Print Date & Time : 23 August 2025 Saturday 5:35 am

সিলেটে ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দা ভাব

সিলেট অফিস:
‘করোনা পরিস্থিতির চেয়েও ভয়াবহ মন্দা ভাব বিরাজ করছে সিলেটের ব্যবসা-বাণিজ্যে। প্রয়োজনীয় পণ্য ছাড়া অন্য কিছুই ক্রেতারা এখন তেমন একটা কিনছেন না।

তাই ব্যবসায়ে স্থবিরতা নেমে এসেছে। এ অবস্থা কবে দূর হবে, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।’ ফলে এ নিয়ে চরম শংকায় রয়েছেন সিলেটের ব্যবসায়ীরা।ক্রেতারা চাল, ডাল, সবজি, মাছ–মাংসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ছাড়া অন্যান্য জিনিসপত্র খুব একটা কিনছেন না। কারফিউ শিথিলের সময় নগরের বিপণিবিতান ও দোকানপাট খোলা থাকলেও ক্রেতাদের তেমন উপস্থিতি দেখা যায় না।

কয়েকটি বিপণিবিতানের ব্যবসায়ীরা জানান, কারফিউ চলাকালে প্রথম চার দিন বিপণিবিতান ও দোকানপাট পুরোপুরি বন্ধ ছিল। এখন কারফিউ শিথিল হলেও মানুষ ঘর থেকে প্রয়োজন ছাড়া খুব একটা বের হচ্ছেন না। যানবাহন চলাচলও স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কম। এতে বেচাকেনায় স্থবিরতা নেমে এসেছে। এ অবস্থায় চলতি মাসে অনেকে দোকানভাড়া ও কর্মীদের বেতন দিতে হিমশিম খাবেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কাঁচাবাজারে সবজি, মাছ, মাংস, ফল ও মুদিদোকানে ভিড় থাকলেও বিভিন্ন বিপণিবিতান ও মার্কেটগুলোয় কাপড়, জুতা, কসমেটিকস প্রভৃতি পণ্যের দোকানে ক্রেতা নেই। দোকানি ও বিক্রেতারা গল্পগুজব করে অলস সময় কাটাচ্ছেন। কেউ কেউ পত্রপত্রিকা পড়ছেন। আবার কেউ কেউ গদিতে বসে ঝিমুচ্ছেন।

ব্যবসায়ীরা বলেন, সিলেটে গত দুই মাসে তিন দফা বন্যা হয়েছে। সেই ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার সুযোগ পাননি তাঁরা। এরই মধ্যে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে কয়েক দিন দোকানপাট বন্ধ ছিল। এখন পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে এলেও মানুষের মধ্যে একধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। তাই সারা দিনেও ক্রেতা মিলছে না। হাতে গোনা কয়েকজন ব্যবসায়ী টুকটাক বিক্রি হচ্ছে বলে জানান।

সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, সিলেটে সবচেয়ে বেশি ধস নেমেছে পর্যটন খাতে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে সিলেট। অথচ এই বর্ষা মৌসুমেই সিলেটে সবচেয়ে বেশি পর্যটক ভিড় করেন। ১৭ জুলাই থেকে সিলেটের প্রায় প্রতিটি হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ফাঁকা হয়ে যায়। পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত পর্যটক আসার সম্ভাবনা দেখছেন না এই খাতের ব্যবসায়ীরা।

বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন ও চেম্বারের কয়েকজন নেতা জানান, গত ১০ দিনে সিলেট নগর ও ১৩টি উপজেলায় ব্যবসা-বাণিজ্যে কয়েক হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে তাঁরা ধারণা করছেন।

নগরীর দাড়িয়াপাড়া এলাকার কাপড়ের দোকান ষড়ঋতুর প্রধান নির্বাহী হুমায়ূন কবির জুয়েল বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে যে সহিংসতা ও জ্বালাও-পোড়াও হয়েছে, তাতে মানুষ এখনো আতঙ্কে রয়েছেন। এ ছাড়া কারফিউর কারণে অনেকেই বাসার বাইরে বেরোচ্ছেন না। এতে ব্যবসা-বাণিজ্য খারাপ যাচ্ছে।

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সিলেট জেলা শাখার মহাসচিব আবদুর রহমান রিপন বলেন, বিশেষ করে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বেশি চাপে আছেন। অনেক ব্যবসায়ী ব্যাংকঋণে জর্জরিত। আবার অনেকে এখন কারেন্ট বিল, কর্মীদের বেতন ও দোকানভাড়া কীভাবে মেটাবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন।

দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//