সিলেট অফিস:
কোটা আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই সিলেট মহানগরীর বন্দরবাজার এলাকায় গুলিতে সাংবাদিক এটিএম তুরাব নিহতের ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা
দায়েরের উদ্দেশ্যে লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।
বুধবার (২৪ জুলাই) রাতে নিহতের ভাই বাদী হয়ে অভিযোগটি দায়ের করেন। তবে পুলিশ সেটি জিডি (সাধারণ ডায়েরি) হিসেবে নিয়েছে। অভিযোগপত্রে ৮-১০ অজ্ঞাত
পুলিশকে অভিযুক্ত করেছেন তোরাবের বড় ভাই আবুল হাসান মো. আজরফ (জাবুর আহমদ)।
এ সময় সিলেট প্রেসক্লাবসহ প্রতিনিধিত্বশীল সাংবাদিক সংগঠন গুলোর
নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অভিযোগ দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মঈন উদ্দিন শিপন বলেন, এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে আগেই একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সেটির তদন্ত চলছে। বুধবার রাতে পরিবারের পক্ষ
থেকে দায়েরকৃত অভিযোগটি আমরা রেখেছি এবং জিডি হিসেবে রেকর্ড করেছি।
এক প্রশ্নের উত্তরে ওসি বলেন, কার এবং কোন দিক থেকে আসা গুলিতেবিদ্ধ হয়ে তিনি মারা গেছেন, এসব বিষয় তদন্ত করা হচ্ছে। এখনই নিশ্চিত হয়ে কিছু বলাযাচ্ছে না। পরিবারের লিখিত অভিযোগ ও পুলিশের মামলাকে সমন্বয় করে তদন্ত
এগুচ্ছে।
বুধবার রাতে কোতোয়ালি থানায় সিলেটের সাংবাদিকদের প্রতিনিধিত্বশীল সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন তুরাবের বড় ভাই আবুল
হাসান। অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশকমিশনার আজবাহার আলী শেখ (পিপিএম) কোতোয়ালী থানার ওসি মো. মঈন উদ্দিন
শিপন।
অভিযোগে আবুল হাসান উল্লেখ করেন, গত শুক্রবার (১৯ জুলাই) দুপুর ১ টা ৫৫ মিনিটের সময় পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য মহানগরের বন্দরবাজার এলাকার
কোর্ট পয়েন্টে অবস্থান করছিলেন তুরাব। এক পর্যায়ে বিএনপির মিছিল শুরু করলে তুরাব মিছিলের পিছনে অন্যান্য সহকর্মীদের সঙ্গে অবস্থান নেয়।
মিছিলটি পুরানলেন গলির মুখে পৌঁছলে সশস্ত্র পুলিশ বিপরীত দিকে অবস্থান নেয়। ওই সময় হঠাৎ লাগাতার গুলিবর্ষণের শব্দ শুনা যায় এবং তুরাব চিৎকার করে মটিতে লুটিয়ে পড়ে। তখন সহকর্মী ও পথচারীরা তাকে দ্রুত সিলেট এমএজি
ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় এবং তার শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য
মহানগরের সোবহানীঘাট এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়।
সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় ওই দিন সন্ধ্যা ৬টা ৪৪ মিনিটের সময় সে মৃত্যুবরণ করে।
গোলাগুলির স্থিরচিত্র ও ভিডিও চিত্র সেখানে কর্তব্যরত সাংবাদিকদের কাছে রয়েছে বলে আবুল হাসান অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন এবং অজ্ঞাত ৮-১০ জন
পুলিশকে অভিযুক্ত করেছেন।
উল্লেখ্য, এটিএম তুরাব দৈনিক নয়া দিগন্তের সিলেট প্রতিনিধি ও স্থানীয় দৈনিক জালালাবাদের ষ্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

Discussion about this post