কূটনৈতিক প্রতিবেদক
সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে প্রাণঘাতী হামলার প্রতিশোধ নিতে ১৩ এপ্রিল শনিবার ইসরায়েলে তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে তেহরান। এর মাধ্যমে প্রথমবারের মতো ইসরায়েলে সরাসরি হামলা চালিয়েছে ইরান। এর আগে অবশ্য ছায়া যুদ্ধে লিপ্ত ছিল দুই দেশ। তবে এই আক্রমণের তীব্রতা আরও বেড়েছে গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে।
একসময় ইরান এবং ইসরায়েলের মধ্যে সুসম্পর্ক ছিল। তাদের মুখোমুখি অবস্থান বর্তমানে পুরো বিশ্বের কাছে চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও দীর্ঘদিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যে মিত্র গোষ্ঠী ও প্রক্সি বাহিনীর একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে ইরান।তাদের দাবি সেটি ওই অঞ্চলে মার্কিন ও ইসরায়েলি স্বার্থ চ্যালেঞ্জ করতে গঠিত একটি ‘প্রতিরোধ অক্ষের’ অংশ। বিভিন্নভাবে ইরানকে সমর্থন করে থাকে এই নেটওয়ার্ক।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের মিত্রদের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো সিরিয়া। দেশটিতে এক দশক ধরে চলা গৃহযুদ্ধের মাঝে বাশার আল আসাদ সরকারকে টিকিয়ে রাখতে রাশিয়ার পাশাপাশি সহায়তা করেছে ইরান।
এছাড়া ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে রয়েছে লেবাননের হিজবুল্লাহ। ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই আন্তঃসীমান্তে ইসরায়েলের সঙ্গে তাদের গোলাগুলি চলছে। সীমান্তের দুই দিক থেকেই হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিক বাধ্য হয়েছেন তাদের বাড়িঘর ছাড়তে।
অপরদিকে বেশ কয়েকটি শিয়া মিলিশিয়া গোষ্ঠীকে সমর্থন করে ইরান। সিরিয়া ও জর্ডানে থাকা মার্কিন ঘাঁটিতে রকেট হামলা চালিয়েছে এসব গোষ্ঠী। জর্ডানে একটি সামরিক চৌকিতে দায়িত্বরত তিন মার্কিন সেনার মৃত্যু ও এর পাল্টা জবাব দিতে দেখা গেছে যুক্তরাষ্ট্রকে।
আবার ইয়েমেনের হুতি আন্দোলন সমর্থন করে ইরান। গোষ্ঠীটি ইয়েমেনের সবচেয়ে জনবহুল অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করে। গাজায় হামাসের প্রতি সমর্থন প্রদর্শনের জন্য হুতিরা ইসরায়েলকে নিশানা করে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ছুড়েছে। শুধু তা-ই নয়, লোহিত সাগরে ৫৮টি বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা চালিয়ে কমপক্ষে একটি জাহাজকেও ডুবিয়ে দিয়েছে।
বলা হয়ে থাকে, হামাসসহ সশস্ত্র ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলোকে অস্ত্র সরবরাহ করে এবং প্রশিক্ষণ দেয় ইরান। হামাস গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ওপর হামলা চালিয়েছিল যা গাজায় যুদ্ধের সূত্রপাত ঘটায়। একই সঙ্গে তা মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতেরও সৃষ্টি করে যেখানে জড়িয়ে পড়েছে ইরান, তাদের প্রক্সি ও ইসরায়েলের মিত্র গোষ্ঠীও।

Discussion about this post