সিলেট অফিস: সিলেটের আদালত পাড়ায় নারী পুলিশ ও মহিলা আইনজীবীর মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশ ও আইনজীবীরা মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২ মে) দুপুরে আদালত পাড়ার শাহপরান (র.) জিআরওতে এ ঘটনার সূত্রপাত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আদালত পাড়ার শাহপরান (র.) জিআরও’র দায়িত্বে থাকা এসআই শামীমা বেগম ও তার পাশে বসেছিলেন কনস্টেবল বিউটি পুরকায়স্থ। তখন অ্যাডভোকেট কাজি সেবা বেগম একটি মামলার নথি দেখতে চাইলে তাকে দেখতে দেওয়া হয়নি। এ কারণে অতর্কিতভাবে কনস্টেবল বিউটি পুরকায়স্থকে চড়থাপ্পড় মারেন বলে অভিযোগ ওঠে। এরপর ওই মহিলা আইনজীবী সেখান থেকে বেরিয়ে জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবনের সামনে পৌছালে পেছন থেকে বিউটিসহ দুই নারী পুলিশ সদস্য তাকে ঝাপটে ধরেন। এতে অনেকটা বিবস্ত্র করে ফেলেন এবং তাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এ নিয়ে উত্তজিত হয়ে পড়েন আইনজীবীরা। তারা আদালত পাড়ায় বিক্ষোভ মিছিল করে উপ কমিশনার (প্রসিকিউশন) কার্যালয়ের বারান্দায় গেলে আগে থেকে উপস্থিত থাকা পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে মারামারির ঘটনা ঘটে। তখন পরিস্থিতি আরো অশান্ত হয়ে ওঠে।
খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসএমপি উপ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ আদালত পাড়ায় মোতায়েন করা হয়।
এ বিষয়ে উপ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ বলেন, মহিলা আইনজীবী কাজি সেবা বেগম শাহপরান থানা জিআরও কার্যালয়ে গিয়ে এক নারী কনস্টেবলের উপর অতর্কিত হামলা চালান। এ ঘটনার জেরর আইনজীবীরা মিছিল সহকারে এসে হামলা করেন। এতে দুই পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার অভিযোগ করেন তিনি। তবে কি কারণে ঘটনাটি ঘটেছে, তা তদন্তধীন রয়েছে।
এ ঘটনার পর বিকাল ৩ টা পর্যন্ত আইনজীবীরা রুদ্ধদ্বার বৈঠকে রয়েছেন।
আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট অশোক পুরকায়স্থ এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, উদ্ভুত পরিস্থিতিতে আমরা বৈঠকে রয়েছি। সিদ্ধান্তের বিষয়টি পরে জানানো হবে।
নিউজ ১১
সিলেট অঞ্চলে বাড়ছে নদ-নদীর পানি, বন্যার আশঙ্কা
সিলেট অফিস: সিলেট বিভাগজুড়ে আগামী সাত দিনের মধ্যে বৃষ্টি শুরু হবে। আর নদ-নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং আগামী দুইদিনের মধ্যে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। ফলে বাংলাদেশ সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র থেকে আগাম বন্যার এক পূর্বাভাসে এ তথ্য দেওয়া হয়েছে।
বুধবার বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান সাক্ষরিত হাওর অঞ্চলের নদ-নদীর পরিস্থিতি ও পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সকল প্রধান নদ-নদীসমূহের পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বাংলাদেশ ও বৈশ্বিক আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্যের বরাতে জানানো হয়, আগামী ৪৮ ঘন্টা (বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার) দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে।
এ সময়ে সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার প্রধান নদ-নদীসমূহের পানি সমতল সময় বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এ সময়ে সিলেট জেলার সীমান্ত সংলগ্ন সুরমা নদীর কানাইঘাট, লুভাছড়া নদীর লুভাছড়া, সারিগোয়াইন নদীর সারিঘাট ও গোয়াইনঘাট পয়েন্টে পানি সমতল স্বল্পমেয়াদে প্রাকমৌসুমী বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে।
বন্যা সতর্কীকরণ ও পূর্বাভাস কেন্দ্রের তথ্যমতে, গত চব্বিশ ঘন্টায় সিলেটের জৈন্তাপুরের লালাখাল স্টেশনে ৭০ মিলিমিটার, জকিগঞ্জ পয়েন্টে ৬৮ মিলিমিটার, বিয়ানীবাজারের শেওলা পয়েন্টে ৫৪ মিলিমিটার, কানাইঘাট পয়েন্টে ৫১ ও সিলেট শহর পয়েন্টে ৫১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
