রোমান আহমেদ, জামালপুর প্রতিনিধি :
সৌদি আরব সরকারের দেয়া দুম্বার মাংস বিতরণ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলায়।সৌদি থেকে দুস্থদের জন্য পাঠানো দুম্মার মাংস জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভাগাভাগি করে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা যায়, দুস্থদের মধ্যে বিতরণ না করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ১১টি ইউনিয়ন পরিষদ, ২ টি পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে উপজেলা জুড়ে জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
গত মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) ওই মাংস রাতের আধারেই বিতরণ করা হয়েছে বলে জানা যায়।
দুম্বার মাংস বিতরণের তালিকা অনুযায়ী, উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে কর্মকর্তা কর্মচারী মাঝে ২ কার্টুন, জামিয়া হুসাইনিয়া আরবিয়া পুরুষ ও মহিলা মাদরাসায় ২ কার্টুন, ১১ টি ইউনিয়নে ১১ কার্টুন, মেলান্দহ পৌরসভা ও হাজরাবাড়ী পৌরসভায় ২ কার্টুন করে বিতরণ করা হয়। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ি ১৭ কার্টুন বিতরণের তথ্য দিলেও বাদবাকি ১৩ কার্টুন কোথায় বিতরণ করা হয়েছে এর কোন তথ্য মেলেনি।
উপজেলা পরিষদের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, অসহায় ও দুস্থদের মধ্যে বিতরণের জন্য প্রতি বছর বাংলাদেশে কোরবানির দুম্বার মাংস পাঠায় সৌদি সরকার। মেলান্দহ উপজেলায় ৩০ কার্টুন মাংস আসে রাতে। সেই রাতেই দুম্বার মাংসের কার্টুনগুলোর বিতরণ করা হয়েছে। প্রত্যেকটি কার্টুনে ১০টি প্যাকেটে প্রায় ৩০ কেজি করে মাংস ছিল। সে হিসাবে ৩০ কার্টনে ৯০০ কেজি মাংস ছিল।
উপজেলা পরিষদের কয়েকজন কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা মিথ্যা বলবো না।আমাদের কেউ এক প্যাকেট, কেউ অর্ধেক প্যাকেট করে পেয়েছি।
চরবানিপাকুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেন ভুট্টো বলেন, ’এক কার্টুন পেয়েছিলাম মেম্বারদের দিয়ে দিয়েছি। আমি এর আশে পাশেই যায়না। মেম্বারই ১২ জন গ্রাম পুলিশ ১০টা এখানে সাধারণ মানুষরে কেমনে দিবে। মেম্বারদের বলেছি যেমনে ভালো হয় দিয়ে দেও।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাকের সাথে যোগাযোগ করার জন্য মুঠোফোনে ফোন দেওয়া হলে একবার কল হওয়ার পর ফোন বন্ধ করে রাখেন তিনি।
এবিষয়ে মেলান্দহ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) একেএম লুৎফর রহমান বলেন, এটাতো উপজেলা চেয়ারম্যান করেছে। পিআইও অফিসে আসছে, উপজেলা চেয়ারম্যান ওনি নির্দেশনা দিয়েছেন যেভাবে সেভাবে এটি করা হয়েছে। এতিমখানা, পৌরসভা এগুলোতে জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে ভাগ করে দেয়া হয়েছে। জনপ্রতিনিধি যাদেরকে দিয়েছি তারা কিভাবে বিতরণ করেছে এটা আমার জানা নাই। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে তা খতিয়ে দেখতে হবে।
এবিষয়ে মেলান্দহ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, ’খুব সম্ভবত ২৪ কার্টুন বরাদ্দ ছিলো হয়তো। ঐটা বন্ধের দিনে আসছে তবে যতটুকু জানি ১১টি ইউনিয়ন ১১টি ও দুইটি পৌরসভায় ২ কার্টুন মেলান্দহ বড় মাদ্রাসায় ১ কার্টুন, গুচ্ছগ্রামে ১ কার্টুন, এছাড়া উপজেলা অফিসের কর্মচারীরা ১টি কার্টুন ভাগাভাগি করে নিয়েছে। চেয়ারম্যানদের দিয়ে দেওয়া হয়েছে এখন তারা কি করবে সেটা তাদের ব্যাপার। ’
জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা মোঃ আলমগীর হোসেন বলেন, চিঠিতে যেকয়টি কার্টুন বরাদ্দ ছিল সে কয় কার্টুন দেওয়া হয়েছে। কম দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//জানুয়ারী১৮,২০২৪//