শেখ জাহাঙ্গীর আলম শাহীন, লালমনিরহাট:
পাঁচ দিনের ব্যবধানে লালমনিরহাট সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে মুরুলী চন্দ বর্মণ (৪৫) নামে একজন নিহত হয়েছে।
গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছে লিটন মিয়া (৪০) ও মিজানুর রহমান (৩৩) নামে দুই জন। গুলিবিদ্ধ তিন জন কে সতীর্থরা উদ্ধার করে রংপুরে গোপনে চিকিৎসা করাতে নিয়ে আসে।
এদের মধ্যে মুরালী কে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। লাশ নিয়ে ফেরার পথে পুলিশ লাশবাহী গাড়ি ও ক’ জন স্বজনকে থানা হেফাজতে নিয়েছে। পাঁচ দিন পূর্বে লিটন মিয়া (১৯) নামে এক বাংলাদেশী যুবক বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়েছিল।
জানা গেছে, বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশীর নাম মুরুলী চন্দ্র বর্মণ (৪৫)। সে জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর বালাপাড়া গ্রামের সুশীল চন্দ্র বর্মণের ছেলে। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত দুই জন হলেন-একই ইউনিয়নের চন্দ্রপুর গ্রামের মোঃ নুর ইসলামের ছেলে লিটন মিয়া(৪০) ও একই গ্রামের মোঃ আজিমুদ্দিন ওরফে আজিমুলের ছেলে মিজানুর রহমান(৩৩)। সকলের পরিচয় নিশ্চিত করেছে চন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ জাহাঙ্গীর আলম ও কালীগঞ্জ থানার ওসি মোঃ ইমতিয়াজ কবীর।
লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, ৩০ মার্চ শনিবার ভোর রাতে জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নের উত্তর বালাপাড়া চারখু়ঁটি সীমান্তে ক’ জন গরু আনতে ভারতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে। এসম তারা ভারতের পশ্চিম বঙ্গের গোহাটি ফ্রন্টিয়ারের কোচবিহার জেলার গোপালপুর বিএসএফ সেক্টরের গোপালপুর-৭৫ ব্যাটালিয়নের চিত্রাকোট ক্যাম্পের টহল দলের সামনে পড়ে যায়। চোরাকারবারিদের লক্ষ্য করে বিএসএফ সদস্যরা কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে। এতে বিএসএফের গুলিতে উত্তর বালাপাড়া গ্রামের তিন জন গুলিবিদ্ধ হয়। এরা হলেন – সুশীল চন্দ্র বর্মণের ছেলে মুরুলী চন্দ্র বর্মণ(৪৫), একই গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে লিটন মিয়া(৪০) ও একই এলাকার আজিমুদ্দিন ওরফে আজিমুলের ছেলে মিজানুর রহমান(৩৩) শরীরের কয়েক জায়গায় গুলিবিদ্ধ য়। গুলিবিদ্ধ মুরুলী চন্দ্র বর্মণ চিকিৎসাধীন অবস্থায় রংপুরে মৃত্যু হয়।
চন্দ্রপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে। তিনি আরো বলেন, চন্দ্রপুর ইউনিয়নটি ভৌগলিক কারণে দুর্গম ও ভারতীয় সীমান্ত পুরো ইউনিয়নকে ঘিরে রেখেছে। এখানে চোরাকারবারী চক্র খুবই সক্রিয় ও শক্তিশালী।
লালমনিরহাট -১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল মোঃ মোফাজ্জল হোসেন আকন্দ জানান, ‘বিএসএফের গুলিতে নিহত, আহতের ঘটনায় ভারতীয় ৭৫-বিএসএফ ব্যাটালিয়নের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে। পতাকা বৈঠকের আহবান জানিয়ে বিএসএফকে এ ঘটনায় কড়া প্রতিবাদপত্র পাঠিয়েছে বলে জানান।
কালীগঞ্জ থানার ওসি মোঃ ইমতিয়াজ কবীর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘গরু পাচারকারী সদস্যরা বিএসএফের গুলিতে আহত মুরুলীকে সীমান্ত থেকে উদ্ধার করে গোপনে রংপুরে চিকিৎসা করায়। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় মারা যায়। এসআই মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশ মরদেহবাহী গাড়ীটি কাকিনা-মহিপুর সড়কের সিরাজুল মার্কেট এলাকা হতে পুলিশের হেফাজতে নিয়ে থানা আনে। পরে সুরতহাল প্রতিবেদন করে ফরেন্সিক ময়না তদন্তে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ওই গাড়ীতে থাকা কয়েকজন ব্যক্তি কালীগঞ্জ থানা হেফাজতে রয়েছে।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//