আন্তর্জাতিক প্রতিবেদক
যারা উগ্র তারা মৃত্যুর আগে ভয়ংকর থেকে ভয়াবহ হয়ে ওঠে। তাঁরা ভাবে তাদের বুঝি কেউ দমাতে পারবে না। বাপের ও বাপ আছে।২০ বছর আগে দক্ষিণ লেবানন থেকে ইসরাইলের শেষ যোদ্ধাদের তাড়িয়েছিল হিজবুল্লাহ গেরিলারা। ২০ বছর বাদে এখন কোনো পক্ষেরই যুদ্ধে জড়ানোর ইচ্ছে নেই। কিন্তু তারপরও প্রস্তুতিতে নিমগ্ন উভয়েই।
এছাড়া পুনরায় লেবানন দখলে নেওয়ার জন্য নিয়মিত চলছে দেশটির অনুশীলন। থেমে নেই হিজবুল্লাহও। তারা তাদের বাহিনীর শক্তিমত্তাও ক্রমাগত বাড়িয়েই চলেছে। উস্কানি দিলে খোদ ইসরাইল দখলে নেওয়ার অভিযান শুরুরও হুমকি দিয়েছে হিজবুল্লাহ প্রধান।
উত্তরাঞ্চলীয় ইসরাইলের এক ঘাঁটিতে হিজবুল্লাহর সঙ্গে কল্পিত যুদ্ধ অনুশীলন করছে দেশটির সেনাবাহিনীর একটি দল।
১ সপ্তাহ ধরে চলমান ওই অনুশীলনের নেতৃত্বে আছেন কর্নেল ইসরাইল ফ্রেডলার। তিনি বলেন, ‘পরবর্তী যুদ্ধের জন্য আমরা খুব সিরিয়াসলি প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমরা কোনো সংক্ষিপ্ত পথে যাবো না।
আশির দশকে গেরিলা বাহিনী হিসেবে হিজবুল্লাহর জন্ম। অর্থায়নে শুরু থেকেই ছিল ইরান। উদ্দেশ্য ছিল দক্ষিণ লেবানন দখল করে থাকা ইসরাইলি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করা। দীর্ঘমেয়াদী ওই গেরিলা যুদ্ধে সড়কের পাশে পুঁতে রাখা বোমা ফোটা আর স্নাইপার দিয়ে হত্যা করা, দুইই ছিল নিত্যনৈমিত্যিক ঘটনা। পরবর্তীতে ২০০০ সালের মে মাসে পিছু হটতে বাধ্য হয় ইসরাইল।
২০০৬ সালে যুদ্ধ করতে আসে ইসরাইল। ফলাফল যদিও ড্র, তবুও মাসব্যাপী ওই যুদ্ধ শেষ না করেই চলে যেতে হয় দেশটিকে। ওই মাসব্যাপী যুদ্ধ ছাড়া সীমান্ত মোটাদাগে শান্তই ছিল এতগুলো বছর। কিন্তু এরই মাঝে লেবাননের সবচেয়ে ক্ষমতাধর সামরিক ও রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে হিজবুল্লাহ। হিজবুল্লাহর রাজনৈতিক দল ও মিত্ররাই এখন লেবাননের পার্লামেন্টে আধিপত্য চালাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াবের নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রধান সমর্থকই হিজবুল্লাহ।
ইসরাইলি বিমান সীমার ভেতর হিজবুল্লাহ ড্রোন প্রবেশ করাতে চেয়েছিল। গত মাসে হিজবুল্লাহ কর্মীরা ইসরাইল-লেবানন সীমান্ত বেষ্টনীর ক্ষতি করে বলেও অভিযোগ তাদের।সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে এলইয়াকিম সামরিক ঘাঁটিতে বিরাট আকারে যুদ্ধের অনুশীলনে নেমেছে হাজার হাজার ইসরাইলি সেনা। মক আকারে লেবানিজ গ্রাম প্রস্তুত করে সেখানে হামলার অনুশীলন করছে স্থলবাহিনী। বিমান বাহিনী, নৌ ও সাইবার ইউনিটও ওই অনুশীলনে যোগ দিয়েছে।
ইসরাইলি কমান্ডার ফ্রেডলার বলেন, পরবর্তীতে যুদ্ধ হলে সীমান্ত অতিক্রম করে হিজবুল্লাহকে থামানো ছাড়া উপায় থাকবে না ইসরাইলের।
অপরদিকে হিজবুল্লাহও বলছে, পরবর্তী যুদ্ধে তারা শুধু প্রতিরক্ষাই নয়, বরং ইসরাইলের অভ্যন্তরে প্রবেশ করবে। ২০১৮ সালের শেষের দিকে ইসরাইলি সেনারা লেবানন থেকে ইসরাইলের ভেতর অবদি মাটির নিচের টানেল খুঁজে পায়। পরে সেগুলো ধ্বংস করা হয়।
আট মাস ধরে চলা হামাসের হামলায় নাস্তানাবুদ ইসরাইল। হামাসের তুলনায় হিজবুল্লাহ সামরিক শক্তি বহুগুণ। ইসরাইল যদি হিজবুল্লাহ উপর যুদ্ধ চাপিয়ে দেয় তবে ইসরাইলের দুঃখ গাঁথা ইতিহাস হতে পারে।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//
![প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন](http://dailydeshtottoh.com/wp-content/plugins/wp-print/images/printer_famfamfam.gif)
Discussion about this post