শেখ জাহাঙ্গীর আলম শাহীন, লালমনিরহাট থেকে:
জেলার কালীগঞ্জ উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মোঃ আব্দুর রাজ্জাক চাকরির পাঁচ বছরে কোটি টাকার সম্পত্তের মালিক বনে গেছে।
লালমনিরহাট শহরের অদুরে সাপ্টিবাড়ি বাজারে কিনেছে জমি ও গড়ে তুলেছে মার্কেট। বন্ধুর নামে গড়ে তুলেছে ব্যাটারি চালিত অটো ব্যবসা।
কালীগঞ্জ উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মোঃ আব্দুর রাজ্জাক ৩৭ তম বিসিএস কর্মকর্তা উপজেলা প্রশাসনের প্রোফাইল হতে জানা যায়। তিনি ২০২১ সালের ৩ মার্চ কালীগঞ্জে যোগদান করেন। সমাজসেবা মন্ত্রনালয়ের সাবেক মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহম্মেদ ( বর্তমান এমপি) এর নির্বাচনী এলাকা এটি। এই সমাজসেবা কর্মকর্তা যোগদানের পর হতে গড়ে তুলেন একটি সিন্ডিকেট। সংক্রামক ও ক্যান্সারের মত জটিল রোগীর চিকিৎসা সহায়তার ভুয়া ফাইল করে আর্থিক অনিয়ম করে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। তিনি চাকরিতে যোগদানের পর পরে তার নিজ সরকারি দপ্তরে কার্যদিবসে দুই অফিস পিওনের জন্মদিন কেক কেটে পালন করেন। এই জন্মদিন উপলক্ষ্যে সাজানো হয় অফিস কক্ষ। সেটা আবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোষ্ট করে আলোচনায় আসেন।
সেই জন্মদিনের ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিরুপ সমালোচনার পর পত্রপত্রিকায় রিপোর্ট হয়। এবার সেই কর্মকর্তা আলোচনায় এসেছেন সাপ্টিবাড়িতে জমি কিনে মার্কেট করে।
জনমনে প্রশ্নের সৃস্টি হয়েছে একজন বিসিএস (উপজেলা সমাজসেবা) কর্মকর্তার বেতন কত। পাঁচ বছরে কি কোটি টাকার সম্পদ করা যায়। এদিকে অভিযোগ রয়েছে তার নামে বেনামে অবৈধ সম্পদ রয়েছে।
অনুসন্ধান করলে অনেক অবৈধ সম্পদ বেড়িয়ে আসবে। সাপ্টিবাড়িতে তার জমি কিনে মার্কেট ও মাকের্টের ব্যাটারি চালিত অটো রিক্সার শোরুম দেয়ায় বিষয়টি জনসম্মুখে আসে।
এই ব্যাটারি চালিত শোরুমের ব্যবসাটি সমাজসেবা কর্মকর্তা তার ছোটবেলার বাল্যবন্ধুর নামে করেছে। তিনি মেসেজ দিয়ে নিজেই স্বীকার করেছেন তার দুইটি বাড়ি রয়েছে, রয়েছে খামার, তামাক মজুদের ব্যবসা, রয়েছে বিপুল পরিমান চাষের জমি।
এ ব্যাপারে সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ আব্দুর রাজ্জাকের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি সবকিছু অস্বীকার করে ম্যাসেঞ্জারে এই প্রতিবেদক কে মেসেজ পাঠায়।
মেসেজটি হুবহু তুলে ধরা হলো- আমি আপনাকে হুমকি দিয়েছি,এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। আর হ্যা,আপনি আমার পিছনে লেগেছেন আপনি আগে যে পোস্ট করেছেন তা পুরোপুরি ভূল, যে তথ্য উপস্থাপন করেছেন তা আপনি মানুষের কাছ থেকে শুনে লিখেছেন,আমি কোটিপতি তো না,লাখপতি ও না,আমার যতটুকু আছে আমার কষ্ট থেকে সঞ্চয় করে জমা করা,আমি শাশুড়ির ২৬ শতাংশ জমি বিক্রি করেছি,ব্যাংক লোন করেছি,অনেকের কাছে ধার করজা করেছি,বন্ধুর কাছ থেকে নিয়েছি,আর হ্যা আপনি লিখেছেন আমার টাকা দিয়ে বন্ধুকে শোরুম করে দিয়েছি,তার ব্যবসা আজ থেকে ১০ বছর আগের,তার ভাই নিজে একজন কোটিপতি আর আপনি বলেন আমার টাকা দিয়ে সে কোটিপতি হইছে!! আপনার পোস্ট পরে আশ্চর্য হইছি,আমি আমার স্টাটাস দেই,মিলায়া নিবেন প্লিজ. ১.২০০০৯ সাল থেকে ইনকাম করি,ঢাকার ইলেক্ট্রো গ্রুপে ৫ বছর চাকুরী করেছি, সোনালী ব্যাংক এ চাকুরী করেছি, সিজনে তামাকে ব্যবসা করি, ২ বাড়ি আমার কতগুলো আবাদী জমি খোজ নিয়েন, বছরে কত টাকা তামাকে কত টাকা পাই, বাসায় গরুর খামার করেছি ছোট করে, ২ পরিবারের যা কিছু আছে সব আমার, আমি ইউনিসেফ এর অনলাইন কেস ম্যানেজমেন্ট এর মাষ্টারট্রেইনার, ইলেকশন এর মাষ্টার ট্রেইনার, গ্রাম আদালতের মাষ্টার ট্রেইনার, ভাই আমার সম্পর্কে যেগুলো বললাম মিলায়া নিবেন আর হ্যা,বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ যেটি সত্যি সেটা লিখবেন,আর হ্যা মানুষ এর ইজ্জত নিয়ে টানাটানি না করলে খুশি হব। ওভ ুড়ঁ ৎবঢ়ষু, জধুুধশ জধু রিষষ ধষংড় নব ধনষব.
এদিকে প্রশ্ন উঠেছে সরকারি দলের স্থানীয় এক নেতা মিজানুর রহমানের বিসিএস প্রশ্নপত্র ও সমাজসেবার বিভিন্ন পদের প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত এমন তথ্য গোয়েন্দারা পেয়েছে। যার কারনে মিজানকে আদিতমারী উপজেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি পদ হতে অবহতি দেয়া হয়েছে। বিগত দিনে মিজান নামটি জেলায় বহুল আলোচিত। সাবেক এপিএসের মিজানের স্ত্রীর প্রাইভেট কার হতে মাদক উদ্ধার হলে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। মিজানের প্রশ্নপত্র ফাঁসের মাধ্যমে সমাজসেবা দপ্তরে বেশকিছু কর্মকর্তার কর্মচারীর চাকুরি হয়েছে মর্মে জেলায় ব্যাপক চাউর রয়েছে। দল হতে বহিস্কার হওয়ার পর হতে সামাজিক যেগাযোগ মাধ্যমে সেটা ব্যাপক প্রচার হচ্ছে। বহু আগে হতে প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের একটি সিন্ডিকেট জেলার আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচায় সক্রিয় ছিল। বিজি প্রেসে কর্মরত স্বামী – স্ত্রী এই চক্রের ছিল মূলহোতা। বিজি প্রেসের সেই কর্মচারি মোস্তফা রংপুরে র্যাবের হাতে প্রায় একযুগের বেশী সময় আগের আটক হয়।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//

Discussion about this post