শেখ জাহাঙ্গীর আলম শাহীন, লালমনিরহাট:
জেলার কালীগঞ্জের সীমান্ত দিয়ে গরু পাচারের সময় বিএসএসের বাঁধামুখে তড়িঘড়ি করতে গিয়ে কাঁটাতারের আঘাতে জামাল হোসেন (৩৫) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
১৭ নভেম্বর মঙ্গলবার রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
সীমান্ত গ্রাম সূত্র জানা গেছে, গত শনিবার (১৬ নভেম্বর) দিবাগত রাতে জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার গোড়ল ইউনিয়নের বলাইয়ের হাট সীমান্তের বুড়িরহাট বিওপি আওতাধীন সীমান্ত পিলার ৯১৩-৯১৪ এর মধ্যবর্তী গঙ্গারগাছ নামক স্থানে একটি গরু পাচারকারীর দল বাঁশের চরকা বা কোঠা ব্যবহার করে কাঁটাতারের ওপার হতে গরু পাচার করছিল। এসময় ভারতীয় বিএসএফ ধাওয়া করে। তড়িঘড়ি বাঁশের কোঠা নামাতে গিয়ে কাঁটাতারের বেড়া ও বাঁশের কোঠার আঘাতে জামাল হোসেন(৩৫) আহত হয়।
পরে তাকে স্বজনরা উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
মৃত জামাল হোসেন গোড়ল ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের গোড়ল এলাকার সবুজ মিয়ার ছেলে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা জানান, শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার গোড়ল ইউনিয়নের বলাইয়ের হাট সীমান্তে বাঁশের চরকা দিয়ে ৪০/৫০ জন গরু পারাপার করছিল। এ সময় বচসা হলে জামাল হোসেনের মাথায় প্রতিপক্ষ আঘাত করে। সেখানে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরে তাকে সহযোগীরা উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। হত্যার ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে সীমান্তে বাঁশের চরকায় আঘাতের গল্প সাজানো হয়েছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় আইনজীবী আলী আহসান জানান, মানুষ রাষ্ট্রের সম্পদ। পুলিশ বাদী হয়ে এঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করতে পারে। সীমান্তে চোরাচালান, মাদক, গরু পাচার ব্যবসা বন্ধ করতে হলে সীমান্ত হত্যার পর পুলিশকে প্রতিটি ঘটনা তদন্ত করে মামলা দায়ের করে বিচারের মুখোমুখি অপরাধীদের আনতে হবে। তবেই সীমান্ত হত্যা শূন্যে আনা সম্ভব। এছাড়াও অপরাধী চক্র সুকৌশলে সীমান্ত নিয়ে গিয়ে হত্যা করে সেটাকে সীমান্ত হত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার ঘটনাও দিনদিন বাড়ছে। সীমান্ত হত্যার ঘটনা গুলি তদন্ত না হওয়ায় প্রকৃত হত্যার রহস্য আড়াতে থেকে যাচ্ছে। বিচার পাচ্ছেনা।
গোড়ল ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান রমজান আলী জানান, চকিদার, স্থানীয় গ্রামবাসী ও তার পরিবারের মাধ্যমে জানতে পেরেছি সীমান্তে মাথায় আঘাত পেয়ে জামাল হোসেন মারা গেছে। রংপুরে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হতে লাশ এনে গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়েছে।
Discussion about this post