পরিস্থিতি হচ্ছে তার কারণও তিনি খুঁজে পাচ্ছেন না।
জানা গেছে, জাপা পাঁচটি সংসদীয় কমিটিও চেয়েছে। যেসব কমিটির চেয়ারম্যান হবেন জাপার এমপিরা।এবারের নির্বাচনে ২২৩টি আসনে জয় পেয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থীরা। আর জোটগতভাবে নৌকা প্রতীক নিয়ে জয়ী হয়েছেন মোট ২২৫ জন। এই নিরঙ্কুশ জয়ে টানা চতুর্থবারের মত সরকার গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসন পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। ৬২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিজয়ী ঘোষণা করা
হয়েছে, তাদের ৫৯ জনই আওয়ামী লীগের নেতা।
গত দুই সংসদে প্রধান বিরোধী দলের আসনে বসা জাতীয় পার্টি শেষ পর্যন্ত ১১ আসনে জয় পেয়েছে। আর আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিকদের মধ্যে জাসদ একটি, ওয়ার্কার্স পার্টি একটি এবং এক সময় বিএনপির জোটে থাকা কল্যাণ পার্টি একটি করে আসন পেয়েছে।
সংরক্ষিত নারী আসন বাদে একাদশ সংসদে জাতীয় পার্টির আসন ছিল ২৩টি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তাদের প্রার্থী ছিল ২৬৪ আসনে। এর মধ্যে ২৬টি আসনে আওয়ামী লীগ তাদের ছাড় দিয়েছিল। অর্থাৎ, ওই ২৬ আসনে নৌকার কোনো প্রার্থী রাখা হয়নি।
কিন্তু বেশিরভাগ আসনে আওয়ামী লীগ নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে টক্কর দেওয়ায় শেষ পর্যন্ত ছাড় পাওয়া আসনের অর্ধেকেও জয় পায়নি জাতীয় পার্টির লাঙ্গল। অধিকাংশ আসনে লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থীদের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।
এই ১১ জন হলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের (রংপুর-৩), আনিসুল ইসলাম মাহমুদ (চট্টগ্রাম-৫), এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার (পটুয়াখালী-১), মজিবুল হক চুন্নু (কিশোরগঞ্জ-৩), হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ (ঠাকুরগাঁও-৩), এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান (কুড়িগ্রাম-১), শরীফুল ইসলাম জিন্নাহ (বগুড়া-২), মো. আশরাফুজ্জামান (সাতক্ষীরা-২), গোলাম কিবরিয়া টিপু (বরিশাল-৩), এ কে এম সেলিম ওসমান (নারায়ণগঞ্জ-৫) ও মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী (ফেনী- ৩)।