মনিরুজ্জামান জুলেট, শ্যামনগর সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী নানাবিধ স্বাস্থ্য সমস্যা ভুগছেন।প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবায় সরকারি ও বেসরকারি সকল চিকিৎসা সেবা কেন্দ্রগুলোকে আরও সক্রিয় হয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান স্থানীয় বিশিষ্টজনরা।
বৃহস্পতিবার(৪ জুলাই) শ্যামনগরে বেসরকারি হাসপাতাল ফ্রেন্ডশিপ আয়োজিত ‘জলবায়ু পরিবর্তন ও স্বাস্থ্য সেবা’ বিষয়ক গোলটেবিল আলোচনা বক্তারা এ আহবান জানান।
বক্তরা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন শব্দটি খেটে খাওয়া অনেক মানুষের কাছে খুব একটা প্রচলিত না হলেও এর প্রভাব তাদের জীবনকে বিপন্ন করছে। আগের তুলনায় ঘনঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগ, পানির লবনাক্ততা বেড়ে যাওয়া এবং নানবিধ স্বাস্থ্য সমস্যা এখন উপকূলীয় অঞ্চলের বাসিন্দাদের জীবন সঙ্গী। সুন্দরবনের কোল ঘেষে গড়ে ওঠে সাতক্ষীরা জেলার একটি প্রান্তিক উপজেলা শ্যামনগর। উচ্চ রক্তচাপ, নারীদের মূত্রনালীর প্রদাহ, জরায়ুমুখ ক্যান্সার সহ নানাবিধ স্বাস্থ্য সমস্যায় বছরের পর বছরে ধরে ভুগছেন এ অঞ্চলের মানুষ।
ফ্রেন্ডশিপ-এর জনসংযোগ ব্যবস্থাপক জিলফুল মুরাদ শানুর সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, শ্যামনগর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাঈদ উজ জামান সাঈদ, শ্যামনগর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা(ভারপ্রাপ্ত) ডা. মইনুল ইসলাম, শ্যামনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম, ফ্রেন্ডশিপ এর হেড অব কমিউিনকেশন্স তানজিনা শারমিন, স্বাস্থ্য বিভাগের উপ-পরিচালক ডা. এটিএম সানাউল বাশার, ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল শ্যামনগরের পরিচালক লে. ক. (অব) ডা. মোজাহেদুল ইসলাম সহ বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, উন্নয়ন সংস্থা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সংবাদকর্মীবৃন্দ।
শ্যামনগর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাঈদ উজ জামান সাঈদ বলেন, এ অঞ্চলের মানুষ নানা ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন জনিত সকল ধরনের সমস্যা সমাধানের জন্য ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালসহ শ্যামনগরের সকল চিকিৎসা সেব কেন্দ্রকে আরও বেশি অগ্রণী ভূমিকা পালন করার আহবান জানান তিনি।
ফ্রেন্ডশিপ এর হেড অব কমিউিনকেশন্স তানজিনা শারমিন বলেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য সেবার পরিধি ও মান বাড়ানোর পাশাপাশি সচেতনতাও বাড়াতে হবে। ফ্রেন্ডশিপ স্বাস্থ্যসেবার বাইরেও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে সচেতনতা তৈরির কাজ করে যায়।
ফ্রেন্ডশিপ স্বাস্থ্য বিভাগের উপ-পরিচালক ডা. এটিএম সানাউল বাশার বলেন, ফ্রেন্ডশিপ-এ আমরা তিন স্তরের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে থাকি। এই সেবার মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সকল স্তরের মানুষকে সেবা প্রদান করা সম্ভব। ফ্রেন্ডশিপ সেই চেষ্টা করে যাচ্ছে।
বক্তারা বলেন, দেশে প্রতিবছর যে কয়েক লাখ নারী জরায়ু ক্যান্সারের ঝুঁকিতে থাকে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ উপকূলীয় অঞ্চলের নারী। নারীদের জরায়ুসংক্রান্ত অসুখের তীব্রতা লবণাক্ততাপ্রবণ গ্রামগুলোতে বেশি। উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরার বিভিন্ন উপজেলার প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে জরায়ুসংক্রান্ত রোগে ভুগছেন এমন অনেক নারী রয়েছেন।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//

Discussion about this post