ওপেলিয়া কনি, কুষ্টিয়াঃ কুষ্টিয়া আদালত চত্বরে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলার ঘটনার ছয় বছর পর শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে ৪৭জনের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া মডেল থানায় হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
এ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাবেক আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী, কুষ্টিয়ার তৎকালীন পুলিশ সুপার মেহেদী হাসানসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীসহ মোট ৪৭জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়। এজাহার নামীয় ৪৭ জন ছাড়াও অজ্ঞাত প্রায় আরও ২০ জনকে আসামী করা হয় উক্ত মামলায়।
সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টার দিকে কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময় সভা করেন। এরপর বেলা সাড়ে ১২ টার সময় কুষ্টিয়া মডেল থানায় উপস্থিত হয়ে হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করেন। তারপর বেলা ২ টার সময় কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবে আসেন এবং সেখানে প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দসহ সাংবাদিকদের সাথে মত বিনিময় করেন। এসময় তাঁকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।
এ সময় সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, ” ২০১৮ সালের ২২ জুলাই আমার উপর যে হামলার ঘটনা ঘটেছিল ওই ঘটনায় শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছি। আশা করবো ইন্টারপোলের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আইনের আওতায় আনবে সরকার।”
তিনি আরোও জানান, শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট সরকারের মতো আরেকটি ফ্যাসিবাদ সরকার যেন ঘটিত না হতে পারেএবং বাংলাদেশের মানুষের অধিকার, বাকস্বাধীনতা ও আদালতের মর্যাদা পাওয়ার কারণে এ মামলা দায়ের করেন তিনি। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি ।
পরে বেলা তিনটার সময় কুষ্টিয়া সার্কিট হাউজে কুষ্টিয়ার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ও কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের কর্মকর্তাদের সাথে মত বিনিময় করেন। তারপর বিকাল ৪ টার সময় বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থী শহীদ আবরার ফাহাদের বাড়িতে তার পরিবারের সাথে দেখা করতে যান।
উল্লেখ্য, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা,তার মেয়ে পুতুল ওয়াজেদ ও ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিক সম্পর্কে মানহানিকর বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইয়াসির আরাফাত তুষার বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
২০১৮ সালের ২২ জুলাই উক্ত মামলায় মাহমুদুর রহমানের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত। জামিন পাওয়ার পর দুপুর ১টা থেকে বিক্ষুব্ধ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আদালত চত্বরে মাহমুদুর রহমানকে অবরুদ্ধ করে রাখেন এবং বিক্ষোভ মিছিল করেন। আদালত প্রাঙ্গণ ছাড়ার সময় লাঠি ও ইটের আঘাতে গুরুতর আহত হন মাহমুদুর রহমান। তাকে বহনকারী গাড়ির গ্লাসও ভেঙে দেওয়া হয়। পরে বিকেল ৫টার দিকে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে মাহমুদুর রহমান ও তার সহযোগীরা ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন।
ওপেলিয়া কনি//দৈনিক দেশতথ্য//১০ অক্টোবর ২০২৪//
![প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন](http://dailydeshtottoh.com/wp-content/plugins/wp-print/images/printer_famfamfam.gif)
Discussion about this post