মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল, মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) সংবাদাদতা: টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে নদী ভাঙ্গনে বিলিন হচ্ছে শাল-গজারির বন। নদী ভাঙ্গন প্রতিরোদের জন্য ব্যবস্থা গ্রহন না করায় দিন দিন ভাঙ্গনের মাত্রা
বেড়েই যাচ্ছে। ফলে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশংকা করেছে এলাকাবাসি। মির্জাপুর উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চল আজগানা, লতিফপুর এবং তরফপুর ইউনিয়নের বংশাই নদীর তীবর্তী এলাকায় বনাঞ্চলের শাল-গজারি বন এ
ভাঙ্গনের কবলে পরেছে। শুক্রবার (৮ এপ্রিল) আজগানা ইউনিয়নের হাটুভাঙ্গা ও পলাশতরী গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে নদী গর্ভে বিলিন হচ্ছে সরকারী বনাঞ্চল। উপজেলা বনবিভাগ সুত্র জানায়, মির্জাপুর উপজেলায় প্রায় ১৫ হাজার ৮০০শ হেক্টর সরকারী বন ভুমি রয়েছে। বিশাল এই বন ভুমিতে গজারি, গর্জন, সেগুন, আকাশমনি, পিকরাশিসহ বিভিন্ন প্রজাতির মুল্যবান গাছ রয়েছে। এছাড়া সমাজিক বনায়ন কর্মসুচীর আওতায় বনাঞ্চল ও এর আশাপাশে প্রচুর বৃক্ষ রোপন করা হয়েছে। সরকারী বনাঞ্চলের পাশাপাশি সামাজিক বনায়ন করে এর সুফল পাচ্ছেন এলাকার কয়েক হাজার নারী পুরুষ। মির্জাপুর উপজেলার গায়রাবেতিল, নয়াপাড়া, পেকুয়া, মুচিরচালা,
বাঁশতৈল, আজগানা, কুড়িপাড়া, বংশীনগর, কাইতলা, তালতলা, পাথরঘাটা, খলিয়াজানি, বালিয়াজান, আজগানা, কুড়িপাড়া, লতিফপুর, বান্দাচালা,
তরফপুর, খুইদারচালা, ঘাগড়াই, কুড়াতলী ও খাটিয়ারহাটসহ বিভিন্ন বিশাল এলাকায় শাল-গজারির বন রয়েছে। গত কয়েক বছরের ব্যবধানে বংশাই
নদীর ভাঙ্গনে আজগানা ইউনিয়নের পলাশতলী, হাটুভাঙ্গা, সৈয়দপুর এবং লতিফপুর ও তরফপুর ইউনিয়নের শাল-গজারির বন বিলিন হচ্ছে। শাল-গজারির বন নদী ভাঙ্গনে বিলিন হওয়ায় এলাকার পরিবেশ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। বনাঞ্চল রক্ষার জন্য বন বিভাগ এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ প্রশাসন আজ
পর্যন্ত নদী শাসনের জন্য কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তর টাঙ্গাইলের অফিসসুত্র জানিয়েছেন, সুস্থ্য ভাবে বেঁচে থাকতে হলে বনাঞ্চলের ভুমিকা অপরিসীম। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও নদী ভাঙ্গন থেকে সরকারী বনাঞ্চল রক্ষার জন্য উর্ধ্বতন
কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবেন পানি উন্নয়ন বোর্ড ও প্রশাসন।
এ ব্যাপারে বন বিভাগ মির্জাপুর রেঞ্জ অফিসের অধিনে হাটুভাঙ্গা বিট অফিসের বিট কর্মকর্তা মি. রতন রকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুম শুরু হলে বংশাই নদীর ভাঙ্গনে শাল-গজারি বনের ক্ষতি হচ্ছে। নদী ভাঙ্গন থেকে বনাঞ্চল রক্ষার জন্য বিষয়টি বনবিভাগের পক্ষ থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত ভাঙ্গন প্রতিরোধ বা গাইড বাঁধ নির্মানের কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বনাঞ্চল রক্ষার জন্য বিষয়টির দিকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি জোর দাবী জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড টাঙ্গাইলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.
সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মির্জাপুর উপজেলার বংশাই নদীর আশপাশ ভাঙ্গন প্রতিরোধের জন্য বেশ কয়েকটি প্রকল্প তৈরী করে অর্থ বরাদ্ধ চেয়ে মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্ধ পেলে স্থানীয় এমপি, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্ময় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//০৮ এপ্রিল,২০২২//
![প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন](http://dailydeshtottoh.com/wp-content/plugins/wp-print/images/printer_famfamfam.gif)
Discussion about this post