স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডির) অধিনে প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয়ে পাহাড়পুর-ভাওড়া-কামারপাড়া ভাঙ্গা রাস্তায় তিন উপজেলাসহ আশপাশের অন্তত ৬০ গ্রামের মানুষের জন দুর্ভোগ দিন দিন চরম আকার ধারন করছে। সাবেক এমপির সহায়তায় রাস্তার উন্নয়নের জন্য প্রায় চার কোটি টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হলেও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে কাজ বন্ধ রেখেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে যোগাযোগের ক্ষেত্রে এলাকাবাসির চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। যুগ যুগ ধরে চলছে এরাকাবাসির দুর্ভোগ।
আজ সোমবার (৩ অক্টোবর) টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার পাহাড়পুর-ভাওড়া-কামারপাড়া রাস্তায় গিয়ে দেখা গেছে, রাস্তার কাজ বন্ধ থাকায় চলাচলের ক্ষেত্রে জনসাধারনের দুর্ভোগের চিত্র। ভাওড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. আমজাদ হোসেন জানান, মির্জাপুর উপজেলার দক্ষিনাঞ্চলের পাহাড়পুর-ভাওড়া-কামারপাড়া ৮ মি. মি. রাস্তা অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন। এই রাস্তা দিয়ে মির্জাপুর, সাটুরিয়া ও ধামরাই এই তিন উপজেলাসহ আশপাশের ৫০-৬০ গ্রামের হাজার হাজার মানুষ যাতাযাত করে আসছে। রাস্তাটির দুই পাশে ও উপরে মাটি ফেলা ও প্রশস্তসহ পাকা করনের জন্য এলাকাবাসির দীর্ঘ দিনের দাবী ছিল। এলাকাবাসির দাবীর প্রেক্ষিতে স্বাধীনতার ৫০ বছর পর সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. একাব্বর হোসেনের উদ্যোগে রাস্তাটি উন্নয়নের জন্য প্রায় চার কোটি টাকা বরাদ্ধ দেন।
এদিকে মির্জাপুর উপজেলা এলজিইডি অফিসের উদ্যোগে পাহাড়পুর-ভাওড়া-কামারপাড়া রাস্তার প্রায় চার কোটি টাকার কাজ পান কাজ পান অবনী এন্টার প্রাইজের ঠিকাদার হিকমত উল্লাহ। ভুক্তভোগিদের মধ্যে আওয়ামীলীগ নেতা রাকিবুল হাসান রিপন ও শিক্ষক ফরহাদ হোসেনসহ একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, কাজ পাওয়ার পর কিছু কাজ করলেও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার হিকমত উল্লাহ নানা অযুহাতে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে কাজ বন্ধ রেখেছে। দীর্ঘ দিন ধরে কাজ বন্ধ থাকায় প্রায় ৮ কি. মি. রাস্তায় ধুলাবালি ও কাঁদায় একাকার হয়ে চলাচলের ক্ষেত্রে তিন উপজেলাসহ আশপাশের ৬০ গ্রামের মানুষকে চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। রাস্তাটির দ্রুত উন্নয়নের জন্য এবং সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জোরদাবী এলাকাবাসির।
এ ব্যাপারে অবনী এন্টার প্রাইজের ঠিকাদার মো. হিকমত উল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ফান্ড না থাকায় কাজ বন্ধ রয়েছে। ফান্ড পাওয়া সাপেক্ষে রাস্তার কাজ করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। রাস্তার তদারকির কাজে নিয়োজিত মির্জাপুর উপজেলা এলজিইডি অফিসের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. শামসুদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ঠিকাদাকার নানা অযুহাত দেখিয়ে রাস্তার কাজ বন্ধ রেখেছেন। রাস্তার কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য ঠিকাদারকে চাপ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভাওড়া ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মো. মাসুদুর রহমান মাসুদ রানা বলেন, রাস্তাটি উন্নয়নের জন্য উপজেলা পরিষদের আইন-শৃঙ্খলা কমিটি এবং মাসিক সমন্ময় কমিটির সভায় একাধিকবার অনুরোধ করা হয়েছে। তারপরও ঠিকাদারের গাফিলতির কারনে গুরুত্বপুর্ন রাস্তাটির কাজ হচ্ছে না। বিষয়টির দিকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এমপিসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবী জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মো. আরিফুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মির্জাপুর উপজেলার পাহাড়পুর-ভাওড়া-কামারপাড়া রাস্তার কাজ যাতে দ্রুত সময়ে শেষ হয় এ বিষয়েও ঠিকাদারকে চাপ দেওয়া হয়েছে। কাজ শুরু না করলে তার ওয়ার্ক অর্ডার বাতিলসহ তার বিরুদ্ধে প্রযোহজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//অক্টোবর ০৪,২০২২//
![প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন](http://dailydeshtottoh.com/wp-content/plugins/wp-print/images/printer_famfamfam.gif)
Discussion about this post