মেহেরপুর প্রতিনিধি: মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার হিন্দা, পিরতলা ও কসবা গ্রামে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
২০২০ সালে এই তিনটি পুলিশ ক্যাম্প বন্ধ হওয়ার পর থেকে চোরাচালান, মাদক ব্যবসা, ডাকাতি ও ছিনতাইসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বেড়ে গেছে। এতে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন প্রায় ৪০টি গ্রামের এক লক্ষাধিক মানুষ।
একসময় চরমপন্থীদের দৌরাত্ম্যে আতঙ্কে ছিল এ অঞ্চলের মানুষ। ১৯৯০-এর দশকে চরমপন্থীদের দমন করতে মেহেরপুরের বিভিন্ন স্থানে ১৭টি পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। তবে ২০২০ সালের ২০ জুলাই হঠাৎ করেই হিন্দা, পিরতলা ও কসবা পুলিশ ক্যাম্প বন্ধ করে দেওয়া হয়, যার পর থেকে অপরাধের মাত্রা বাড়তে থাকে।
পীরতলা গ্রামের বাসিন্দা মারুক সিদ্দিক বলেন, এলাকাটি সীমান্তবর্তী হওয়ায় মাদক সহজলভ্য হয়ে গেছে। কিছুদিন আগেই অতিরিক্ত মাদক সেবনে পিরতলা গ্রামে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। ক্যাম্প বন্ধ হওয়ার পর মাদকের বিস্তার ব্যাপকভাবে বেড়েছে।
কসবা গ্রামের আকাশ বলেন, একসময় চরমপন্থীদের আনাগোনা ছিল। ক্যাম্প স্থাপনের পর তারা এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়। কিন্তু ক্যাম্প উঠে যাওয়ার পর এখন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি।
হিন্দা গ্রামের রবিউল ইসলাম বলেন, ক্যাম্প থাকাকালীন শান্তি বজায় ছিল। এখন মাঝেমধ্যেই ডাকাত দল বোমা ফাটিয়ে মূল্যবান সামগ্রী লুট করছে।
কাজিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আলম হুসাইন জানান, পুলিশ ক্যাম্প থাকাকালীন সীমান্ত এলাকায় অপরাধ নিয়ন্ত্রণে ছিল। এখন আবার চোরাকারবারিরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
মেহেরপুর জেলা পুলিশ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মাকসুদা আখতার খানম, পিপিএম। তিনি বলেন, জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ক্যাম্প পুনরায় চালুর সুপারিশ করেছি। আশা করছি, দ্রুত সিদ্ধান্ত আসবে।
এলাকাবাসীর দাবি, চরমপন্থীদের পুনরায় সক্রিয় হওয়া এবং মাদক ব্যবসার বিস্তার রোধ করতে দ্রুত পুলিশ ক্যাম্পগুলো পুনরায় চালু করা হোক, যাতে এলাকা ফিরে পায় শান্তি ও নিরাপত্তা।

Discussion about this post