নিজস্ব প্রতিবেদক
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা জিহক খান রুদ্র ও তার বাহিনীর অত্যাচার নির্যাতন থেকে বাঁচতে এলাকাবাসি মানবন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে।
জিহক খান রুদ্র ও তার বাহিনী সরকারী খাস রেকর্ডভুক্ত জমি অবৈধ ভাবে দখল করে রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ার অবরুদ্ধ এলাকাবাসি এই মানববন্ধনসহ প্রতিবাদ সমাবেশ এবং তাদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে।
আজ রবিবার (২২ ডিসেম্বর) টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ১০ নং গোড়াই ইউনিয়নের গোড়াই-সখীপুর রোড সংলগ্ন সৈয়দপুর এলাকায় এ মানবন্ধনসহ প্রতিবাদ সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়।
সৈয়দপুরসহ আশপাশের এলাকাবাসি এ মানবন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে।
ঘন্টা ব্যাপি মানবন্ধন শেষে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা জিহক খান রুদ্র ও তার বাহিনীর অত্যাচার নির্যাতনের শিকার আবুল কাশেম, আরিফ হোসেন, নুর মোহাম্মদ, আব্বাছ মিয়া, শাজাহান মিয়া, নজরুল ইসলাম, আব্দুল আলীম, সুফিয়া বেগম ও আনোয়ারা বেগম প্রমুখ।
প্রশাসন থেকে তাদের অবিলম্বে গ্রেফতার করা না হলে কঠোর কর্মসুচীর ঘোষনা দিয়েছে মানববন্ধনে আসা ভুক্তভোগি ও নির্যাতনের শিকার এলাকাবাসি।
প্রতিবাদ সমাবেশে ভুক্তভোগিরা অভিযোগ করেন, গোড়াই-সখীপুর –ঢাকা রোড সংলগ্ন ৭০ শতাংশ জমি বিদ্যালয় ও সরকারি খাস খতিয়ান ভুক্ত। সৈয়দপুর এলাকার মৃত আব্দুল মজিদ খানের ছেলে মৃত মো. আজম খান (৫৫), আজম খানের ছেলে আজগানা ইউনিয়নের ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি ও আহবায়ক কমিটির যুগ্ম আহবায়ক ছাত্রলীগ নেতা জিহক খান রুদ্র, আওয়ামীলীগ নেতা আনোয়ার মাস্টারসহ কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি বিদ্যালয় ও সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত ২৪ শতাংশ জমি দীর্ঘ দিন ধরে দখল করে পাকা ভবন নির্মান ও রাস্তা বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দেয়। রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চলাচল করতে না পেরে চরম বিপাকে পরে এলাকাবাসি।
সরকারি জমি রক্ষা ও রাস্তা উদ্ধারের জন্য এলাকাবাসি সহকারি কমিশনার ভুমি অফিস, সেনাবাহিনীর কমান্ডার, ইউএনও অফিস এবং মির্জাপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
এ নিয়ে স্থানীয় শিক্ষানুরাগী নুর মোহাম্মদ ও স্থানীয় গনমাধ্যমকর্মী মোশারফ হোসেন প্রতিবাদ জানালে ভুমিদস্যু চক্রটি তাদের নামে মিথ্যা বানোয়াট কয়েকটি অভিযোগ দিয়ে হয়রানী করছেন। উপজেলা প্রশাসন থেকে সহকারী কমিশনার মাসুদর রহমান, সার্ভেয়ার ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সরকারি জমি উদ্ধারসহ অবৈধ স্থাপনা বেঙ্গে ফেলার দুই দিন সময় দেন। তারপরও প্রভাবশালী মহল স্থাপনা ভেঙ্গে ফেলেনি। ফলে যাতায়াত করতে না পেরে চরম বিপাকে পরেছে এলাকাবাসি।
এ ব্যাপারে অভিযোক্ত ছাত্রলীগ নেতা জিহক খান রুদ্র বলেন, বিদ্যালয়ের পাশে তাদের জমি রয়েছে। তার দাবি আমরা বিদ্যালয় বা সরকারি খান খতিয়ানভুক্ত কোন জমি দখল ও রাস্তা বন্ধ করিনি। আমাদের জমি ভুলক্রমে সরকারের নামে রেকর্ডভুক্ত হয়েছে। আমরা আদালতে রেকর্ড সংসোধনের জন্য আবেদন করেছি। তিনি কোন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত নন বলে দাবি করেন।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষ ঝর্না বেগম বলেন, এলাকার একটি প্রভাবশালী মহল বিদ্যালয়ের জমি ও রাস্তা দখল করে রেখেছে। বিদ্যালয়ের জমি উদ্ধার ও রাস্তা দখল মুক্ত করার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা চেয়েছেন
এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মাসুদুর রহমান বলেন, সৈয়দপুর মৌজায় বিদ্যালয় ও সরকারি ২৪ শতাংশ খাস খতিয়ানভুক্ত সরকারি জমি একটি প্রভাবশালী মহল দীর্ঘ দিন জবর দখল করে লোকজনের যাতায়াতের রাস্তাও বন্ধ রেখেছে। ভুমি অফিস থেকে জমি পরিমাপ করে সাইন বোর্ড নির্মান ও অবৈধ দখলদারদের স্থাপনা ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদি স্থাপনা না ভেঙ্গে থাকে তাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।