মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ১১ নম্বর আজাগানা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল কাদের সিকদারের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্র্নীতির অভিযোগে তাকে অপসারনের দাবীতে বিক্ষুব্দ ভুক্তভোগি এলাকাবাসি মানব বন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশ এবং গোড়াই-সখীপুর রাস্তা অবরারোধ করে। সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ ও স্বাধীনতা বিরোধী কটুক্তি, ভুয়া প্রকল্পে বিপুল টাকা আত্বসাতসহ নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ এবং এক নারী ইউপি সদস্যকে চেয়ারম্যানের ভাতিজা সংঘবদ্ধ ধর্ষনের হুমকির প্রতিবাদে আজ রবিবার (৩০ জুলাই) এ কর্মসুচী পালন করে আজগানা ইউনিয়নবাসি এবং নির্যাতনের শিকার আট ইউপি মেম্বার। এর আগে চেয়ারম্যানকে অপসারনের দাবীতে এই আট মেম্বার জেলা প্রশাসক বরার এর আগে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
আজ রেবিবার (৩০ জুলাই) বেলা এগাটার দিকে ভুক্তভোগি আট মেম্বার এবং আজগানা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের নির্যাতিত ও হয়রানীর শিকার সহস্রাধিক লোকজন চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের সিকদারের অত্যাচার থেকে বাঁচতে তাকে অপসারনের দাবীতে হাটুভাঙ্গা বাজারে ঘন্টা ব্যাপি মানব বন্ধন কর্মসুচী পালন করে। মানব বন্ধন শেষে ভুক্তভোগিরা হাতে হাতে চেয়ারম্যানের বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির ফেস্টুন ও ব্যানার নিয়ে হাটুভাঙ্গা বাজারের বিভিন্ন রাস্তায় বিক্ষোভ করে গোড়াই-সখীপুর রোড অবরোধ করে। এ সময় যাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে প্রখর রোদে যাত্রীরা চরম দুৃর্ভোগে পরেন। বিক্ষুভ মিছিলটি কাঁচা বাজার এসে প্রতিবাদ সমাবেশ করে। ৫ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার নুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে চেয়ারম্যানকে অপসারনের দাবীতে বক্তব্য রাখেন, নারী ইউপি সদস্য লুবনা আক্তার, সাবেক ছাত্রলীগের সভাপতি মাসুদ রানা, এবং ইউপি মেম্বার নুরুল হক প্রমুখ।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তাগন বলেন, চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে নানা অপকর্মে লিপ্ত হন। তার বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলেই তাকে হুমকিসহ মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ভয়ভিতি দেখান। ক্ষমতার দাপটের মাধ্যমে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষনাবেক্ষণ (টি আর), গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা), বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসুচী (এডিপি), এলজিএসপি ও উন্নয়ন সহায়তা তহবিলের নামে ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে পরিষদের সচিবসহ একটি সিন্ডিকেট চক্রের সঙ্গে যোগসাজস করে বিপুল অর্থ আত্বসাত করেছেন। জন্ম নিবন্ধন, মাতৃত্বকালিন ভাতা, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধি ভাতা, জমি দখল করে দেওয়া, প্রহসন মুলক বিচারের নামে বিপুল অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়া, ট্রেড লাইসেন্সসহ বিভিন্ন কাজের জন্য আসা অসহায় লোকজনকে জিম্মি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন এই চেয়ারম্যান। সম্প্রতি তিনি ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে ১৬ লাখ টাকা আত্নসাত করেছেন। গত ১৭ জুলাই আটজন মেম্বার টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তাকে অপসারনের দাবীতে। একই অভিযোগ স্থানীয় সাংসদ খান আহমেদ শুভ এমপি, দুর্নীতি দমন কমিশন এবং মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাকিলা বিনতে মতিনের নিকট দিয়েছেন। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি হলেও এখন পর্যন্ত দুর্নীতিবাজ চেয়ারম্যান আব্দুল কাদেরকে অপসারন করা হয়নি।
এ ব্যাপারে ১১ নং আজগানা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কাদের সিকদার বিভিন্ন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি এই অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নই। যারা অভিযোগ দিয়েছেন সেই মেম্বারগন বিভিন্ন প্রকল্পের নামে আমার কাছে চাঁদা দাবী করেন। এছাড়া এলাকায় বিচার শালিসসহ বিভিন্ন দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। আমার কাছে কোন সুবিধা না পেয়ে তারা আমার নামে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাদরে সিকদার বিভিন্ন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আটজন মেম্বার এবং এলাকার কিছু লোকজন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন। আমি কখনো এই এই অনিয়মের সঙ্গে জড়িত নই।
মির্জাপুর থানার সেকেন্ড অফিসার মো. শাজাহান মিয়া বরেন, শান্তিপুর্ন ভাবে তমানব বন্ধন ও প্রতিবাদ সামবেশ হয়েছে। কোন অপৃতিকর ঘটনা ঘটেনি।
![প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন](http://dailydeshtottoh.com/wp-content/plugins/wp-print/images/printer_famfamfam.gif)
Discussion about this post