Print Date & Time : 22 August 2025 Friday 11:47 pm

রংপুরে রোপা আমন ধান রোপনে ধুম

শেখ জাহাঙ্গীর আলম শাহীন, লালমনিরহাট:
রংপুর অঞ্চলে বন্যার পানি নেমে গেছে। যার কারনে উচুঁ নিচু সব শ্রেণির জমিতে নতুন রোপা আমন ধানের চারা রোপানের ধুমপড়ে গেছে। রোপা আমন ধান চাষ বৃষ্টি পানির নির্ভর ফসল। প্রকৃতি এবছর প্রাণভরে বৃষ্টি দিয়েছে প্রচুর। তার পরেও প্রকৃতি নির্ভর এই ধানচাষে যদি খরার সময় সেচ দেয়া যায়। তাহলে শতকরা ৬০ পার্সেন্ট বেশী ফলন হয় থাকে।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানা গেছে, চলতি আমন মওসুমে রংপুর অঞ্চলের ৫ জেলায় ৬ লাখ ৪০ হাজার ৪০৪ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে আগামী ১৫-২০ দিনে রোপণ করা হয়ে যাবে প্রায় ৬ লাখ ৮ হাজার ৮৫২ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের নতুন চারা। যাহা শতকরা হিসেবে ৯৫ দশমিক ৮২ শতাংশ। এবারে সারা দেশে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে। প্রকৃতি বৃষ্টি দিয়েছে প্রাণভরে। এ বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে রংপুর অঞ্চলের লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও রংপুর অঞ্চলের তিস্তা ও ধরলা নদীর কূলবর্তী অঞ্চলে কোথাও কোথাও বন্যা হয়েছে। গত দুই সপ্তাহে বন্যার পানি নেমে গেছে। এতে করে রোপা আমন ধানের চারা রোপনে জমি তৈরী ও ধানের চারা রোপনে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কৃষক। গ্রামে গ॥ামে ধানের চারা রোপনের ধুম পড়ে গেছে। এবছর রোপা আমন ধান চাষে আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। উচুঁ জমিতেও পানি জমাট বেঁধেছে। উচুঁ ও নিচু জমিতে কৃষক ধান রোপনে উঠে পড়ে লেগেছে। উচুঁ জমিতে ১৫ দিন আগেই ধান রোপন করেছে। কারণ ধান কেটে সেই জমিতে আলু অথবা তামাক লাগাবে। তবে দুই – তিন দফার বন্যার কারণে নিচু জমিতে রোপা আমন ধানের চারা রোপনে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। এদিকে কৃষি বিভাগ সূত্রে আশংকা করেছে ঘণ ঘন টানা বৃষ্টিপাতের কারনে ও বন্যার কারনে অনেক বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। রংপুর কৃষি অঞ্চলের ৫ জেলা রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, নীলফামারী ও লালমনিরহাটে এবার আমন মৌসুমে স্থানীয় এবং হাইব্রিড ও উফশী ধান রোপণে আগ্রহী কৃষকরা। এরমধ্যে রংপুর জেলায় এক লাখ ৭৬ হাজার ৭৪১ হেক্টর জমিতে রোপা আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। রোপণ হয়েছে এক লাখ ৬৫ হাজার ৮০৫ হেক্টর জমি। গাইবান্ধায় লক্ষ্যমাত্রা চেয়ে বেশি রোপণ হয়েছে। এ জেলায় এক লাখ ২৩ হাজার ৬৭ হেক্টর জমির রোপণ লক্ষ্যমাত্রার জন্য নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু রোপন হয়েছে এক লাখ ২৫ হাজার ৭৯০ হেক্টর জমি। যা শতকরা একশত ২ দশমিক ২১ শতাংশ। তবে গাইবান্ধায় তিস্তা নদীর অববাহিকায় বন্যা দেখা দেয়ায় রোপা আমনের রোপনকৃত ফসলের ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। কুড়িগ্রাম জেলায় এক লাখ ২২ হাজার ১৫৯ হেক্টরের মধ্যে এক লাখ ১৯ হাজার ৩০৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান রোপণ করা হয়। লালমনিরহাট জেলায় ৯০ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে আমন রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও রোপণ করা হয়েছে ৮৫ হাজার ২৯০ হেক্টর জমি। এছাড়া নীলফামারী জেলায় এক লাখ ২৩ হাজার ৩৭ হেক্টরের মধ্যে ১ লাখ ১২ হাজার ৬৬২ হেক্টর জমি চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নিধারণ করা হয়েছে। অতিবৃষ্টি, বন্যার কারনে রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা ও নীলফামারীতে রোপা আমন ধানের বীজতলার সংকট দেখা দিয়েছে। কৃষি বিভাগ নতুন বিজতলা তৈরী করতে কৃষকদের দুই সপ্তাহ আগেই পরামর্শ দিয়েছে। এবছর রংপুর অঞ্চলে হাইব্রিড জাতের দেশী বঙ্গবন্ধু ধান বেশীচাষাবাদ হবে বলে আশা করছে। ডক্টর মোহাম্মদ সাইখুল আরেফিন জানান, কোন রোগবালাই ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশী ফলন হবে।

দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//