বর্তমান সংসদ সদস্য এডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর বিরুদ্ধে বরগুনা এক আসনের প্রয়াত সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার হোসেনকে নিয়ে মিথ্যাচার করার অভিযোগ উঠেছে ।
গত (২৭ আগস্ট) রবিবার রাতে এমন অভিযোগে এনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে মোসাঃ ফারজানা সুমি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত(২৬ আগস্ট) শনিবার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে বরগুনার তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে আয়োজিত শোক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বর্তমান সংসদ সদস্য এডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বলেন, ২০০১ সালে ভোট কেটে এমপি হয়েছেন সদ্য প্রয়াত সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার হোসেন। দেলোয়ার হোসেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিল না, ছিলেন বিএনপির সমর্থিত প্রার্থী। তখন থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত বরগুনায় কোন উন্নয়ন হয়নি। একটি ইট ফেলতে পারেনি বরগুনার কোন রাস্তায়। তখন থেকেই বরগুনা জেলা উন্নয়নে পিছিয়ে আছে।
এমন বক্তব্যের বিরুদ্ধে রোববার (২৭ আগস্ট) রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও বার্তা দেন দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে ফারজানা সুমি। ওই ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, বাবা মারা গেছেন মাত্র সাত মাস হয়েছে এরই মধ্যে আমার বাবাকে নিয়েই এমন মিথ্যা মন্তব্য করায় আমার এবং আমার বিধবা মায়ের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে। একই সাথে রক্তক্ষরণ হয়েছে আমার বাবার ভক্তবৃন্দের। আমি তার এমন মিথ্যা বক্তব্যের প্রতিবাদ করছি। এবং বাবার অনুসারীদের শান্ত থাকার জন্য অনুরোধ করছি।
ওই ভিডিও বক্তব্যে সুমি আরো বলেন, বাবা ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান চলাকালে দশম শ্রেণীর ছাত্র থাকাকালীন ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত হন। তারপরে তিনি দুবার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। সভাপতি থাকাকালীন মাত্র ২৮ বছর বয়সে আয়লা পতাকাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়। পরবর্তীতে ছাত্রলীগের রাজনীতি ছেড়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতি শুরু করেন। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সিনিয়র সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০০১ সাল তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ নির্বাচন করেন। ওই নির্বাচনে বর্তমান সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু নৌকা প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করেন। এবং ৩৪ হাজার ভোটের ব্যবধানে তাকে হারিয়ে আমার বাবা দেলোয়ার হোসেন নির্বাচিত হয়। পরবর্তীতে ২০০২ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাবাকে আওয়ামী লীগে ফিরিয়ে নেন এবং ২০১৬ সালে জেলা পরিষদ নির্বাচনে তাকে নৌকার সমর্থন দেন। নির্বাচনে তিনি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
এ বিষয়ে সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিন ফোন ধরেননি।
তবে এ বিষেয় বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম সরোয়ার টুকু বলেন, ২০০১ সালে দেলোয়ার হোসেন দলীয় সিদ্ধান্ত না মেনে সংসদ নির্বাচন করেছেন এটা ঠিক তবে তিনি বিএনপির সমর্থিত বা মনোনীত এটা সঠিক নয়। তিনি বিদ্রোহ নির্বাচন করেছেন পরবর্তীতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে ক্ষমা করে জেলা পরিষদের দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন। একজন মৃত ব্যক্তিকে নিয়ে অবান্তর ও অপ্রাসঙ্গিক বক্তব্য দেয়া মাননীয় সংসদ সদস্যের একদমই ঠিক হয়নি।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ/
![প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন](http://dailydeshtottoh.com/wp-content/plugins/wp-print/images/printer_famfamfam.gif)
Discussion about this post