মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে প্রচণ্ড দাপদাহে বিপর্যস্ত জনজীবন। বৃষ্টি না হওয়ায় নষ্ট হচ্ছে ফসল। নেমে গেছে পানির স্তর। দেখা দিয়েছে পানির তীব্র সংকট। রোদ আর গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের জীবনে ভোগান্তি।
তাই প্রশান্তির বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায় করেছেন মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার কামারগাঁও এর গ্রামবাসী।
গতকাল বুধবার (১০ মে) কামারগাঁও ঈদগাহ সংলগ্ন খোলা আকাশের নিচে ফাঁকা মাঠে সকাল ৭টায় সালাতুল ইসতেসকা আদায় করেছেন এলাকাবাসী । বিশেষ এ নামাজে কামারগাঁও গ্রামের শতাধিক মুসল্লী অংশগ্রহণ করেন এই নামাজে।
নামাজের ইমামতি করেন কামারগাঁও ঈদগাঁ জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মোঃ আব্দুর রাজ্জাক। নামাজ শেষে রহমতের বৃষ্টি কামনায় এবং অনাবৃষ্টি থেকে মুক্তির জন্য বিশেষ মোনাজাত করা হয়। নামাজে অংশ নেয়া মুসল্লিরা জানান, প্রচণ্ড দাবদাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে শ্রীমঙ্গলের সাধারণ মানুষের জীনজীবন। কাঠফাটা রোদে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে প্রাণিকুল। বৃষ্টি না হওয়ার কারনে ফসল নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। শুধু তাই নয়, আশঙ্কাজনক ভাবে নেমে গেছে পানির স্তর, ফলে দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির তীব্র সংকট। এ কারণে বৃষ্টি কামনা করে আল্লাহর দরবারে বিশেষ দোয়া করেছেন মুসল্লিরা।
নামাজ শেষে উপজেলার কমারগাঁও গ্রামের কৃষক শামছু মিয়া বলেন, `চাষবাস করে আমাদের পেট চলে। কিন্তু এবার বৃষ্টি না হওয়ায় ক্ষেত শুকিয়ে গেছে। বীজ করেছি, সেগুলো রোদের তাপে পুড়ে গেছে। এখন চাষাবাদ করতে পারছি না। তাই আল্লাহর অশেষ রহমতের জন্য এ নামাজ আদায় করা হয়।
কুঞ্জবন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ একরামুল কবীর বলেন, প্রচন্ড খরায় ছাঁই হয়ে যাচ্ছে মাঠ, ফসলের ক্ষতিসাধন হচ্ছে ব্যাপক। প্রচন্ড গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ। দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় মানুষ পানির জন্য হাহাকার করছে। গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। ফ্যানের বাতাস বিহীন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। গত কয়েকদিন ধরে টানা তাপমাত্রা ক্রমাগত বাড়ছেই। মহান আল্লাহর দরবারে আমরা প্রশান্তির বৃষ্টি চেয়েছি। মহান আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুক। এ বিষয়ে কামারগাঁও ঈদগাহ জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় মানুষ পানির জন্য খুব বিপদে আছে। বৃষ্টি বা পানির জন্য আল্লাহ সালাতের মাধ্যমে চাইতে বলেছেন। আর চাওয়াকে আরবিতে সালাতুল ইস্তেসকা বলা হয় অর্থাৎ পানির জন্য দোয়া করা। এর আগে গত ৮ মে শ্রীমঙ্গল উপজেলার সিরাজনগর এলাকাবাসীর উদ্যোগে হাইল হাওরের পাশে বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়া হয়েছে।
শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক মুজিবুর রহমান বলেন, মঙ্গলবার (৯ই মে) সন্ধা ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৮. ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আদ্রতার পরিমাণ ছিল ৬২ শতাংশ। গত (৮ মে) শ্রীমঙ্গলে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল আবহাওয়া অফিস শ্রীমঙ্গল তথ্যমতে। গত ৭ মে ছিল ৩৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে চলতি বছরের গত ১৪ এপ্রিল ছিল এবছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮.৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//মে ১০,২০২৩//
![প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন](http://dailydeshtottoh.com/wp-content/plugins/wp-print/images/printer_famfamfam.gif)
Discussion about this post