মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল ॥
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ৬ নং আনাইতারা ইউনিয়নে আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশকারী ছাত্রদলের সাবেক নেতা মীর শরীফ হোসেনকে ইউপি চেয়ারম্যান পদে মনোয়ন দেওয়া ও তার প্রার্থীতা বাতিলের দাবীতে প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে আনাইতারা ইউনিয়নের ফতেপুর ময়নাল হক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এ প্রতিবাদ সমাবেশ হয়। আনাইতারা ইউনিয়নবাসি এ প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে। গত কয়েক দিন ধরে ঐ এলাকায় তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে।
বাবু সুভাষ চন্দ্র বিশাসের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, আনাইতারা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগের মনোয়ন বঞ্চিত ইঞ্চিনিয়ার মো. জাহাঙ্গীর আলম, আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি মো. আজিজুর রহমান স্বপন, ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক, গল্লী জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষক নেতা মো. আমিনুর রহমান প্রমুখ।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তাগন অভিযোগ করেন, ৬ নং আনাইতারা ইউনিয়নে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামীলীগের মনোয়ন বোর্ড ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক ও বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান মো. আজাহাঙ্গীর আলমকে গত ৪ ডিসেম্বর ৬ নং আনাইতারা ইউনিয়নে নৌকার প্রতিক দিয়ে মনোয়ন তালিকা প্রকাশ করেন। দুই দিনের ব্যবধানে একটি চক্র প্রধান মন্ত্রী যাকে মনোয়ন দিয়েছেন অদৃশ্য শক্তির বলে সেই মনোয়নপত্র পরিবর্তন করে ছাত্রদলের সাবেক নেতা ও আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশকারী মীর শরীফ হোসেনকে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী দিয়েছেন। আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশকারী মীর শরীফ হোসেনের নৌকার দলীয় মনোয়ন বাতিল করে প্রধান মন্ত্রীর দেওয়া প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমকে চেয়ারম্যান প্রার্থী বহাল রাখার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
মীর শরীফ হোসেনের নৌকার মনোয়ন বাতিল ও দল থেকে প্রত্যাহার করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলন করার ঘোষনা দেওয়া হয়েছে।
এর আগে আনাইতারা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মো. আব্দুল বাছেদ অভিযোগ করেন, আনাইতারা ইউনিয়ন থেকে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোয়ন চেয়েছিলেন বর্তমান চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মো. এম এ বাছেদ, মো. ইকবাল হোসেন আলী আজম, আজিজুর রহমান, চান ময়না, এম এ লতিফ লেবু ও মীর শরীফ হোসেন। গত ৪ ডিসেম্বর প্রধান মন্ত্রী মনোয়ন বোর্ড আওয়ামীলীগের নৌকার মনোয়ন দেন ইঞ্জিনিয়ার মো. জাহাঙ্গীর আলমকে। চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. জাহাঙ্গীর আলমকে পরিবর্তন করে যাকে ( মীর শরীফ হোসেনকে) নৌকার টিকেট দেওয়া হল তিনি ছাত্রদলের সাবেক নেতা। ১৯৯৮ সালে মির্জাপুর কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্রদল থেকে রেজাউল-জাকির-শরীফ পরিষদের এজিএস পদে মীর শরীফ হোসেন নির্বাচন করেছিলেন। তার বড় ভাই মীর সাজ্জাত হোসেন সাজু এখনও থানা বিএনপির সম্মানিত সদস্য এবং অপর ভাই মীর তারা জাতীয় ছাত্র সমাজ ও জাতীয় পার্টি নেতা। নব্য আওয়ামীলীগে এসে তিনি ও তার পরিবার এলাকায় আওয়ামীলীগের সক্রীয় নেতাকর্মীদের নানা ভাবে অত্যাচার নির্যাতন করছে এই মীর শরীফ হোসনে ও তার পরিবার। আওয়ামীলীগের প্রার্থীকে নৌকার টিকেট বাতিল করে একজন বিতর্কিত ও বিএনপির নেতাকে দল কিভাবে নৌকা দিলো এটা আমাদের বোদগম্য নয়। এলাকবাসি কখনো এটা মেনে নেবে না। তিনি এই প্রার্থী পরিবর্তনের দাবী জানিয়েছেন।
বর্তমান চেয়ারম্যান ও মনোয়ন বঞ্জিত ইঞ্জিনিয়ার মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমি আনাইতারা ইউনিয়ন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং আওয়ামীলীগের সাবেক সাদারন সম্পাদক। গত ৪ ডিসেম্বর মাননীয় প্রধান মন্ত্রী ও মনোয়ন বোর্ড আমাকে নৌকার মনোয়ন দিয়েছেন। একটি চক্র নানা কারসাজির মাধ্যমে আমার নৌকার মনোয়ন বাতিল করে ছাত্রদলের সাবেক নেতাকে কি ভাবে মনোয়ন দিলেন এটা দেখার বিষয়। এলাকায় তার কোন গ্রহন যোগ্যতা এবং কার্যক্রমও নেই। তিনি ছাত্রদল নেতার এই মনোয়ন বাতিলসহ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ব্যবস্থা নেওয়ার মাননীয় প্রধান জননেত্রী শেখ হাসিনা দলের সাধারন সম্পাদক মো. ওবায়দুল কাদেরসহ দ;লের নিতি নির্ধারনীদের নিকট জোর দাবী জানিয়েছেন।
এর আগে নৌকার মনোয়ন প্রাপ্ত মীর শরীফ হোসেন বলেন, আমি পুর্বে ছাত্রদল করেছি। মির্জাপুর সরকারি কলেজ থেকে রেজাউল-জাকির-শরীফ প্যানেল থেকে এজিএস পদে নির্বাচন করেছিলাম। ২০০০ সালের পরে আমি ও আমার পরিবারসহ আওয়ামীলীগে যোগদান করেছি। এখন পর্যন্ত আওয়ামীলীগের হয়ে এলাকায় কাজ করছি। দল আমাকে নৌকার প্রতিক দিয়ে পুনঃরায় মনোয়ন দিয়েছেন।

Print Date & Time : 4 July 2025 Friday 8:03 pm