শেখ জাহাঙ্গীর আলম শাহীন, লালমনিরহাট থেকে:
লালমনিরহাটের গোতামারী সীমান্তে ছুটছে একদল মানুষ। মূহুর্তে জড়ো হয় হাজার হাজার মানুষ। সবার মুখে একই কথা কাঁটাতারের বেড়ার পাশে কিছু সংখ্যক সংখ্যালঘু পরিবারের মানুষ জড়োসড়ো হয়েছে ভারতে যেতে। কেউ কেউ বলেছে আমরা এসেছি বর্তমান দেশের পরিস্থিতিতে প্রতিবাদ জানাতে। কিন্তু বিএসএফের বাঁধার মুখে যেতে পারেনি।
ঘটনাটি ঘটে ৯ আগষ্ট শুক্রবার দুপুরে। বাড়ি ঘরে হামলা, ভাংচুর করায় তারা সীমান্তে জড়োসড়ো হয়েছে।
এদিকে লালমনিরহাট জেলা যুবদল আদিতমারী উপজেলা যুবদলের যুগ্ন আহবায়ক মোঃ মাইদুল ইসলাম আব্বাস ও জেলা সদরের পঞ্চগ্রাম ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মোঃ শাহ আলম ও সিনিয়র সহ সভাপতি সাইদুল ইসলাম কে বহিষ্কার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা গত ক’দিনে চাঁদাবাজি, হামলা, ভাংচুর করে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন।
এঘটনাটি ভারতের আনন্দ বাজার ডটকম অনলাইন সংস্করণে এভাবে প্রচার যা হুবহুব তুলে ধরা হচ্ছে – ভারতে আসতে চেয়ে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি বাংলাদেশের শরণার্থীদের! শীতলখুচিতে আটকাল বিএসএফ
বিএসএফ অবশ্য তাঁদের সীমান্তের ফেন্সিংয়ের আগেই আটকে রাখে। তখন জ়িরো পয়েন্টের মাটিতে বসে হাসিনার সরকারের সমর্থনে স্লোগান দিতে থাকেন ওই মানুষজন। তোলেন ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনিও।
বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় চেয়ে সীমান্তে জড়ো হচ্ছেন শয়ে শয়ে মানুষ। সকলেই ভারতে আশ্রয় চান। তাঁদের সীমান্তেই আটকে দিয়েছে বিএসএফ। তবে জ়িরো পয়েন্টে দাঁড়িয়েই থাকেন ওই শরণার্থীরা। কেউ কেউ আওয়ামী লীগের নাম নিয়ে স্লোগান দিতে শুরু করেন। কেউ কেউ ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দেন। শুক্রবার এমনই দৃশ্য চোখে পড়ল কোচবিহারের শীতলখুচির পাঠানটুলি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গত সোমবার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন শেখ হাসিনা। তিনি বর্তমানে ভারতে রয়েছেন। তার পরেই বাংলাদেশের একাধিক জায়গায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। বাড়িঘর ভাঙচুর, লুটের অভিযোগ উঠেছে সে দেশের নানা জায়গায়। এমতাবস্থায় বাংলাদেশিদের অনেকেই ভিটে ছেড়ে ভারতে আশ্রয়ের জন্য চলে আসছেন। বুধবার জলপাইগুড়ির বেরুবাড়িতে বাংলাদেশ সীমান্তে জড়ো হয়েছিলেন অনেক মানুষ। ওই স্থানে কাঁটাতার নেই।
বিএসএফ জানায়, তাঁরা জ়িরো পয়েন্টে অপেক্ষা করছিলেন। সকলে ভারতে ঢোকার অনুমতি চান। যদিও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সঙ্গে কথা বলে তাঁদের ফেরত পাঠায় বিএসএফ।
শুক্রবার দেখা যায়, আরও বেশি সংখ্যক মানুষ বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে আসার জন্য শীতলখুচির পাঠানটুলিতে জড়ো হয়েছেন। বিএসএফ অবশ্য তাঁদের সীমান্তের ফেন্সিংয়ের আগেই আটকে রাখে। তখনই জ়িরো পয়েন্টে মাটিতে বসে হাসিনার সরকারের সমর্থনে স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা। বিএসএফ সূত্রে খবর, বাংলাদেশের লালমণিরহাট জেলার গাইবান্দা, পশ্চিম গোতামারি, পূর্ব গোতামারি, ডাকুয়াটারি এলাকা থেকে ওই বাসিন্দারা এসেছেন।
গোতামারী ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেম জানান, তিনিও শুনে সীমান্তে এসেছেন। তিনি আরো জানান, ফেসবুকে কে বা কাহারা পোষ্ট করেছে নির্যাতন নিপীড়নের প্রতিবাদে গোতামারী সীমান্তে প্রতিবাদ সমাবেশ আছে। তবে একটি সূত্র বলছে সীমান্তে কিছু মানুষকে দেখা গেছে। তারা পরি সরে গেছে।
সীমান্ত গ্রামের শমশের আলম জানান, গোতামারী সীমান্তে সকাল হতে দুপুর পর্যন্ত শতশত মানুষ জড়ো হয়। তারা কেন এসেছে কেউ কিছু বলে না। সীমান্তে হাজার হাজার মানুষের জড়ো হওয়ায় গোতামারী সীমান্তের বিজিবির বিওপি ক্যাম্পের সদস্যদের অতিরিক্ত টহল দিতে দেখা গেছে। সীমান্তের এই পরিস্থিতিতে কেউ কোন ভাবে মিডিয়ার সামনে কথা বলতে চায় না। তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।
গোতামারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোনাবেরুল হক মনা জানান, রংপুরে গংগাচড়া, লালমনিরহাট, পঞ্চগ্রাম, কাউনিয়া হতে অসংখ্য হিন্দু পরিবার এসেছিল। পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রশাসনের মানুষও সীমান্তে এসেছিল। তাদের বুঝিয়ে পাঠিয়ে দেয়া হয়। সীমান্তে ছুটে আসা মানুষরা দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে মেসেজ পেয়ে প্রতিবাদ জানাতে আসে। এরা কেউ স্থানীয় ইউনিয়নের নয়, দূর দূরান্তের।
দেশতথ্য//এইচ//