মেহেরপুরের বিভিন্ন হাট-বাজারগুলোতে তাপপ্রবাহ বৃদ্ধির সাথে সাথে বৃদ্ধি পেয়েছে তরমুজ ও সবজির দাম। পবিত্র রমজানেও চওড়া দামে বিক্রি হচ্ছে তরমুজ, বেগুন, পটল, ঝিংগা, লেবু, শসাসহ সকল ধরনের সবজি।
মেহেরপুরের বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা বলছেন, নিজ এলাকায় উৎপাদিত সবজি চাহিদার তুলনায় সরবরাহ ওই অর্থে খুব বেশি বাড়েনি। ব্যবসায়ীদের দাবী নাকচ করে ভোক্তারা বলছেন, শহরের সাথে পাল্লা দিয়ে রমজান ও ঈদকে সামনে রেখে প্রায় সকল ধরনের সবজির কেজি ৬০ টাকার ওপরে।
জানা যায়, মেহেরপুরে এবার সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে। যা মেহেরপুরের বিভিন্ন বাজারের চাহিদা মিটিয়েও ঢাকা, রাজবাড়ী, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হচ্ছে। তারপরেও দাম কমেনি সবজির।
সরেজমিনে জেলার কাজীপুর, বামুন্দী, সাহারবাটী, ভাটপাড়া, নওদাপাড়া, হিন্দা, মাইলমারী, সোনাপুর, আমঝুপিসহ বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৫০/৬০ টাকায়। কোথাও কোথাও ১/২ কেজি ওজনের তরমুজ বিক্রি করতে দেখা গেছে ১২০ টাকায়। যদিও কেজি দরে বিক্রি না করার আহ্বান জানানো হয়েছে। বেগুন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০/৭০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৩০/৩৫ টাকা, শসা ৭০, চিচিঙ্গা ৬০/৭০, পটল ৬০, ঢেঁড়স ৬০ টাকায় এবং প্রতি ৪ পিস লেবু বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়।
এছাড়া মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, লালশাক প্রতি ছোট আটি ১০/১৫ টাকা, নাজনে ডাটা ৭০/৮০ টাকা এবং প্রতি গ্লাস আখের রস বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়, যা রমজানের পূর্বে বিক্রি হয়েছে ১০ টাকায়।
জেলার শহর থেকে গ্রাম পর্যায়ের হাটবাজারগুলোতে সকল ধরনের সবজির মূল্য বৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছে সাধারণ ক্রেতারা।
কাজীপুরের জনৈক তরমুজ বিক্রেতা বলেন, বাজারে যেসব তরমুজ আসছে, আড়ত থেকে আমাদেরকে ৪২ টাকা কেজি দরে কিনতে হচ্ছে। যার ফলে খুচরায়ও দাম বেশি। যদিও এসব তরমুজের অধিকাংশই পচা ও স্পট পড়া।
এদিকে সবজি ছাড়াও মুরগির দাম কিছুটা কম হলেও ডিমের দাম চাঙা। খুচরা পর্যায়ে প্রতি পিস ডিম বিক্রি হচ্ছে ১১ টাকায়। এক প্রকার বলতে গেলে তরমুজ, সবজি ও ডিম এবং সকল ধরনের মাছের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। গত কয়েকদিনের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগি দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া দেশি মুরগি ও হাঁসের দামও বেড়েছে।
ক্রেতারা জানান, বাজারে এমন কোনো পণ্য নেই যে, দাম বাড়েনি। এতে আমাদের মতো গরীব ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ক্রেতাদের রীতিমতো নাভিশ্বাস উঠেছে।
এদিকে পবিত্র মাহে রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে শনিবার গাংনী বাজার মনিটরিং করা হয়েছে। গাংনী উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাজার মনিটরিং করা হয়। এতে নেতৃত্ব প্রদান করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাদির হোসেন শামীম। এসময় বিভিন্ন পণ্যের ক্রয়মূল্যের রশীদ সংরক্ষণ ও প্রদর্শন করতে না পারায় এবং ধার্যকৃত মূল্যের অধিক মূল্যে পণ্য বিক্রি করায় কয়েকজনকে অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়। একই সাথে ক্রয়মূল্য ও বিক্রয় মূল্যের মধ্যে সামঞ্জস্য বজায় রাখার জন্যে ব্যবসায়ীদের নির্দেশনা দেওয়া হলেও গ্রামের হাটবাজারগুলো মনিটরিং করা হচ্ছেনা। একারণেই ব্যবসায়ীরা তাদের ইচ্ছে মতো সকল ধরনের সবজি বেশি মূল্যে বিক্রি করে মানুষের সাথে এক প্রকার প্রতারণা করে যাচ্ছে। সাধারন ক্রেতাদের দাবী নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখতে গ্রামাঞ্চলের হাট-বাজারও মনিটরিং করা হোক।
খালিদ সাইফুল, দৈনিক দেশতথ্য, ১৭ এপ্রিল ২০২৩
প্রিন্ট করুন
Discussion about this post