দেশতথ্য রিপোর্ট:
শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ব বিদ্যালয়ের প্রায় সবাই ছাত্রলীগের এক নেতার উচ্ছৃঙ্খল আচরণে অতিষ্ঠ।
মাদক কারবার, চাঁদাবাজি, শিক্ষক লাঞ্ছনা, সিনিয়র শিক্ষার্থীদের সাথে অসদাচরণ, বিভিন্ন হসপিটালে অবৈধ সিট বাণিজ্য সহ নানা অসামাজিক কার্যকলাপে তিনি জড়িত।
ওই নেতা ছাত্রলীগের শেকৃবি শাখার সদ্য বিলুপ্ত কমিটিতে গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন।
স্নাতকোত্তরে অধ্যায়নরত এক শিক্ষার্থী জানায়, সে প্রায়শই দেরিতে আসেন। কোনো কোনো সময়ে সে ক্লাসের শেষ পর্যায়ে আসে। আবার কখনো কখনো শিক্ষকের উপস্থিতিতেই হুটহাট শিক্ষার্থীদের ক্লাস থেকে বের করে নিয়ে যায় ।
সম্প্রতি এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শফিউল মজুমদারের ক্লাসে দেরিতে এসে বিনা অনুমতিতে ক্লাসে যায়। ওই শিক্ষক এতে আপত্তি করায় সে শিক্ষকের সাথে ঔদ্ধত্য প্রদর্শন করে বলেন, একজন শিক্ষার্থী যেকোন সময় ক্লাসে আসতে পারে আবার বের হয়েও যেতে পারে। এর জন্য অনুমতি নিতে হবে কেন?
এভাবে তর্কে জড়ালে এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে তিনি ক্লাস ত্যাগ করতে বাধ্য হন ।
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শফিউল মজুমদার এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করলেও কোনো প্রকার মন্তব্য করতে রাজি হননি।
ওই নেতার আরেক সহপাঠী বলেন, সে মাঝেমাঝেই ক্লাস থেকে বের হয়ে যায়। অন্যান্য সহপাঠীদের বলে, আমি ছাত্রলীগের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। আমার কি এতো ক্লাস করার সময় আছে? তোরা প্রক্সি দিস।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, সে মিরপুরের সোনার বাংলা নামের এক হোটেলে মাঝেমাঝে বিভিন্ন নারীকে নিয়ে যান। সেখানে শামসু নামের একজনের মাধ্যমে যোগাযোগ করেন। সম্প্রতি টাকা পরিশোধ না করায় শামসুর সাথে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে।
ছাত্রলীগের আরেক নেতা বলেন, গত বছরের ১ নভেম্বর শেকৃবি ছাত্রলীগের সম্মেলনে তার কর্মী না থাকায় বাইরে থেকে টোকাই শ্রেণীর কিছু লোকজন ভাড়া করে এনে ক্যাম্পাসে শোডাউন দেন।
সম্প্রতি ক্যাম্পাসে বেপরোয়া গতিতে চলমান এক মোটরসাইকেল আটক করে নিরাপত্তা বিভাগ। পরে জানা যায়, চালক সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের সামনের দালাল চক্র ও নানানবিধ অপরাধের সাথে জড়িত হাসিনা নামের একজনের ছেলে।
মোটরসাইকেল আটকের খবর পেলে ওই নারী নিরাপত্তা বিভাগের প্রধানের উপর চড়াও হন। পরে অনুসন্ধানে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বহিরাগতরা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজনের সাথে অসদাচরণ করছে অথচ ওই ছাত্র নেতা ও তার সাথী বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ না নিয়ে একজন অপরাধীর পক্ষ নিয়ে ওই ঘটনার আগে এবং পরে বেশ কয়েকবার ওই নারীকে উস্কানি দিয়েছে।
বিতর্কিত এই ছাত্রলীগের নেতার বিরুদ্ধে উচ্ছৃঙ্খলতার পাশাপাশি হলের সিট ভাড়া, ভর্তি জালিয়াতি, বিভিন্ন চিহ্নিত অপরাধীদের আশ্রয় প্রদান ও নারী ঘটিত বিভিন্ন অসামাজিক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য //মার্চ ০৩,২০২৪//