Print Date & Time : 25 August 2025 Monday 4:57 am

সিলেটের ৭ দাবিতে চা-শ্রমিকদের কর্মবিরতি

সিলেট অফিস: সিলেটের তারাপুর চা বাগানে গত শনিবার (১৩ জানুয়ারি) থেকে শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

বকেয়া মজুরি প্রদানসহ ৭ দাবিতে এ কর্মবিরতি পালন করছেন শ্রমিকরা।

এর পাশাপাশি মঙ্গলবার তারা বিক্ষোভ মিছিল ও জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।

তবে বাগান কর্তৃপক্ষ বলছেন- বিষয়টি সমাধানের লক্ষ্যে সোমবার বৈঠকে বসা হয়। এ বৈঠকে উপস্থিত হননি তারাপুর বাগানের চা শ্রমিক আন্দোলন ও পঞ্চায়েত নেতারা। ফলে আশঙ্কা করা হচ্ছে- সহসাই কাটবে না এ অচলাবস্থা। চা বাগান শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে শুকনো মৌসুমের কলম বন্ধ থাকায় উৎপাদন কমে যাওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, সিলেটের তারাপুর চা বাগানের শ্রমিকদের দুই সপ্তাহ ধরে মজুরি বকেয়া পড়েছে। এ অবস্থায় কাজ বন্ধ রেখেছেন শ্রমিকেরা। দুই সপ্তাহের মজুরিসহ প্রধানমন্ত্রীঘোষিত বকেয়া এরিয়ার বিলের তৃতীয় দফার টাকাসহ সাত দফা দাবিতে শ্রমিকেরা শনিবার থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন।

শ্রমিকদের সাত দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- দুই সপ্তাহের মজুরি প্রদান, এরিয়ার বিলের তৃতীয় দফার টাকা প্রদান, অবসরের টাকা প্রদান, প্রতি মাসে প্রভিডেন্ট ফান্ডের (ভবিষ্য তহবিল) টাকা জমা দেওয়া, ঘরবাড়ি মেরামত করে দেওয়া, পানির সমস্যা সমাধান ও বাগানে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা।

বাগানের শ্রমিকেরা জানান, দুই সপ্তাহ বেতন বন্ধ থাকায় তারা অসহায় হয়ে পড়েছেন। অনেকের বাড়িতে খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। বেতন না পাওয়ায় পৌষসংক্রান্তিও পালন করতে পারেননি তারা।
তারাপুর চা বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুনীল মোদীর মেয়ে সোমা মোদী বলেন- বার বার আমাদের মজুরি বন্ধ করে বাগান মালিকরা। তাই এবার আমরা কঠোর আন্দোলনের পথে যাচ্ছি। আজ (মঙ্গলবার) আমরা জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছি। পাশাপাশি বিক্ষোভ মিছিলও করা হয়েছে। আগামীকাল (বুধবার) নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
সোমবারের বৈঠকে তারা কেন যাননি- এ বিষয়ে সোমা মোদী কিছু বলতে পারেননি।

চা শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট ভ্যালির সভাপতি রাজু গোয়ালা বলেন- সমন্বয় করে সোমবার সন্ধ্যায় বাগানের মালিকপক্ষ ও আন্দোলনকারীদের নিয়ে বৈঠক করতে চেয়েছিলাম। মালিকপক্ষ আসলেও আন্দোলনকারীরা আসেননি। এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, ডেপুটি ডাইরেক্টরও (লেবার)। কিন্তু আমরা বৈঠক বসেও ফোনে বার বার যোগাযোগ করেছি, কিন্তু তারা আসেনি। ফলে এখন পর্যন্ত কোনো সমাধান হয়নি। আবারও আমরা তাদের নিয়ে বসার চেষ্টা করবো।

তিনি বলেন, সমস্যা হলে এর সমাধানও আছে। কিন্তু বৈঠকে না বসলে তো আর সমাধান আসবে না।

তারাপুর চা বাগানের ব্যবস্থাপক রিংকু চক্রবর্তী বলেন, নিশ্চয় কেউ তাদের উস্কানি দিচ্ছে।  তা না হলে সমাধানের জন্য তাদের ডাকলেও তারা আসবে না কেন। আর ডেপুটি ডাইরেক্টর (লেবার)-এর উপস্থিতিতে তারা না এসে অবজ্ঞা করা চা শ্রমিক আইনে অপরাধ। মালিকপক্ষ তো সমাধানের জন্য এগিয়ে এসেছেন, তাহলে আন্দোলনকারীরা বৈঠকে আসবেন না কেন? এর দ্বারা স্পষ্ট- তাদের কেউ উস্কানি দিচ্ছে। যাতে বাগানের ক্ষতি হয়, সর্বোপরি সিলেটের অর্থনীতির ক্ষতি হয়।

দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//