শেখ জাহাঙ্গীর আলম শাহীন, লালমনিরহাট: ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার ধরলা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমাসহ প্রধান নদ নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। অসময়ে বন্যার আশস্কা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে তিস্তা, ধরলা, ব্রহ্মপুত্র নদ — নদীর চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) শুক্রবার এক পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ বার্তায় জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬ টায় তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া পয়েন্টে পানির সমতল ৫১.৮৩ মিটার (বিপদসীমা = ৫২.১৫ মিটার) যা বিপদসীমার ৩২ সে.মি নিচে, কাউনিয়া পয়েন্ট পানির সমতল ২৮.৮২ মিটার (বিপদসীমা = ২৯.৩১ মিটার) যা বিপদসীমার ৪৯ সে.মি নিচে। ধরলা নদী শিমুলবাড়ি পয়েন্ট পানি সমতল ২৮.৬০ মিটার, (বিপদসীমা = ৩০.৮৭ মিটার) যা বিপদসীমার ২২৭ সে মি নিচে। আজকে লালমনিরহাটে বৃষ্টিপাত হয়েছে ৭২ মিঃমিঃ। ২৬ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার যা ছিল তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্ট পানির সমতল ৫১.৫০ মিটার (বিপদসীমা = ৫২.১৫ মিটার) যা বিপদসীমার ৬৫ সে.মি নিচে, কাউনিয়া পয়েন্টে পানির সমতল ২৮.১৫ মিটার (বিপদসীমা = ২৯.৩১ মিটার) যা বিপদসীমার ১১৬ সে.মি নিচে, ধরলা নদী শিমুলবাড়ি পয়েন্ট পানি সমতল ২৮.৩৯ মিটার, (বিপদসীমা = ৩০.৮৭ মিটার) যা বিপদসীমার ২৪৮ সে.মি নিচে, লালমনিরহাটে বৃহস্পতিবার বৃষ্টিপাত ২২ মিঃমিঃ রেকর্ড হয়া হয়ে ছিল। বৃষ্টিপাতের মধ্যে দেশের নদ—নদীর বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদর রহমান জানিয়েছেন, বর্তমানে দেশের সব প্রধান নদ—নদীর পানি সমতল বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে রংপুর বিভাগের তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিকে দুধকুমার নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল আছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত রংপুর বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের (৮৯ মি.মি./২৪ ঘণ্টা) প্রবণতা রয়েছে। তবে পরবর্তী দুই দিনে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে আসতে পারে। এর প্রেক্ষিতে তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি সমতল আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে পরবর্তী একদিন পর্যন্ত তা স্থিতিশীল এবং এর পরদিন থেকে তা হ্রাস পেতে পারে। এই অবস্থায় আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার তিস্তা নদীর পানি সমতল সতর্কসীমায় প্রবাহিত হতে পারে এবং জেলাগুলো সংশ্লিষ্ট চরাঞ্চল ছাড়াও কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। অন্যদিকে আগামী ৩ দিন পর্যন্ত কুড়িগ্রাম জেলার ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি সমতল বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। এদিকে রংপুর বিভাগের অন্যান্য প্রধান নদীগুলোর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
এসব নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে, যা পরবর্তী একদিন পর্যন্ত স্থিতিশীল থাকতে পারে। তবে এসব নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে এবং পরবর্তী একদিন পানি সমতল হ্রাস পেতে পারে। অন্যদিকে, রংপুর বিভাগের ব্রহ্মপুত্র নদ ও এর ভাটিতে যমুনা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে তা বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বর্তমানে তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি ক্রমহারে বাড়তে থাকলে বন্যার আশস্কা করছে তিস্তা ও ধরলা নদী পাড়ের মানুষ।
উত্তরাঞ্চলের মত ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, মেঘালয়, অসম এ বৃদ্ধি হচ্ছে। এই বৃষ্টির পানি উজানের ঢল হিসেবে তিস্তা ও ধলালা দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে গিয়ে মিশবে। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে পাহাড়ি ঢল ও উজানের ঢল হয়ে তিস্তায় ও ধরলা নদীতে নামতে পারে।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌলশলী সুনীল কুমার জানান, লালমনিরহাটে তিস্তা ও ধরলার পানি বাড়ছে। উজানে প্রবল বৃষ্টিপাত হলে বন্যা হতে পারে। ধরলা নদীর উজানে কোন বাঁধ নেই তাই এখনকার পানি স্বাভাবিক প্রবাহ হয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে মিশবে কিন্তু তিস্তা নদীর উজানে বাঁধ রয়েছে। সেই বাঁধের পানি ভারত সরকার ছেড়ে দিলে বন্যার আশস্কা থেকে যায়। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকতার্ গণ পর্যবেক্ষণ করছেন।
প্রিন্ট করুন
Discussion about this post