কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: (১৭ই অক্টোবর২০২৪) পহেলা কার্তিক অসাম্প্রদায়িক চেতনার মহাপুরুষ আধ্যাত্মিক চিন্তার পথিকৃত বাউল স¤্রাট খ্যাত ফকির লালন শাহ’র ১৩৪তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে ৩দিন ব্যাপী স্মরণোৎসব আজ থেকে শুরু।
তিরোধান দিবস স্মরণের এই আয়োজনেরর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে বৃহস্পতিবার সন্ধায়। সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়ের সহযোগিতায় লালন একাডেমি এবং কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের আয়োজনে প্রতিদিন সন্ধায় লালন দর্শনের আলোকে বক্তব্য শেষে গভীর রাত পর্যন্ত চলবে লালন শাহের মরমী গান।
লালন একাডেমীর ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সেলিম হক বলেন, প্রতিবারের মতো এবারের স্মরনোৎসবেও সাঁইজির সাধন ভজন সিদ্ধ করতে ইতোমধ্যেই শত সহ¯্র সাধু ভক্তের সমাগম ঘটেছে ছেউড়িয়ার আঁকড়াবাড়িতে। সন্ধ্যার মধ্যেই কানায় কানায় ভরে উঠছে লালনের এই সাধন ভূমি। সুষ্ঠু ও সুন্দর ভাবে উৎসব সফল করতে কাজ করে যাচ্ছে আইনশৃংখলা বাহিনী।
১২৯৭ বাংলা সনের ১ কার্তিক, ১৮৯০ সালের ১৭ অক্টোবর এই আধ্যাতিœক বাউল সাধক লালন শাহের মৃত্যু হয়। তার তিরোধান দিবসকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর ভক্তরা এ উৎসব পালন করতে সমবেত হয়ে থাকে। এসময় আঁখড়া বাড়ি দেশ-বিদেশ থেকে আগত লক্ষ প্রানের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠে।
তিনি জানান, এই উৎসবে বাউল সাধক, ভক্ত আশেকানদের আখড়াবাড়ীতে আসতে যেমন কোন আমন্ত্রণ পত্র লাগেনা না, তেমনি প্রথার বাইরেও তারা কিছু করেন না। আত্মার টানে যেভাবে দুর দুরান্ত থেকে এসে মিলিত হবে ঠিক একই ভাবে সাধনভজন শেষ করে সাঁইজির মাজার ছেড়ে এসব সাধুরা ফিরে যাবেন নিজ নিজ আশ্রমে।
ইতিমধ্যে উৎসবে যোগ দিতে দেশ-বিদেশ থেকে লালন ভক্তরা এসে সমবেত হয়েছে তাদের সাধন ভজনের শুরু সাঁইজির এই তীর্থ ধামে। লালন আখড়াবাড়িতে আসা বাউল-সাধুরা একাডেমি ভবনের নিচ তলাসহ মূল মঞ্চের আশেপাশে অবস্থান নিয়েছেন। ৪-৫ জনের ছোট ছোট দলে তারা ভাগ হয়ে একতারা-দোতারা, ঢাক-ঢোল পিটিয়ে লালনের গানে সুর তুলছেন বাউল সাধুরা।
ফকির লালন সাঁইজির জন্ম সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য না থাকলেও ‘সাপ্তাহিক হিতকরী’ পত্রিকার মহাত্মা লালন ফকির প্রতিবেদন থেকে পন্ডিতরা অনেকটা নিশ্চিত তিরোধানের তারিখ সম্পর্কে। সেই সূত্রে ১৮৯০ সালের ১৭ অক্টোবর লালন শাহ কুষ্টিয়া শহর সংলগ্ন ছেঁউড়িয়ায় মৃত্যুবরন করার পর থেকেই এই উৎসব পালিত হয়ে আসছেন বলে জানালেন মাজারের খাদেম মহম্মদ আলী শাহ।
এবারের অনুষ্ঠান সম্পর্কে লালন একাডেমির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মোছা: শারমিন আখতার বলেন, বাউলরা দলে দলে ছুটে আসছেন। তাদের দেখভাল করা হচ্ছে। এখানে আসা বাউলদের খাদ্য ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে একাডেমী ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। মেলার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
আগত অতিথি ও ভক্তরা যাতে শংকামুক্ত পরিবেশে অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারে সে ব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সব রকম পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
এহ/16/10/24/ দেশ তথ্য
![প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন](http://dailydeshtottoh.com/wp-content/plugins/wp-print/images/printer_famfamfam.gif)
Discussion about this post