Print Date & Time : 10 May 2025 Saturday 4:13 pm

মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে শিশু বলাৎকারের অভিযোগ

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়া শহরের ঈদগাহ পাড়া (কোর্টপাড়া) এলাকার জামিয়াতুল উলুম মাদ্রাসা নামের একটি কওমী মাদ্রাসার সুপার হাফেজ মাহবুব হাসানের বিরুদ্ধে ওই মাদ্রাসার শিশু ছাত্রকে বলৎকারের অভিযোগে মামলা করেছে শিশুর পরিবার।

ঘটনার পর মাদ্রাসাটিতে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে গেছে শিশু বলাৎকারে জড়িত সন্দেহে এজাহার নামীয় ব্যক্তি হাফেজ মাহবুব হাসান।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ‘গত ২১নভেম্বর রাত সাড়ে ১১টায় ওই মাদ্রাসার আবাসিক ছাত্র শিশুটি(১২) মাদ্রাসার নির্ধারিত আবাসিক কক্ষে তার আরও দুই সহপাঠীসহ গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন চিলো। এসময় এজাহারনামীয় মাদ্রাসা সুপার মাহবুব হাসান চুপিসারে ওই কক্ষে প্রবেশ করে শিশুটির মুখ চেপে ধরে জোর পূর্বক ধ্বস্তাধ্বস্তি করে বলাৎকার করেন। এতে শিশুটি রক্তাক্ত জখমের শিকার হয়। এঘটনার বিষয়ে কোন কিছু বা কারো কাছে কিছু না বলার জন্য হুমকি ভয় ভীতি দেখায়। মাদ্রাসার বড় হুজুরের এই হীন ভয়ভীতির কারনে রক্তাক্ত জখমে অসুস্থ হয়েও শিশুটি কোন চিকিৎসা নিতে পারেনি। আহত শিশুটি যন্ত্রনা সহ্য করতে না পেরে ২৫ নভেম্বর মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে বাড়িতে গিয়ে মায়ের কাছে ঘটনা খুলে বলে। এরপর পরিবার থেকে শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিৎিসকের মাধ্যমে ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা নিশ্চিত হয়েই শিশুটির পিতা বাদি হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইন ২০০০এর ৯(১) ধারায় জোরপূর্বক ধর্ষণ অপরাধে জড়িত অভিযোগ এনে মাদ্রাসা সুপার হাফেজ মাহবুব হাসানের নামোল্লেখসহ কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: তাপস কুমার সত্যতা জানিয়ে বলেন, ‘গত ২৬নভেম্বর কুষ্টিয়া শহরের কোর্টপাড়ার একটি মাদ্রাসার শিশু ছাত্র বলাৎকারের শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলো। শিশুটি পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়া হয়েছে’।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি মোঃ শেহাবুর রহমান জানান, ‘গত ২৬নভেম্বর শহরের কোর্টপাড়াস্থ একটি কওমী মাদ্রাসার শিশু ছাত্রকে বলাৎকার অভিযোগ এনে শিশুটির পিতা মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। আসামি মাহবুব হাসানকে গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যহত আছে। মাহবুব হাসান ওই মাদ্রাসার আরও কয়েকজন শিশুকেও বলাৎকার করেছে বলে শিশুটি আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছে’।

চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুরহুদা থানার কুতুবপুর গ্রামের মোঃ আব্দুল ওয়াহেদ এর পুত্র মাদ্রাসা সুপার হাফেজ মাহবুব হাসান দীর্ঘদিন ধরে কুষ্টিয়ার বিভিন্ন হাফেজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষকতা করেন। কয়েক বছর আগেও ঈদগাহ পাড়ার অপর একটি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ একই অভিযোগে তাকে চাকরিচ্যুত করেছিল স্থানীয়দের অভিযোগ। সম্প্রতি সে নিজেই একটি ঘটনাস্থল এই কওমী মাদ্রাসাটি খুলে সেখানে শিশুদের হেফজ শিক্ষার প্রতিষ্ঠান চালু করেন।