টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে আজ রবিবার নানা আয়োজনে বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবস পালিত হয়েছে। চাইল্ড হেলথ রিচার্চ ফাউন্ডেশন (সিএইচআরএফ) আজ রবিবার র্যালি, আলোচনা সভাসহ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
সকাল সারে নয়টায় উপজেলা পরিষদ চত্তরের মুক্তির মঞ্চের সামনে প্রধান অতিথি হিসেবে ফিতা কেটে অনুষ্ঠানের উদ্ধোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ হাফিজুর রহমান। সকাল দশটায় কুমুদিনী উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন ভারতেশ্বরী হোমসের অধ্যক্ষ ত্রয়ি বড়ুয়া এবং চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের পরিচালক ও বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ড. সেঁজুতি সাহা। বেলা এগারটায় জামুর্কি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন মির্জাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ ফরিদুল ইসলাম।
ডাঃ এম আর খান শিশু হসপিটাল এন্ড ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড হেলথ এর উদ্বোধন করেন পরিচালক ব্রিগেঃ জেনারেল (অবঃ) ডাঃ আব্দুল্লাহ্-আল-মামুন, কেরানীগঞ্জ উপজেলা হেলথ্ কমপ্লেক্সে কার্যক্রম গুলো উদ্বোধন করেন ঢাকা বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডাঃ মোঃ বেলাল হোসেন এবং বিভাগীয় সিভিল সার্জন আবু হোসাইন মোঃ মুইনুল আহসান।
আজ রবিবার সিএইচআরএফের মির্জাপুর অফিসের কর্মকর্তা মো. শামিম হাসান জানান, পৃথিবী জুড়ে ৫ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যুর সবচেয়ে বড় কারণ নিউমোনিয়া। শ্বাসতন্ত্রে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস অথবা ছত্রাক সংক্রমণের ফলে নিউমোনিয়া হয়। নিউমোনিয়া একটি প্রতিরোধ যোগ্যব্যাধি। বিশ্বে প্রতি ৩৯ সেকেন্ডে ১ জন শিশু নিউমোনিয়াতে মারা যায়। বাংলাদেশেও প্রতি বছর ৫ বছরের কম বয়সী প্রায় ১২ হাজার শিশু নিউমোনিয়ার কারণে মারা যায়। বিগত বছরে, বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের মোট রোগীর ১৭ শতাংশই নিউমোনিয়ার চিকিৎসানিতে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। শুধুমাত্র নিয়ম মেনে শিশুকে টিকা প্রদান, ৬ মাস মাতৃ দুগ্ধ পান করানো, এন্টিবায়োটিকের যৌক্তিক ব্যবহার, নিরাপদ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং নিরাপদ ধোঁয়া মুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করলেই এ মৃত্যু হার অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।
তিনি বলেন, গত ১২ই নভেম্বর ছিল বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবস। নিউমোনিয়া রোগের বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টি করতে প্রতি বছর বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে সারা বিশ্বে দিবসটি পালিত হয়। চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশন (সিএইচআরএফ), শিশু স্বাস্থ্য উন্নয়নে কাজ করে এমন কিছু সংস্থাকে সাথে নিয়ে প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি উদ্যাপন করেছে। এই উপলক্ষে সিএইচআরএফ, দুই দিন ব্যাপী (১৩ এবং ১৪ নভেম্বর) নানা কর্মসূচির মাধ্যমে নিউমোনিয়া রোগ প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে উদ্যোগী হয়। করোনার এই অতিমারীর সময়ে দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্য বিধি মেনে নিউমোনিয়ার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করাই ছিল এবারের লক্ষ্য। চাইল্ড হেলথ্রিসার্চ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত নিউমোনিয়া দিবসের কর্মসূচির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল দেশের পাঁচটি হাসপাতাল। বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট, ডাঃ এম আর খান শিশু হসপিটাল এন্ড ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড হেলথ, কেরানীগঞ্জ উপজেলা হেলথ্ কমপ্লেক্স, কুমুদিনী উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মির্জাপুর উপজেলা হেলথ্কমপ্লেক্স ও মির্জাপুর উপজেলা পরিষদ চত্তরে জনসচেতনেতা মূলক প্রর্দশনী ক্যাম্প স্থাপন করা। উক্ত প্রর্দশনী ক্যাম্পসমূহ থেকে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের মাধ্যমে নিউমোনিয়া রোগ ও এর প্রতিকার সম্পর্কিত বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল নিউমোনিয়া দিবসের লিফলেট বিতরণ, এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারণার মাধ্যমে গণসচেতনতা সৃষ্টি করা।
বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবস উদযাপন কার্যক্রম উদ্বোধন করেন হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ শফি আহমেদ, উপ-পরিচালক ডা প্রবীর কুমার সরকার এবং চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের পরিচালক ও বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ড. সেঁজুতি সাহা। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পিডিয়াট্রিক পালমোনারি ফোরাম এর সভাপতি প্রফেসার আল-আমীন মৃধা, বাংলাদেশ শিশুহাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের রেসিডেন্ট চিকিৎসক সহকারী অধ্যাপক ডাঃ রিজওয়ানুল আহসান, চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সহকারী পরিচালক মাকসুদা ইসলাম, সিনিয়র রিসার্চ ইনভেস্টিগেটর মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম এবং শিশু হাসপাতাল ও চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।
Discussion about this post