মিরপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা জিন্নাত জাহানের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
আওয়ামী লীগ মতাদর্শী এই কর্মকর্তার দাপটে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এখানে কাজে ত্রুটি থাক বা না থাক প্রতিটি কাজে তাকে আর্থিক সুবিধা দিতে হচ্ছে।
এছাড়া ডিও লেটার আটকে টাকা আদায় নিয়মে পরিণত হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক চালকল মালিক জানান, গত বোরো মৌসুমে চাল সংগ্রহে খাদ্য কর্মকর্তা বড় অঙ্কের আর্থিক সুবিধা নিয়ে বন্ধ চালকল চুক্তিবদ্ধ করেছেন।
এবার নতুন করে ০৭ জানুয়ারী ওএমএস ডিলার নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। কেউ ডিলার নিয়োগ পেতে আবেদনপত্র নিয়ে অফিসে গেলে ভুলভ্রান্তির কথা বলে আর্থিক সুবিধা দাবি করা হচ্ছে। অনুসন্ধান করা হলেই অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাবে। এমনকি খাদ্য কর্মকর্তার মদদে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে কমিশনের ভিত্তিতে একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে এই কারসাজি করে আসছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এছাড়া নিম্নমানের চাল সংগ্রহ, রাতের আঁধারে গুদাম থেকে চিকন চাল বের করে মোটা চাল ঢোকানো ও মিলারদের ক্যাসিংয়ের জন্য চিকন ধান দিয়ে মোটা চাল নেওয়া ইত্যাদি নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে এই খাদ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। মিরপুর উপজেলা সরকারি খাদ্যগুদামে যে চাল মজুত রয়েছে সেই ধানের চাষ উপজেলায় হয় না। তাহলে এসব চাল এলো কোথা থেকে। আবার কৃষকের কাছ থেকে কেনা ধানের চাল গেল কোথায়? মিলারদের ক্যাসিংয়ে দেওয়া সরু ধানের চাল কোথায়? এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে উপজেলাজুড়ে। স্থানীয় সূত্র জানায়, শর্ত পূরণে চুক্তি সম্পাদন করতে সক্ষম হলেও শুধু বিদ্যুৎ বিলের কাগজ ও বৈধ লাইসেন্স দেখিয়ে খাদ্য কর্মকর্তার নেপথ্যে মদদে বন্ধ মিল থেকে সরকারের খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহ করে আসছে একশ্রেণির কথিত মিলার। অথচ সরকারি পরিপত্র অনুযায়ী চাল ক্রয়ের ক্ষেত্রে খাদ্য মন্ত্রণালয় অনুমোদিত চাল সংগ্রহের চুক্তির মডেল অনুসরণ করে চাল সংগ্রহ ও নিয়ন্ত্রণ আদেশ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় অবকাঠামো সম্পন্ন উৎপাদনে নিয়োজিত বৈধ চালকল লাইসেন্সধারী মিলারদের কাছ থেকে চাল ক্রয় করতে হবে। যেসব মিলের বয়লার, চিমনি নেই সেসব মিলের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন করা যাবে না। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মিলারদের আবেদনপত্রসহ চুক্তি সম্পাদনের প্রস্তাব যাচাই-বাচাই শেষে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কাছে প্রেরণ করবেন। যাচাই-বাছাই শেষে সব প্রক্রিয়া সম্পন্নকারী বৈধ চালকল মালিকরা সরকারের খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহ করতে পারবেন।
এ বিষয়ে মিরপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা জিন্নাত জাহান অভিযোগ অস্বীকার করে এ প্রতিনিধিকে বলেন, মাঠপর্যায়ে বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে অনেক সময় অফিসের বাইরে থাকতে হয়। কিন্তু সরেজমিনে দেখা যায় তিনি প্রয় প্রতিদিনই বেলা ১১টায় অফিসে এসে আড়াইটার পরপরই অফিস ত্যাগ করে চলে যান। সেময়ে তাকে কোন মাঠপর্যায়ের কার্যক্রমে পাওয়া যায়নি। চালকলের লাইসেন্স প্রদানে অনিয়মের অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে তিনি বলেন, কিছু চালকলের লাইসেন্স প্রদানে অনিয়ম হওয়ায় তা বাতিল করা হয়েছে। বিগত ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের দোসরদের সাথে তার অতি সখ্যতার কারণ জানতে চাইলে জবাবে তিনি বলেন- কারা বিগত সরকারের দোসর, তিনি তাদের চিনেননা।

Discussion about this post