ইরফান উল্লাহ, ইবি :
রাজধানীতে চাঁদা না দেওয়ায় যুবদল নেতা কর্তৃক সোহাগ নামের এক ভাঙারি ব্যবসায়ীকে নির্মমভাবে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (১১ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া মোড় থেকে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা।
পরে মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে এসে প্রতিবাদ সমাবেশে মিলিত হয়।
এসময় শিক্ষার্থীরা ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘আমরা ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘সন্ত্রাসীদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘চাঁদাবাজের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘বিচার বিচার বিচার চাই, চাঁদাবাজের বিচার চাই’, ‘অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘যুবদলের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘ওয়ান টু থ্রি ফোর, চাঁদাবাজ নো-মোর’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেয়।
প্রতিবাদ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, স্বাধীন বাংলার একজন নাগরিককে চাঁদা দেয় নাই সেই অজুহাতে পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা করা হয়েছে। কারা করেছে সেটা জাতির কাছে স্পষ্ট হয়েছে তারা মানুষকে হত্যাই করেই ক্ষান্ত হয়নি, লাশের উপর দাঁড়িয়ে নিত্য করেছে। আমরা হুঁশিয়ার করে বলতে চাই, ২৪ উত্তর স্বাধীন বাংলাদেশের যারা চাঁদাবাজি কায়েম করতে চাইবে তাদেরকে জাতি কখনো মেনে নেবে না। যারা একের পর এক ধর্ষণ, চাঁদাবাজি করে যাচ্ছে তাদেরকে বলতে চাই, আমরা এই বাংলাদেশ দেখার জন্য আন্দোলন করি নাই। আবু সাইদরা এই বাংলাদেশ করার জন্য রক্ত দেয় নাই। ইন্টারিম গভর্নমেন্ট আপনারা আপনাদের মেরুদন্ড সোজা করুন আপনাদেরকে বিপ্লবী জনতার ক্ষমতায় বসিয়েছে। মানুষ মারা যাবে কিন্তু আপনারা তার বিচার করতে পারবেন না জনগণ তাহলে আপনাদের ক্ষমতা থেকে নামিয়ে দিবে। সুতরাং অপরাধী যেই দলেরই হোক তার সর্বোচ্চ বিচার নিশ্চিত করতে হবে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক ইয়াসিরুল কবির বলেন, আমরা তাদের মুখে বারবার শুনি নির্বাচন না দিলে নাকি দেশের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা ঠিক হবে না। কিন্তু আমরা এটাও দেখতে পাই যে নির্বাচন না হওয়ার কারণে ঐ সংগঠনটি সবচেয়ে বেশি খুনের রাজনীতি করছে। এই খুনের রাজনীতি তারাই কায়েম করতে চায় আর তারাই বলতেছে নির্বাচন চাই। আমরা দেখতে পাই গত ১৭ টি বছর একটি সরকার স্বৈরাচারী শাসন কীভাবে কায়েম করেছিল। কীভাবে একটা সরকার মিডিয়াকে কন্ট্রোল করেছিলো। আমরা আজকে দেখতে পাই কীভাবে একজন ব্যবসায়ী ভাইকে চাঁদার জন্য নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, রাজধানীতে চাঁদা না দেওয়ায় মো. সোহাগ (৪৩) নামের এক ভাঙারি ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে ও পাথর দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। গত বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে মিটফোর্ড হাসপাতালের তিন নম্বর গেটসংলগ্ন রজনী ঘোষ লেনে এ ঘটনা ঘটে। সেদিনই পুলিশ যুবদল নেতা মঈনসহ দুজনকে আটক করেছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত শতাধিক মানুষের সামনে ঘটে যাওয়া এই হত্যাকাণ্ডের ভয়াবহতা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে সমালোচনা সৃষ্টি হয়।