শেখ জাহাঙ্গীর আলম শাহীন, লালমনিরহাট থেকে:
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে লালমনিরহাটে সহিংসতার ঘটনায়প্রায় দেড়শ জনকে আসামি করে দু’টি মামলা দায়ের হয়েছে।
বুধবার দুপুর পর্যন্ত ১৬ জন বিএনপি, জামাত ও শিবিরের নেতা কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে লালমনিরহাট সদর থানা ৩৯ জন আসামীর নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়। একই মামলায় অজ্ঞাত আসামা করা হয় ছয়-সাতজনকে।
একই দিন জেলার হাতিবান্ধা পৃথক ঘটনায় ৯০ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা হয়েছে। সেখানেও অজ্ঞাত আসামি করা হয় শতাধিক। এই দুই মামলায় সদর থানায় নয় জনকে ও
হাতিবান্ধা থানায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে আজ বুধবার লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ জানান,গতকাল মঙ্গলবার হতে জেলার সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে গেছে।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনে ঢুকে সাবেক উপমন্ত্রী অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় লালমনিরহাট জেলা শহরের মিশন মোড়ে বিএনপি, জামাত ও শিবির বিক্ষোভ মিছিল করে।
এসময় সাবেক উপমন্ত্রী দুলু জ্বালাময়ী বক্তব্য রাখেন।
পরে শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেন৷ মিছিল শেষ করে পুনরায় মিশনমোড়ে বিএনপির মিছিল নিয়ে এসে পুলিশের
ওপর হামলা করে। ৭-৮ জন পুলিশ সদস্যকে জিম্মি করে সাপ পেটা করে। জিম্মিহওয়া পুলিশ সদস্যদের উদ্ধারে রিজার্ভ পুলিশ এলে তাদের লক্ষ্য করে বৃষ্টির মত ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়।
এ সময় পুলিশ আত্মরক্ষার্থে৩০-৪০টি রাবার বুলেট ও কাঁধানে গ্যাস নিক্ষেপ করে বিএনপি নেতা কর্মীদের
ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় একজন এসআইসহ আট পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হয়। তাদের সংকটাপন্ন অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এসময় বিক্ষোভকারীদের মধ্যেও কয়েকজন আহত হয়। লালমনিরহাট সদর থানা দায়ের করা মামলায় বাদী হয়েছে এসআই রশিদুল ইসলাম।
এ মামলায় বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক উপমন্ত্রী
অধ্যক্ষ আসাদুল হাবীব দুলু সহ ৩৯ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়।
লালমনিরহাট সদর থানার ওসি ওমর ফারুক বলেন, এ মামলায় ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরা হলেন- শিবিরের সাবেক সম্পাদক ফিরোজ হোসেন লাভলু,
হারুন-অর-রশিদ, আরিফুল হক, আমিনুল ইসলাম, আব্দুল কুদ্দুস, আসাদুল হাবীব মানিক, আশরাফুজ্জামান, মিজানুর রহমান, মাহাবুর রহমান ও বাবলু মিয়া। তারা
সকলে বিএনপি, জামাত ও শিবির কর্মী।
অন্যদিকে হাতীবান্ধা উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাঙচুর করা মামলায় বাদী
হয়েছে হাতীবান্ধা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান
লিয়াকত হোসেন বাচ্চু৷ এ মামলায় ৯০ জনের নামে উল্লেখ করা হয়। আওয়ামীলীগ
অফিস ভাংচুরের সময় স্থানীয় দুই সংবাদ কর্মী বিএনপির রাজনৈতিক আদর্শে বিশ্বাসী মানবকণ্ঠ পত্রিকার লালমনিরহাট প্রতিনিধি আসাদুজ্জামান সাজু,
কলকাতা টেলিভিশনের লালমনিরহাট প্রতিনিধি মোস্তাফিজার রহমান মোস্তাক
ফেসবুকে সরাসরি লাভ করে উস্কানি দিচ্ছে । এ কারণে স্থানীয় দুই সংবাদ কর্মীকে আসামি করা হয়েছে।
হাতীবান্ধা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, এ মামলায় উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আমিনুর রহমান, মমিনুর রহমান ও মিজানুর
রহমান নামে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//

Discussion about this post