আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সারা দেশের ন্যায় সিলেট -৫ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থীরা শেষ মুহুর্তেের প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। পুরো আসনের প্রতিটি জনপদ নির্বাচনী প্রচার প্রচারনায় মুখরিত। ব্যানার ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে পুরো এলাকা। বাজারের হাটবাজার গুলোতে চলছে প্রার্থী নিয়ে চুলছেরা বিশ্লেষণ। তবে এখন পর্যন্ত পুরো আসনে তিনজন প্রার্থীকে নিয়ে ভোটাররা বেশ আশাবাদী। পাশাপাশি ত্রিধারায় বিভক্ত এ আসনের আওয়ামী লীগের ভোট ব্যাংক ভাগ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আসনে ত্রিধারায় বিভক্ত আওয়ামীলীগের এক বলয়ের নেতৃত্বে রয়েছেন হাফিজ আহমদ মজুমদার। আরেক গ্রুপে রয়েছেন মাসুক উদ্দিন আহমদ ও আহমদ আল কবির। আওয়ামী লীগের এ বিভক্তিতে সুবিধাজনক অবস্থায় ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের নেতা হুছামুদ্দীন চৌধুরী।
সময় ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে হুছামুদ্দিন চৌধুরীর সাথে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সীমান্তিকের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. আহমদ আল কবিরের লড়াই জমে উঠবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
জকিগন্জ – কানাইঘাট উপজেলা নিয়ে গঠিত সিলেট – ৫ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন দলটির সিলেট মহানগর শাখার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ,স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন যুবলীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সীমান্তিকের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. আহমদ আল কবির, আনজুমানে আল ইসলাহর সভাপতি মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরী,জাতীয় পার্টির শাব্বীর আহমদ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) মো. খায়রুল ইসলাম, তৃণমূল বিএনপির কুতুব উদ্দিন শিকদার ও বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. বদরুল আলম।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম জনসম্মুখে তুলে ধরার মাধ্যমে নৌকা মার্কায় ভোট প্রার্থনা করে যাচ্ছেন।তবে ভোটের হিসেবে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছেন।
ধর্মভিত্তিক সংগঠন আনজুমানে আল ইসলাহর সভাপতি মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরী মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণার পর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এসেছেন তিনি।এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে এলাকায় তারও নিজস্ব ভোট ব্যাংক রয়েছে। মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরীর বাবা ফুলতলী হুজুর হিসেবে পরিচিত আল্লামা আবদুল লতিফ চৌধুরী। সিলেটজুড়ে রয়েছে তার অসংখ্য ভক্ত ও মুরিদ। আবদুল লতিফ চৌধুরী গড়ে তোলেন ধর্মভিভিত্তিক সংগঠন আনজুমানে আল ইসলাহ। তার মৃত্যুর পর ছেলে হুছামুদ্দীনই এ সংগঠনটি পরিচালনা করছেন। জকিগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা হুছামুদ্দীন চৌধুরীর প্রয়াত বাবা আল্লামা আবদুল লতিফ চৌধুরী সারা দেশে ‘ফুলতলী হুজুর’ পরিচিত। মাওলানা আবদুল লতিফের তৈরি করা সংগঠন আনজুমানে আল ইসলাহের অসংখ্য ভক্ত ও মুরিদ আছেন। ফুলতলীর অনুসারীদের সিলেট-৫ আসনে একটা ‘ভোটব্যাংক’ আছে। তার এ ভোট ব্যাংক আসন্ন নির্বাচনে বৈতরণি পার হওয়ার পথ সহজ করে দিবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাসুক উদ্দিন বলেন, ‘নেত্রী আমাকে নৌকা দিয়ে এলাকায় পাঠিয়েছেন। জোট বা ছাড়ের বিষয়ে আমাকে কিছু বলেননি। এ ছাড়া জকিগঞ্জ-কানাইঘাটে আওয়ামী লীগও ঐক্যবদ্ধ।’
আলাপকালে মাওলানা হুছামুদ্দিন চৌধুরী বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অনেক রাজনৈতিক দল অংশ নিচ্ছে না,ঐসব দলের নির্যাতিত নেতৃবৃন্দ এবং অধিকার ও সুবিধা বঞ্ছিত মানুষের পক্ষে সংসদে কথা বলার জন্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি। নির্বাচিত হলে মাদ্রাসা শিক্ষার স্বকিয়তা রক্ষাসহ পাঠ্যপুস্তক থেকে ইসলাম বিরোধী বিষয়াদি দুরীকরণে সাহসী ভূমিকা পালন করবো।
তিনি আরোও বলেন, কোন রাজনৈতিক দলের হয়ে নির্বাচিত হলে একাত্তর বিধি অনুযায়ী দলীয় সিন্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া যায় না, তাই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচিত হয়ে সর্বস্থরের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করতে চাই। স্থানীয় উন্নয়নের ব্যাপারে সকল প্রকার বৈষম্য ও আঞ্চলিকতার উর্ধ্বে থেকে জনস্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে বিগত দিনের মতো সুখে দুখে মানুষের পাশে থাকবো।
ড. আহমদ আল কবির বলেন, শিক্ষা-স্বাস্থ্যসহ সমাজের নানা ক্ষেত্রে আপনাদের সহযোগিতায় মানুষের মান উন্নয়নে আমী কাজ করে যাচ্ছি। আমি কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে সিলেটে যুবকদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। সেই দিক থেকে আমি অনেক সাড়া পাচ্ছি, যেখানে যাচ্ছি যুবকরা আমাকে গ্রহণ করেছে। আশা আমি নির্বাচিত হলে কানাইঘাট ও জকিগঞ্জবাসীর জন্য কাজ করে যেতে পারবো।
সোহাগ//দৈনিক দেশতথ্য//ডিসেম্বর ২৯,২০২৩//

Discussion about this post