কূটনৈতিক প্রতিবেদক:
ফিলিস্তিনিদের ওপর গাজায় ইসরাইলি বর্বরতার অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়ে ২০২৪ সালের নির্বাচনে কাল হয়ে উঠতে পারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জন্য।
ইসরায়েল ইস্যুতে মুসলিম আমেরিকানদের সমর্থন হারাতে পারেন এ ডেমোক্র্যাট নেতা গাজায় ইসরায়েলি বোমাবর্ষণে বত্রিশ হাজার ফিলিস্তিনিদের প্রাণহানি ও সযুদ্ধবিরতির জন্য চাপ দিতে ব্যর্থ হচ্ছেন বাইডেন।
এতে চরম ক্ষুব্ধ আরব-আমেরিকান নাগরিকরা। তাদের ক্রমবর্ধমান হতাশাই বাইডেনের পুনর্নির্বাচনে বাধা হয়ে দাঁড়াবে। খবর: আল জাজিরা, রয়টার্স, সিএনএন,এপি।
আরব আমেরিকান ইনস্টিটিউটের সভাপতি জিম জোগবি জানান, তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ মিশিগান অঙ্গরাজ্যে আরব-আমেরিকান ভোটারের সংখ্যা পাঁচ শতাংশ। পেনসিলভানিয়া এবং ওহিওর মতো রাজ্যগুলোতে এর হার ১ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে দুই শতাংশের মধ্যে।২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মিশিগানে ৫০ দশমিক ৬ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছিলেন বাইডেন। প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্প পেয়েছিলেন ৪৭ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট। পেনসিলভানিয়ায় বাইডেন ৫০ দশমিক ০১ শতাংশ ও ট্রাম্প ৪৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ পান। রাজ্যটিতে ৮১ হাজারেরও কম ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী বাইডেন। আরব এবং মুসলিম আমেরিকানরা ট্রাম্পকে সমর্থন করার সম্ভাবনা কম। তবে তারা বাইডেনকে ভোট দেওয়ার চেয়ে ভোটদানে বিরত থাকাকেই বেছে নিবেন।
গাজায় চলমান সর্বাত্মক যুদ্ধ এবং ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় ফিলিস্তিনির মৃত্যু যুক্তরাষ্ট্রের আরব ও মুসলিম ভোটারদের তীব্র বেদনা ও ক্রোধের কারণ হয়ে উঠেছে। এই যুদ্ধে বাইডেন প্রশাসন ইসরায়েলকে কার্যত নিঃশর্ত সমর্থন দিচ্ছে। তারা ইসরায়েলি হামলাকে ন্যায়সংগত আত্মরক্ষা বলেই ক্ষান্ত হয়নি, সে কাজে অর্থ, সৈন্য ও অস্ত্র-বারুদ দিয়েও সমর্থন জোগাচ্ছে।
যে সাতটি দোদুল্যমান রাজ্যের মধ্যে অন্তত পাঁচটিতে উল্লেখযোগ্য আরব ও মুসলিম ভোটার রয়েছেন। এঁদের ৭০ শতাংশ বা তার চেয়ে বেশি ডেমোক্র্যাটদের ভোট দিয়ে থাকেন। এবারে সে অবস্থার পরিবর্তন হতে পারে।মিশিগানের কথা ধরা যাক। ২০২০ সালে বাইডেন এই রাজ্যে ১ লাখ ৫৪ হাজার ভোটে জিতেছিলেন। এখনে মুসলিম ও আরব ভোট দুই লাখের বেশি। এঁরা জোট বেঁধে ট্রাম্পকে ভোট দিলে বা ভোটদানে বিরত থাকলে রাজ্যের ১৬টি ইলেকটোরাল ভোট ট্রাম্পের বাক্সে যাবে।
জর্জিয়ার অবস্থা আরও জটিল। ২০২০ সালে সেখানে বাইডেন মাত্র ১২ হাজার ভোটে জিতেছিলেন। এই রাজ্যে আরব বা মুসলিম ভোটারের সংখ্যা অন্তত সোয়া লাখ। অথবা অ্যারিজোনার কথা ধরুন। এখানে আরব বা মুসলিম ভোটারের সংখ্যা এক লাখের বেশি।
আরব ও মুসলিম আমেরিকানদের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট, তাঁরা বাইডেনের ইসরায়েল-তোষণ নীতিতে চরম ক্ষুদ্ধ। চলতি কংগ্রেসের একমাত্র ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত মার্কিন কংগ্রেস সদস্য মিশিগানের রশিদা তালিব। তিনি খোলামেলাভাবেই বাইডেনকে ফিলিস্তিন জাতিকে হত্যায় ইসরায়েলকে মদদ দেওয়ার অভিযোগ করেছেন। এক বার্তায় তিনি বলেছেন, অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি সমর্থন করুন, অন্যথায় ২০২৪ সালে আমাদের ভোট আপনি পাবেন না।আরব ও মুসলিম ভোটাররা কি আগামী নভেম্বরে গাজার নিহত শিশুদের কথা মনে করে বাইডেনের বিপক্ষে ভোট দেবেন?
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//