শেখ জাহাঙ্গীর আলম শাহীন, লালমনিরহাট: লালমনিরহাট জেলা ছিল জাতীয়পার্টির ঘাঁটি। এখন সেই রাজনৈতিক দলটি উপজেলা নিবার্চনে প্রার্থী দিতে পারছে না।
জেলার পাঁচটি উপজেলায় জাপার কোন প্রার্থী নেই। তাই জাপার নেতা কমীর্রা অলস সময় পাড় করছে। এটাকে জাপার রাজনৈতিক দেউলিয়াপনা বলছে তৃণমূলের নেতা কমীর্রা।
জাপার জেলা পযার্য়ের হতাশ লালমনিরহাট সদর উপজেলায় জাতীয়পাটির্প প্রার্থী দিতে পারেনি। অথচ জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদের এই জেলার সদর উপজেলা আসনে ৯০’র পর হতে এমপি ছিলেন। বর্তমানে জাপা চেয়ারম্যানের স্ত্রী শরিফা কাদের এই জেলার রাজনীতির দেখভাল করার দায়িত্ব নিয়েছেন।
৯০ এ স্বৈরাচার এরশাদের পতন হলে জাপা রংপুর সহ উত্তরাঞ্চলে শক্ত অবস্থান গেড়ে বসে। সেই অবস্থান এখন নড়বরে। রংপুর, লালমনিরহাট সহ উত্তরাঞ্চলের কোথাও জাতীয়পার্টির সাংগঠনিক অবস্থান শক্তিশালী নেই। তাই জাতীয়পার্টিকে সাধারণ মানুষ ব্যঙ্গ করে যাত্রাপার্টি বলছে। জাতীয়পার্টি তার দলীয় কোন্দলে রাজনৈতিক অবস্থান তলানিতে এসে ঠেকেছে। পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদের অনুজ জিএম কাদের এমপি ৯০ সালের পর লালমনিরহাটে দাপটের সাথে রাজনীতি করেছেন। লালমনিরহাট সদর আসন হতে তিনি বেশ কয়েকবার এমপি নিবার্চিত হয়ে ছিলেন। এমন কী বর্তমান সরকারের সাথে জোটের রাজনীতি করার পুরস্কার হিসেবে একবার মন্ত্রী হয়ে ছিলেন। জাপা জোটের ক্ষমতায় গিয়ে তার জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পারেনি। আওয়ামীলীগের সাথে জোটবদ্ধভাবে কোন রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করেনি। বরং জাপার সাথে স্থানীয় আওয়ামীলীগসহ শরিক দলের নেতা কর্মীদের দূরত্ব বেড়েছে যোজন যোজন। যার কারণে জাপা এখন বন্ধু শূণ্য হয়ে পড়েছে। যার প্রমাণ উপজেলা নিবার্চনে জাপা কোন প্রার্থী দিতে পারেনি। যদিও এবারের উপজেলা নিবার্চন রাজনৈতিক দলের পরিচয়ে কোন প্রার্থী হয়নি। দলীয় প্রতীকও নেই। তবে স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতারা প্রার্থী হয়েছে। আওয়ামীলীগ ও বিএনপির রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতা কমীর্দের প্রার্থীদের পক্ষ নিয়ে ভোটের মাঠে কাজ করতে দেখা যাচ্ছে। যদিও বিএনপির কোন হেভিওয়েট প্রার্থী বা দলীয় পদপদবীধারী প্রার্থী উপজেলা চেয়ারম্যান পদে এ জেলায় প্রার্থী হয়নি। তবে স্থানীয় বিএনপির আশীর্বাদ নিয়ে প্রার্থী হয়েছে অনেকে। গত উপজেলা নিবার্চনেও আওয়ামীলীগের প্রার্থীকে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বিএনপির আশীর্বাদ নিয়ে হারিয়ে ছিল। এবারেও তার পূনরাবৃত্তি হতে পারে। রংপুরকে জাতীয় পার্টি নিজেদের ঘাঁটি হিসেবে দাবি করে আসছে। বাস্তবে রংপুর জাপার রাজনীতি এখন শূন্য কলস, বাজে বেশীর মত অবস্থা।
লালমনিরহাট জেলার পাঁচটি উপজেলায় পযার্ক্রমে নিবার্চন হতে যাচ্ছে। আগামীকাল ৮ মে পাটগ্রাম ও হাতীবান্ধা উপজেলায় নিবার্চন অনুষ্ঠিত হবে। আদিতমারী ও কালীগঞ্জ উপজেলায় নিবার্চনের তারিখ ঘোষনা হয়েছে আগামী ২১ মে ও লালমনিরহাট সদর উপজেলায় নিবার্চন হবে আগামী ২৯ মে। জাাপা কোন উপজেলায় প্রার্থী দিতে পারেনি। পাঁচ উপজেলাই থাকবে জাপা প্রার্থীশূন্য। জাতীয় পার্টির এ অবস্থা দেখে অনেককে বলাবলি করতে শোনা গেছে, ঘাঁটিতেই মাটি নেই জাতীয় পার্টির। আবার কেউ কেউ বলছেন, পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এমপির রাজনৈতিক জায়গা লালমনিরহাটে জাপার করুণদশা তারা যোগ্য প্রার্থী খুঁজে পায়নি। তাহলে জিএম কাদের এতো দিন কাদের নিয়ে রাজনীতি করলেন। এদিকে আওয়ামী লীগ—সমর্থিত একাধিক প্রার্থী থাকায় নির্বাচনকে ঘিরে সংঘাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় কমুনিস্টপার্টির সংগঠক ও লালমনিরহাট জেলা কমুনিস্ট পার্টির সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য এ্যাডঃ মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, জাতীয়পার্টি কে বিগত নিবার্চনে চোর পুলিশ খেলতে দেখেছে দেশের মানুষ। তারা নিবার্চনের আগে আওয়ামীলীগকে সমর্থন করবে না, বিএনপি কে সর্মথন করবে অনিশ্চিত খেলায় মেতে ছিল। তাই সাধারণ মানুষ জাতীয়পার্টির কাছ হতে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহনে নিবার্চন না হওয়ায় সাধারণ মানুষের নিবার্চন মুখী নয়।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//

Discussion about this post