মোহাম্মদ সোহেল, ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল)
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে গৃহবধু প্রমিতি গোস্বামী পুজার মৃত্যু কারন উদঘাটনের দাবীতে রবিবার (২১ এপ্রিল) সকালে ভূঞাপুর উপজেলা পরিষদ চত্বরের সামনে মানববন্ধন করে তার পরিবার ও এলাকাবাসী।
অন্যান্যর মধ্যে মানববন্ধনে অংশ নেয় ভূঞাপুর উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি বাবু স্মরণ দত্ত, সাবেক শিক্ষক কালিপদ দে সরকার, পুজা গোস্বামীর পিতা স্বত্ব রঞ্জন গোস্বামী প্রমুখ।
মানববন্ধনে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি বাবু স্মরণ দত্ত বলেন, প্রমিতী গোস্বামী পূজার মৃত্যুরহস্য আইনি প্রক্রিয়ায় দ্রুত উম্মোচন করে দোষীদের কে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করার জোড় দাবি জানান।
সাবেক শিক্ষক কালীপদ দে সরকার বলেন, পূজা খুবই ভাল ছিল এই নির্মম মৃত্যুর রহস্য উম্মোচন করার জন্য প্রশাসনকে জোর দাবি জানাই।
পূজার মা তার বক্তব্যে বলেন, সম্পূর্ণ পরিকল্পিত মিথ্যা সাক্ষীর ভিত্তিতে পূজার মামলার তদন্ত রিপোর্ট দেয়া হয়েছে, যার কারণে এ তদন্তের বিরুদ্ধে আদালতে না রাজি দিয়েছি। পুনরায় সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য মামলা সুত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ২৭ নভেম্বর হিন্দু ধর্ম রীতি অনুযায়ী বিবাহ হয় জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলার চাপার কোনা গ্রামের শিবনাথ কাঞ্জিলালের ছেলে পলাশ কাঞ্জিলালের সাথে। বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই যৌতুকের কারণে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে। উপায়ন্ত না দেখে তাকে ৩ লক্ষ টাকা যৌতুক প্রদান করে নিহতের বাবা। তাতেও সে ক্ষান্ত হননি। এক পর্যায়ে তার গর্বের সন্তান আসলে সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য হাসপাতালে নিয়ে যায়, অপারেশনের পরে বিষাক্ত কোন ইনজেকশন দিয়ে দিয়েছে বলে দাবি করেছেন নিহতের বাবা। পুজাকে অসুস্থ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল, ময়মনসিংহ মেডিকেলে চিকিৎসাও করানো হয়।
পরিশেষে তার অবস্থা বেশী খারাপ হলে ২০২১ সালের ৩০ এপ্রিল খুলনা বাগেরহাটের চিতলমারি থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের বাবা সত্যরঞ্জন গোস্বামী বাদী হয়ে পূজার স্বামী পলাশ কাঞ্জিলাল, পিতা শিবনাথ কাঞ্জিলাল সহ পাঁচজনকে আসামি করে আদালতে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলাটি অধিকতর তদন্তের স্বার্থে ডিবিতে প্রেরণ করা হয়।
গত ২০২৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি ডিবি উত্তর টাঙ্গাইলের সাব ইন্সপেক্টর মোঃ আবু সিদ্দীক ঘটনার সততা পাওয়া যায়নি বলে এই মর্মে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। এতে করে মেয়ের মৃত্যু ও ন্যায় বিচার নিয়ে শংকায় পড়েন বাবা সত্যরঞ্জন গোস্বামী। তিনি পুনঃ তদন্তের জন্য ২০২৩ সালে ৩ এপ্রিল আদালতে। আবেদন করেন। নিহতের বাবা বলেন, আমার মেয়েকে কৌশলে হত্যা করা হয়েছে, তিনি বলেন মরার কয়েক দিন আগেও বলেছে বাবা ওরা আমাকে নির্যাতন করছে আমি সহ্য করতে পারছি না। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে তার হত্যা রহস্য উদঘাটন করে দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করার দাবি জানান।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//২১ এপ্রিল ২০২৪//