লক্ষ্য মাত্রা ১১ লক্ষ ২৬ হাজার মেট্রিক টন
সিলেটে আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে।ইতিমধ্যে ৮ থেকে ১০ ভাগ ফসল কাটা হয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যে সব ধান কর্তন হয়ে যাবে বলে জানিয়েছে সিলেটের কৃষি বিভাগ। তবে কোথাও কোথাও পোকার আক্রমণের কথা জানান কৃষকরা। প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাত ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের আবাদ ভালো হওয়ায় কৃষকদের মধ্যেও স্বস্তি বিরাজ করছে। বৃষ্টিপাতের কারণে যেসব জমিতে একটু পরে রোপন করা হয়েছিল সেগুলোতেও ভালো ধান এসেছে। অনেক স্থানে পোকার আক্রমণের কথাও জানা গেছে। ধান সংগ্রহে কৃষক কৃষাণীর ঘরে এখন ব্যস্ততা। ধান তোলার জন্য ঝুড়ি, তেপ্রল, বস্তা প্রস্তুত করছেন। কেউবা প্রস্তুত করছেন ধানের খলা, মেরামত করছেন ধানের গোলা।
সিলেটের ৪ জেলায় এ বছর ৪ লক্ষ ১৫ হাজার ৬০৩ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। এ থেকে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১১ লক্ষ ২৬ হাজার ৭৬০ মেট্রিক টন চাল।
সিলেট জেলায় চাষ হয়েছে ১ লক্ষ ৪৫ হাজার ৩১০ হেক্টর জমিতে এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৩ লক্ষ ৭৩ হাজার ৯৭১ মেট্রিক টন চাল। সুনামগঞ্জ জেলায় ৮৩ হাজার ৩৬৯ হেক্টর জমি আবাদে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ২ লক্ষ ৬ হাজার ১৬২ মেট্রিক টন। মৌলভীবাজারে ১ লক্ষ ২ হাজার ১৮০ হেক্টর চাষাবাদে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৩ লক্ষ ১ হাজার ৯১৮ মেট্রিক টন। হবিগঞ্জে আমন চাষাবাদ হয়েছে ৮৮ হাজার ৩১৬ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রা মাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ২ লক্ষ ৪৪ হাজার ৭০৯ মেট্রিক টন চাল।
কানাইঘাটের পশ্চিম লক্ষীপ্রসাদ ইউনিয়নের কৃষক বাহাউদ্দিন জানান, তিনি প্রায় ৭০ কেদার জমি চাষ করেছেন। ধান ভালো হয়েছে। কিছু জমিতে ধান মোটামুটি হয়েছে। তবে বাজারে ধানের দাম ভালো থাকায় ধান চাষ থেকে কিছুটা আয় আসতে পারে বলে আশাবাদী তিনি।
গোলাপগঞ্জ উপজেলার কিসমত মাইজভাগ গ্রামের কৃষক মনজ্জির উদ্দিন চৌধুরী ধান উৎপাদন ও বিক্রি করে আসছেন দীর্ঘদিন থেকে। তিনি জানান, মাঠে ফলন ভালো হয়েছে। তার এলাকায় কিছু জমিতে পোকার আক্রমণে পুরো জমি নষ্ট হয়ে গেছে। সেসব জমি থেকে কোন ধানই পাওয়া যাবে না বলে আশংকা করছেন তিনি। তবে ফসলের উৎপাদন খরচ ও বিক্রির সময়ের দাম নিয়ে দুশ্চিন্তার কথা জানান কৃষকরা। তারা জানান, কৃষি শ্রমিক সংকট ও মজুরী বৃদ্ধি পাওয়ায় খরচ বেড়ে গেছে। অপরদিকে, বিক্রির সময় ধানের দাম পাওয়া যায় না। ধান উৎপাদন করেও লাভের মুখ দেয়া কঠিন হয়ে যায় বলে জানান কৃষকরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সিলেটের অতিরিক্ত উপপরিচালক মোহাম্মদ আনিসুজ্জামন বলেন, রোপা আমনের ফলন ভালো হয়েছে। কৃষকরা ইতিমধ্যে ধান কর্তন শুরু করেছেন। কৃষকরা ভালো ফলন পাবেন বলে তার আশা। গত দুই দিনের বৃষ্টিতে নতুন রোপণ করা সবজির কিছুটা ক্ষতি হলেও, আমন ধানের কোন ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। প্রতি উপজেলা ও উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক কৃষকদের সাথে যোগাযোগ রাখছেন। যেখানেই সমস্যা হচ্ছে সেখানেই তারা কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা দিচ্ছেন। কৃষক পোকার বিষয়টি দ্রুত কৃষি বিভাগকে জানালে সহজেই পোকা দমন করা যায়। এখনো ধানের দাম ভালোই আছে। কিছুদিন পরেই সরকারি ভাবে ধান সংগ্রহের কাজ শুরু হবে। সরকার প্রতি মণ ১২শ’ টাকা নির্ধারণ করেছেন। সবকিছু স্বাভাবিক থাকলে কৃষক ধানের ভালো দাম পাবেন বলেও মন্তব্য করেন উপপরিচালক আনিসুজ্জামান।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//নভেম্বর ১৯,২০২৩//
![প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন](http://dailydeshtottoh.com/wp-content/plugins/wp-print/images/printer_famfamfam.gif)
Discussion about this post