একই সময়ে ভারতের আসামের শিলচরে ৬২ মিলিমিটার এবং মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে ১৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, এবার বর্ষায় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হতে পারে। আর বাংলাদেশের জন্য খবর হলো, এ দেশে বর্ষায় বৃষ্টি যেমন বেশি হবে, তেমনি বাংলাদেশের উজানে ভারতের রাজ্যগুলোতেও বৃষ্টি বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে বর্ষায় বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল অর্থাৎ- সিলেট বিভাগে বন্যা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা আছে। বরং অন্যান্য বছর যে বন্যা হয়- তা এবার আরও ব্যাপক রূপ নিতে পারে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানিয়েছেন, দেশের অভ্যন্তরে এবং উজানের মেঘালয়ে এই মাসের প্রথম সপ্তাহে ভারী এবং অতিভারী বৃষ্টিপাতের আশংকা আছে। সুনামগঞ্জে ওই সময়ে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাবে এবং বন্যার আশংকাও রয়েছে।
নিউজ ১২
সিলেটে কৃষি প্রযুক্তি মেলার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ
সিলেট অফিস : সিলেট জেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে আয়োজিত ৬দিনব্যাপী কৃষি প্রযুক্তি মেলার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২ মে) বিকাল ৩টায় কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা জোরদারকরণ প্রকল্প ও আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সিলেট অঞ্চলের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প এবং ফ্লাড রিকনস্ট্রাকশন ইমারজেন্সি এসিসটেন্স (ফ্লিপ) এর অর্থায়নে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বলেন, সরকার বিভিন্ন ধরনের পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে কৃষকদের উন্নয়নে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। কৃষকরা যাতে তাদের ফসল ভালোভাবে ফলন করতে পারে সেই চিন্তা ভাবনা নিয়েই সরকার কাজ করছে। বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণ করতে হলে আমাদের কৃষি খাতে উন্নতি করতে হবে। খাদ্য মানুষের মৌলিক চাহিদা। এ চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার কৃষি খাতে ব্যাপক অগ্রগতি করছেন। তিনি আরও বলেন, দেশকে খাদ্যে সয়ংসম্পূর্ণ করতে হলে আমাদের সবাইকে কৃষি বিপ্লব ঘটাতে হবে। দেশকে এগিয়ে নিতে প্রবাসী বাংলাদেশীদের কৃষি খ্যাতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে তাদের অনাবাদি জমি ফসলে রূপান্তরিত করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ‘এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে’ সে লক্ষ্যে বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। প্রযুক্তি নির্ভর হবে আগামী বাংলাদেশ। তিনি প্রত্যেককে নিজ নিজ জমিতে চাষ করে কৃষি খ্যাতে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানান ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ খয়ের উদ্দিন মোল্লাহ এর সভাপতিত্বে ও সিলেট সদর উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মুক্তা সরকার এর উপস্থাপনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সিলেট সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার নাসরিন আক্তার।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো: আনিসুজ্জামান, অতিরিক্ত উপ-পরিচালক দেবল সরকার, সিলেট সদর উপজেলার কৃষি অফিসার অপূর্ব লাল সরকার, সিলেট জেলার প্রশিক্ষক অফিসার দীপক কুমার দাস, কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা জোরদারকরণ প্রকল্প ও আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সিলেট অঞ্চলের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের মনিটরিং অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন পলাশ। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলওয়াত করেন হাফিজ মাওলানা জামিল সিদ্দিকী। গীতা থেকে পাঠ করেন নন্দ দুলাল।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা, অতিরিক্ত উপপরিচালবৃন্দ ও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাবৃন্দ, বিএডিসি কর্মকর্তাবৃন্দ, এসডিআই কর্মকর্তাবৃন্দ, আলীম ইন্ডাস্ট্রিজের কর্মকর্তাবৃন্দ, সিলেট নার্সারী কল্যাণ সংস্থার সদস্যবৃন্দ ও বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ। অনুষ্ঠান শেষে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ক্রেস্ট, সম্মাননা স্মারক ও কৃষকদের মধ্যে বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা প্রদান করা হয়।
খালিদ সাইফুল // দৈনিক দেশতথ্য // ২ মে ২০২৪