মেহেরপুরে গম চাষে বাম্পার ফলন ও ন্যায্য মূল্যের আশা করলেও জুই-২ এর প্রভাবে গত কয়েক দিনের ভারী বর্ষণে তা থেকে বঞ্চিত হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে মেহেরপুর জেলায় প্রায় ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা থেকে প্রায় ৫০ হাজার মেট্রিকটন গম উৎপাদন হতে পারে বলে আশা করছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, মেহেরপুর।
কৃষি বিভাগ জানায়, গম উৎপাদনে কৃষি প্রণোদনা সহায়তা হিসেবে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ বিতরণসহ সকল ধরনের পরামর্শ দিতে মাঠ পর্যায়ে কাজ করেছেন কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তারা।
কিন্তু গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে থেমে থেমে ভারী বর্ষণ শুরু হওয়ার কারণে গম ফসলে ফলন ও মূল্যে চরম ক্ষতির আশংকায় কৃষকরা।
কৃষকরা জানান, চারিদিকে ইতিমধ্যেই গম কাটা মাড়াইয়ের কাজ শুরু হয়ে গেছে। ঠিক এমন মূহুর্তে হঠাৎ ভারী বর্ষণ ও দমকা বাতাসে অনেক ক্ষেতের গমের গাছ ভেঙে নুইয়ে পড়েছে। ভারী বর্ষণের কারণে গমের দানা চিপসে যেতে পারে। তাছাড়া গমের রং ফ্যাকাসে হয়ে যেতে পারে। এতে করে গম বিক্রিতে ব্যবসায়ীরা হয়তো বা ন্যায্য মূল্যে তাদের গম ক্রয় করবেনা।
গম আবাদের শুরু থেকেই ঝড় বৃষ্টি না হওয়ায় আবহাওয়া সহায়ক হওয়ায় গম চাষে কোন সমস্যা হয়নি। ফলে কৃষকরা গম চাষে সাফল্য আশা করেছিলেন। সে ব্যাপারে দ্বিমতও ছিলনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের। কৃষক নিজেও গম চাষ করে যে লাভের মুখ দেখবেন, সে বিষয়েও তারা যথেষ্ট আশাবাদী ছিলেন।
কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাদের যাবতীয় পরামর্শ স্বাভাবিক ভাবেই কৃষকদের গম চাষে অনেকটাই লাভবান করে তুলবেন বলে কৃষকরা মনে করেছিলেন। আগাম আবাদকৃত অনেকেই গম কেটে ইতিমধ্যেই ঘরে তুলে লাভের মুখও দেখেছেন কিন্তু বিপাকে পড়েছেন পিছিয়ে পড়া গম চাষীরা।
যার কারণে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত গমের ন্যায্য মূল্য হতে বঞ্চিত হবেন বলে হতাশায় নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। সোমবার (২০ মার্চ) সকাল থেকে বিকেল অবধি সরেজমিনে মেহেরপুর সদর, মুজিবনগর ও গাংনী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে গম চাষীরা তাদের ফসলের ক্ষতির শঙ্কার কথা জানান। মুন্দা অলিনগর গ্রামের হুমায়ুন আহমেদ জানান, অন্যান্য গমের তেমন ক্ষতি না হলেও বারী-৩০ জাতের গম চাষীরা বেশি ক্ষতির মুখে পড়বেন। কারণ বারী-৩০ জাতের প্রায় ক্ষেতের গমের গাছ কাচা এবং অধিকাংশই নুইয়ে পড়েছে। এতে ফলন কম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শঙ্কর কুমার মজুমদার সাংবাদিকদের জানান, এ পর্যন্ত যে বর্ষণ হয়েছে তাতে করে গমের তেমন একটা ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। তবে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে গমের দানার একটু কালার পরিবর্তন হতে পারে।
খালিদ সাইফুল,দৈনিক দেশতথ্য ,২০ মার্চ ২০২৩
প্রিন্ট করুন
Discussion about this post