শেখ জাহাঙ্গীর আলম শাহীন, লালমনিরহাট:
লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশনে প্লাাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীবাহী ট্রেনের বগিতে নিয়ন্ত্রণ হারানো একটি ট্রেনের ইঞ্জিন সজোড়ে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে অন্তত ৫০ জন যাত্রী আহত হয়েছে।
এদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে আজ শনিবার (৩০ মার্চ) সকাল দশটায় লালমনিরহাট রেলওয়ে ষ্টেশনে।
এদের মধ্যে গুরুতর আহত চার জন ট্রেন যাত্রীকে তাৎক্ষণিক ভাবে লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগীয় রেলওয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। গুরুতর আহতরা হলেন, শেফালি আক্তার (৪০), সামিনা খাতুন (৬২), নবিজুল ইসলাম (৬০), জাহেদুল ইসলাম (৩৫) ।
অন্যরা লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল সহ প্রাইভেট ক্লিনিক গুলোতে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, জেলার বুড়িমারী রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে ছেড়ে আসা পার্বতীপুর গামী ৪৫৬/৪৬১ নম্বর লোকাল ট্রেনটি লালমনিরহাট স্টেশনে এসে দাঁড়িয়ে ছিল। এসময় অন্য একটি ইঞ্জিন বদলের জন্য বগি গুলোর সাথে সংযোগ হতে লোকোশেড হতে আসে। এসময় রেলওয়ের লোকো মাস্টার রাজ গোবিন্দ ইঞ্জিনটি চালাচ্ছিল। ট্রেনের কোচ (বগির) কাছাকাছি এসে ইঞ্জিনটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। দাঁড়িয়ে থাকা বগি গুলোতে দ্রুতগতিতে ধাক্কা দেয়। এসময় বিকট শব্দ হয় ও ট্রেনের যাত্রীরা ছিটকে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছে। বগির অভ্যন্তরে থাকা আহত অর্ধশত যাত্রীর চিৎকারে আতংকের সৃষ্টি হয়। প্রাণ বাঁচাতে দিগ্বিদিক ছুটতে থাকে যাত্রীরা।
লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগীয় রেলওয়ে হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাঃ মাহফুজ রহমান জানান, এ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে গুরুতর আহত চারজনকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
অন্যরা সরকারি বেসকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে বলে শুনেছি। এ ব্যাপারে লোকো মাস্টার রাজ গোবিন্দ দাস জানান, ইঞ্জিনের ব্রেক লাগাতে দেরি হওয়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ইঞ্জিনের গতি ঘন্টায় দশ কিলোমিটার ছিল বলে তিনি দাবী করে।
লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার নূরনবী বলেন, একটা ইঞ্জিন বদল হয়ে আরেকটা ইঞ্জিন সংযোগ নেয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে জোরে ধাক্কা দিলে এ দুর্ঘটনাটা ঘটে। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ওই ইঞ্জিনের লোকো মাস্টার রাজ গোবিন্দ যাত্রীবাহী ট্রেন নিয়ে ইতিমধ্যে রওনা করেছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জেনেছে। তাঁরা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
রেলওয়ের লালমনিরহাট ডিভিশনাল ম্যাকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার (লোকো) শাহিনুল হক অপু জানান, অভিযুক্ত লোকো মাস্টারকে আপাতত আর কোনো যাত্রীবাহী ট্রেনের দায়িত্ব দেবো না। ঘটনা তদন্তে ইতিমধ্যে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা প্রতিবেদন জমা দিলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//