এস এ শফি, সিলেট:
আগামী ৮ মে সিলেটের চারটি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তফসিল ঘোষণার পরপরই এসব উপজেলায় সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীরা প্রচারণায় নেমে পড়েছেন। রোজা এবং ঈদকে কাজে লাগিয়ে আওয়ামী লীগ ও জামায়াতের প্রার্থীর দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। জনমত গঠনে কাজ করছেন রাতদিন। সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ভোটারদের দোয়া চাইছেন। দুদলের নেতাকর্মীদের পদচারণায় মাঠ গরম হয়ে উঠলে ও সম্পূর্ণ নিরব দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপি। এ সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে যাবেনা ঘোষণা দিয়ে নেতাকর্মীদের ও অংশ নিতে বাধা দিচ্ছে দলটির নেতারা। তবে কোন কোন উপজেলায় দলটির নেতারা নির্বাচনে অংশ নিতে উকি ঝুকি দিচ্ছেন কিছু নেতা। ইশারা পেলে হয়তো তারা ও মাঠে নামবেন এমনটিই বুঝা যাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেট সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সুজাত আলী, জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি এজাজুল হক, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক মিল্লাত চৌধুরী এবং আওয়ামী লীগ নেতা ও মোগলগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান শামসুল হক প্রার্থী হতে তৎপর আছেন। এ উপজেলায় জামায়াত নেতা ইসলাম উদ্দিন প্রার্থী হবেন।
দক্ষিণ সুরমা উপজেলায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে মাঠে আছেন। তাঁরা হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শামীম আহমদ, যুগ্ম সম্পাদক বদরুল ইসলাম, সদস্য মইনুল ইসলাম এবং যুক্তরাষ্ট্র শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল আহমদ। এ উপজেলায় জালালপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা সোলেমান হোসাইন প্রার্থী হতে মাঠে আছেন।
গোলাপগঞ্জ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের চারজন প্রচারণা চালাচ্ছেন। তাঁরা হলেন বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মঞ্জুর কাদির শাফি, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি লুৎফুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সাহিদুর রহমান চৌধুরী এবং আওয়ামী লীগ নেতা আবু সুফিয়ান। এখানে গোলাপগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমির ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজ নাজমুল ইসলাম প্রার্থী হতে তৎপর আছেন।
বিশ্বনাথ উপজেলায় আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য মো. নুনু মিয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন আহমেদ, পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আলতাব হোসেন, যুক্তরাজ্যের ডরসেট আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল রোশন, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সদস্য শমসাদুর রহমান রাহিন এবং যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ আলীর নাম সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে শোনা যাচ্ছে। এ উপজেলায় জামায়াতের উপজেলা শাখার আমির খাজাঞ্চি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন সিদ্দিকীও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
এছাড়াও জেলার বিয়ানীবাজার, জকিগন্জ, জৈন্তাপুর, কোম্পানীগন্জ, গোয়াইনঘাট ও কানাইঘাট উপজেলায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের সাথে সমানতালে প্রচার প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন জামায়াতের মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতারা।
এ ব্যাপারে আলাপকালে সিলেট জেলা উত্তর জামায়াতের আমির হাফিজ আনোয়ার হোসেন বলেন, দলীয়ভাবে জামায়াত নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। তবে কেউ ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রার্থী হলে বাধাও দেবে না।
সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খান খান বলেন, ‘স্থানীয় পর্যায়ে আমাদের কোনো পছন্দ নেই। নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। এতে যিনিই বিজয়ী হবেন, তাঁকেই আমরা স্বাগত জানাব।’
খালিদ সাইফুল // দৈনিক দেশতথ্য // ৭ এপ্রিল ২০২৪