লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি: দীর্ঘদিন প্রায় এক যুগ ধরে রেলওয়ের এক হাজার বর্গফুট জায়গায় দখল করে নিমার্ণ করেছিল আধা—পাকা স্থাপনা। শেষ পর্যন্ত রক্ষা করতে পারিনি বিএনপি নেতা শরিফ।
আদালতের নির্দেশে গুঁড়িয়ে দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। বৃহস্পতিবার লালমনিরহাট শহরের বিডিআর সড়কে রেলওয়ের জায়গা দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে ভূসম্পত্তি বিভাগের প্রধান ও ডেপুটি কমিশনার পূর্ণেন্দু দেব জানান, রেলওয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ী শরীফ মো. আতাউল্লাহ সরকার প্রায় এক যুগ ধরে জায়গাটি নিজের দখলে রেখেছিলেন। চলতি বছরের ১৩ জুন তাকে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে নোটিস দেওয়া হয়। নোটিসে এক জুলাইয়ের মধ্যে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে রেলওয়েকে জমি বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে সময় মতো তা না করায় সেই দিন অভিযানে যায় রেলওয়ের ভূসম্পত্তি বিভাগ। কিন্তু ওইদিন উচ্ছেদ অভিযান না করে ফিরে যেতে হয়। কারণ রাজনৈতিক চাপ ছিল। যুবলীগের নেতা হুমায়ন কবির মোড়ল বিএনপি নেতা শরিফের পক্ষ নিয়ে উচ্ছেদ অভিযানে বাঁধা দেয়। সেখানে শতশত টোকাই, মাস্তান জমায়েত করে। অভিযানিক দল আইনশংঙ্খলা রক্ষায় উচ্ছেদ অভিযান না করে ফিরে আসতে বাধ্য হয়। রেলওয়ে ভূসম্পত্তি বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা পূর্ণেন্দু দেব আরো জানান, ২০২১ সালের ২৩ অগাস্ট অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে আতাউল্লাহকে প্রথম নোটিস দেওয়া হয়। সেই সময় তিনি নোটিস চ্যালেঞ্জ করে এবং নিজেকে রেলওয়ের একজন ইজারা গ্রহীতা দাবি করে জেলা জজ আদালতে মামলা করেন। মামলায় সুফল না পাওয়ার সম্ভাবনা থাকায়, কয়েক মাস পর তা প্রত্যাহার করে নেয়। পরে উচ্ছেদ নোটিসের বিপরীতে উচ্চ আদালতে গিয়ে মামলা করেন। সেখানে তার পক্ষে সুফল না পেয়ে সবশেষ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে সিভিল রিভিউ পিটিশন করেন শো. শরিফ আতাউল্লাহ। যা চলতি বছরের ১৪ মার্চ খারিজ করে দেয় আদালত। আদালতের রায়ের পর পহেলা জুলাই দুপুরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে গিয়েও ফিরে আসতে হয়েছে। অবশেষে আজ উচ্ছেদ অভিযান চালানো হলো। অভিযানে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী হাকিম তাপসি তাবাসসুম উর্মিসহ রেলওয়ের বিভিন্ন কর্মকর্তা—কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন। উচ্ছেদের বিষয়ে ব্যবসায়ী আতাউল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে গত পহেলা জুলাই উচেছদ অভিযানে বাঁধা সৃষ্টি করে যুবলীগের নেতা হুমাযুন কবির মোড়ল। অনৈতিক সুবিধা পেয়ে সে একজন ভুমিখেকো অবৈধ দখলদার বিএনপি নেতা মো. শরিফের পক্ষ নিয়ে ছিল। সে সময় বিষয়টি রাজনৈতিক মহল বহুল আলোচনার সৃষ্টি করেছিল। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি তাদের অনুকূলে না থাকায় রেলওয়ের উচেছদ অভিযান সফল হয়েছে বলে মনে করেন সাধারণ মানুষ।

Discussion about this post