চট্টগ্রাম কর্ণফুলী উপজেলার চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের পুরাতন ব্রিজঘাটে যেকোন মুহুর্তেই উচ্ছেদ অভিযান চালাবেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কতৃপক্ষ (সিডিএ)। দীর্ঘ ১৫ বছর পর মূলত কাঁচাবাজারটি ইজারা দেওয়ায় কর্ণফুলী উপজেলা প্রশাসন ও সিডিএ’র মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে চিঠি চালাচালি হলেও সমাধানের কোন সুরানা হয়নি। ওদিকে, উচ্ছেদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিডিএ নির্মাণ বিভাগ-১ এর প্রকৌশলী কাজী কাদের নেওয়াজ।
তিনি জানান, ‘বাজারের পাশের জমি খেলার মাঠ ও কয়লার মাঠের জমি উচ্ছেদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। যা রাস্তার বাম পাশে অবস্থিত। বাকি জমি গুলোর বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে খাজনা না দিলে কোন সংস্থার অধিগ্রহণগৃত জমি খাস হয় না। যদি এ রকম হতো, তাহলে রেল লাইনের দুপাশের সব জমি খাস হয়ে যেত।’
জানা যায়, পুরাতন ব্রিজঘাট কাঁচা বাজার ও পাশের সিডিএ খেলার মাঠ ও কয়লার মাঠের জায়গায়টি চট্টগ্রাম উন্নয়ন কতৃপক্ষ (চউক) এর দখলীয় ও মালিকানাধীন জমি বলে দাবি করে প্রতিষ্ঠানটি একাধিকবার চিঠি দিলেও উপজেলা প্রশাসন ইজারা দরপত্র বাতিল করেননি।সিডিএ বার বার জানিয়েছেন, অধিগ্রহণ করা জমিটি রাস্তা নির্মাণের অবশিষ্ট জমি। ভবিষ্যতে রাস্তা সম্প্রসারণ করার জন্য সংরক্ষণ করা হয়েছে। এলএ মামলা ও বিএস খতিয়ান মূলে জমিটি সিডিএ’র। কিন্তু সম্প্রতি জেলা প্রশাসন জানিয়েছেন, বাজারের জমিটি খাস করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত একটি চিঠি সিডিএ ও পেয়েছেন। কিন্তু তাঁরা তাদের অবস্থানে অনঢ়।
অধিগ্রহণকৃত জমির অপব্যবহার বিষয়ে ভূমি প্রশাসন বলছেন, ভূমি মন্ত্রনালয় কতৃক সংগৃহীত অধিগৃহীত জমির প্রায় এক চতুর্থাংশ অব্যবহৃত অথবা অবৈধ দখল অবস্থায় থাকলে, প্রচলিত আইনে এসব জমি পূনরুদ্ধার করা সম্ভব। উদ্ধারকৃত জমি সরকার খাস জমি হিসেবে সহজেই পূনগ্রহণ (Resume) করতে পারে। খাস জমির তালিকায় পূনঃগৃহীত জমির পরিবর্তন করে সংশোধন করতে পারে।
এতে কর্ণফুলী উপজেলা প্রশাসনের দাবি, নিয়ম মেনে কর্ণফুলীর চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের পুরাতন ব্রিজঘাট সন্ধ্যা বাজারটি ইজারা দেওয়া হয়েছে। এমনকি টোল আদায়ে (রাজস্ব) নির্ধারিত তালিকা এডিসি রাজস্ব থেকে অনুমোদন নিয়ে ব্যবসায়িদের সুবিধার্থে টাঙানো হবে। কিন্তু এখনো টোল মূল্য তালিকা না টাঙিয়ে ইজারা আদায়ের অভিযোগ করেছেন বাজারের ব্যবসায়িরা।
এ ব্যাপারে ইজারাদাতা সাজ্জাদ হোসেন সাজিদ বলেন, ‘দরপত্রে অংশ গ্রহণ করে নিয়ম মেনে ব্রিজঘাট বাজারটি ইজারা পেয়েছি। সকল নিয়ম মেনেই খাস কালেকশন করা হচ্ছে। পুরাতন ব্রিজঘাট ক্ষুদ্র ব্যবসায়ি সমিতির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ইজারাদাতা বাজারে কোন টোল রেট টাঙালেন না, সীমানা নির্ধারণ করলেন না।’
উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) পিযুষ কুমার চৌধুরী বলেন, ‘উচ্ছেদের বিষয়ে কোন তথ্য নেই। কোন চিঠি তিনি পাননি। এ বিষয়ে নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মামুনুর রশীদ বলেন, ‘বিধি সম্মত উপায়ে বাজারটি ইজারা দেওয়া হয়েছে। কোন অনিয়মে তা করা হয়নি।’
খালিদ সাইফুল, দৈনিক দেশতথ্য, ২২ মে ২০২৩
প্রিন্ট করুন
Discussion about this post