মো.আলাউদ্দীন, হাটহাজারীঃহাটহাজারীতে খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে এসে ফাঁদে আটক বিপন্ন প্রজাতির একটি মেছোবাঘ বনবিভাগের রেসকিউ টিমের অদক্ষতার কারনে হস্তান্তরের সময় পালিয়ে গেছে।
রবিবার (২৫ ফেব্রুয়ারী) দিবাগত রাত প্রায় ১টার দিকে উপজেলার গুমাণমর্দ্দন ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই ওয়ার্ডের হোসেন কাজীর বাড়ির আমির আহমদের পুত্র আবদুল হালিমের মুরগী ফার্মে গত বেশ কিছুদিন ধরে মুরগী কমে যাচ্ছিলো। তিনি ধারনা করেছিলেন হয়তো বিড়াল বা শেয়াল গভীর রাতে ফার্মে ঢুকে মুরগী খেয়ে ফেলছে। কিন্তু কিছুদিন পূর্বে প্রতিদিনের মতো সকালে ফার্মে এসে মুরগী কমে যাওয়ার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি মৃত মুরগী এবং ফার্মের আশেপাশে ভিন্ন রকম পশম দেখতে পেলে তার সন্দেহ হয়। তাই ফার্মে তিনি বড় আকারের একটি খাঁচা তৈরী করে সেটাকে গত শনিবার রাতে ফাঁদ হিসেবে বসিয়ে দিয়ে বাড়িতে চলে যান। পরে রবিবার সকালে খামারে এসে দেখেন ওই খাঁচায় বড় আকারের একটি মেছোবাঘ (মেছো বিড়াল) আটকে আছে। সকালের দিকে মেছোবাঘ আটকের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বনবিভাগ কে জানানোর পরও অজ্ঞাত কারনে তারা বিকাল ৪ টা পর্যন্ত সেটি রেসকিউ করতে ঘটনাস্থলে না যাওয়ায় পুনরায় এ প্রতিবেদক হাটহাজারী বনবিট পরীক্ষণ ফাঁড়ির রেইঞ্জার সাইফুল কে বিষয়টি জানালে তিনি কিছুক্ষণের মধ্যে রেসকিউ করতে টিম পাঠান। পরে রাত প্রায় ১ টার দিকে মেছোবাঘটিকে আটক হওয়া খাঁচা থেকে বের করতে গেলে সেটি তাদের ফাঁকি দিয়ে পুনরায় লোকালয়ে পালিয়ে যায়। স্থানীয় বেশ কযেকজন ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিবেদক কে জানান, সকালের দিকে বনবিভাগ কে খবর দিলেও তারা বিষয়টিকে গুরুত্বহীন মনে করে দিনের প্রায় শেষ সময় পর্যন্ত তারা সেটি উদ্ধার করতে আসেননি। এদিকে সে মেছোবাঘটিকে পাহাড়া দিতে গিয়ে পবিত্র শবে বরাতের মতো একটা দিনে ইবাদত পর্যন্ত আমাদের করা সম্ভব হয়নি। পরে যারা রেসকিউ করতে আসলেন তারাও দেখলাম তেমন অভিজ্ঞ না। যদি অভিজ্ঞ হতেন তবে সেটি তাদের ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যেতে পারতেন না। আর তারা যে নেট নিয়ে আসছিলেন সেটিও ছিলো ছিড়া। যার কারনে সেটি সহজেই পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। বর্তমানে এলাকার মানুষ চরম আতংকে আছেন বলেও জানান তারা।
ফাঁর্মের মালিক হালিম সোমবার বিকালের দিকে এ প্রতিবেদক কে জানান, পুরো দিন শেষে রাত প্রায় ১ টার দিকে আটক মেছোবাঘটিকে উদ্ধার করতে আসলেও তাদের অসাবধানতার কারনে পুনরায় সেটি পালিয়ে যায়।
গুমাণমর্দ্দন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো.মুজিবুর রহমানের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বেলা আড়াইটার দিকে জানান, আমিও মেছোবাঘ আটকের খবরটি শুনেছিলাম।
জানতে চাইলে উপজেলা রেঞ্জ কর্মকর্তা সাইফুল বলেন, আমরা খবর পাওয়া মাত্র খবরটি ওয়াল্ডলাইফ ডিভিশনকে ইনফর্ম করি। কিন্তু ওনারা কেউ যাননি, যখন আবার খবর পেলাম প্রায় সন্ধ্যার দিকেও তিনারা যাননি, বিষয়টি অবহেলা করছেন তখন আমরা লোকাল রেসকিউ টিমকে সাথে নিয়ে আমাদের কিছু লোকজন গিয়ে মেছোবাঘটি রেসকিউ করার সময় নেট ছিড়ে স্থানীয় জঙ্গলে চলেে গেছে। বন্যপ্রাণী হতাহত বা আঘাত ছাড়া অবমুক্ত হয়েছে এটাই শুকরিয়া বলেও জানান তিনি।
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এবিএম মশিউজ্জামান সোমবার বিকাল সাড়ে ৪ দিকে জানান, মেছোবাঘটিকে রেসকিউ করার সময় নেট ছিড়ে স্থানীয় জঙ্গলের দিকে পালিয়ে গেছে বলে শুনেছি।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//