রুকুনুজ্জামান পার্বতীপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
আসন্ন ঈদ উপলক্ষে অধিক যাত্রী পরিবহন করতে নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় ১২০টি কোচ মেরামত করা হচ্ছে। এছাড়াও নিয়মিত কাজেরসিডিউলে মেরামত করা হচ্ছে আরও ৪০টি কোচ ঈদ উপলক্ষেমোট ১৬০টি কোচ রেল বহরে যুক্ত করা হচ্ছে।
এসব কোচ দিয়ে পশ্চিমাঞ্চলরেলওয়ে দুটি ঈদ স্পেশাল ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এরপাশাপাশি প্রতিটি আন্তঃনগর ট্রেনের সঙ্গে বাড়তি কোচ সংযোজনকরা হবে।
এই লক্ষ্য পূরণে রেল কারখানার ২৮টি সপ কর্মমুখর হয়ে উঠেছে।শ্রমিক-কর্মচারীরা কোচ মেরামতে দৈনিক কর্মঘন্টা শেষে অতিরিক্ত কাজ করছেন। ইতোমধ্যে ঈদযাত্রায় হস্তান্তর করা হয়েছে ১২৪টি কোচ।
কারখানা সূত্রে জানা যায়, সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় মঞ্জুরী ২ হাজার ৮৫৯জন লোকবল থাকলে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ৭০৭ জন শ্রমিক-কর্মচারী।
নতুন নিয়োগ বন্ধ থাকায় মাত্র ২৫ শতাংশ জনবল উৎপাদনে রয়েছে কারখানাটি।আসন্ন ঈদুল ফিতরে যাত্রী চাপ সামলাতে অতিরিক্ত কোচ মেরামত করারকর্মযজ্ঞ চলছে। কারখানার ক্যারেজ, বগি, হেভি রিপিয়ারিং সপ, ক্যারেজ কনস্ট্রাকশন ও পেইন্ট সপে অচল পুরাতন কোচের মেরামত কাজ চলছে। এসবসপে কোচের জরাজীর্ণ কাঠামো পরিবর্তন, চাকার ট্রলি মেরামত, নতুনআসন স্থাপন ও অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জার কাজ করা হচ্ছে। সবশেষে রঙকরণের কাজ হচ্ছে পেইন্ট সপে। এসব কাজে যন্ত্রাংশের যোগান দিয়ে সহায়তা করছে কারখানার আরও ২৪টি সপ।কারখানা ক্যারেজ সপের ইনচার্জ প্রকৌশলী মমিনুল ইসলাম জানান, ঈদউপলক্ষে কারখানার ডিএস মহোদয় মোস্তফা জাকির হাসানের তত্ত্বাবধায়নে জনবল সংকটের মুখে ১০ জনের কাজ করছেন দুইজন শ্রমিক। ঈদকে সামনে রেখে ১২০টি কোচ মেরামত করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৯০টি ব্রডগেজ (বিজি) ও ৩০টি মিটার গেজ (এমজি) রেলপথের কোচ।এছাড়া অতিরিক্ত ৪০টি কোচ নিয়মিত কাজের অধীন মেরামত করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে মেরামত করা ৭৮টি বিজি ও ১৮টি এমজি কোচ এবংনিয়মিত কাজে ৪০টি কোচের মধ্যে ২৮টি কোচ পাকশী ও লালমনিরহাটট্রাফিক বিভাগে হস্তান্তর করা হয়েছে। অবশিষ্ট কোচগুলো আগামী ২০মার্চের মধ্যে পর্যায়ক্রমে হস্তান্তর সম্পন্ন হবে কারখানার সিডিউল সপের ইনচার্জ প্রকৌশলী রুহুল আমীন জানান, ঈদে ট্রেন বহরে অধিক যাত্রী পরিবহনের সক্ষমতা বাড়তে নিয়মিত কাজের বাইরে ১২০টি কোচ সচল করা হচ্ছে। জরাজীর্ণ কোচগুলোকে নতুন কোচে রূপান্তর করা হচ্ছে। নানামুখী সংকট থাকলেও অগ্রাধিকার দিয়ে ঈদের বাড়তি কোচ সরবরাহের কাজ করছি আমরা। কারখানার শ্রমিক-কর্মচারীরা বলেন, মালামাল ও লোকের সংকট থাকলেও ঈদে যাত্রী সেবার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নেয়া হয়েছে। আমরা অতিরিক্ত শ্রম দিয়ে কয়েক গুণ বেশী কাজ করছি কোচ মেরামতের লক্ষ্য পূরণে। যাতে ঈদযাত্রায় অধিক সংখ্যক যাত্রী পরিবহন করতে পারে রেলওয়ে।
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) মোস্তফা জাকির হাসান বলেন, ঈদে রাজধানী ঢাকা থেকে পশ্চিমাঞ্চলগামী যাত্রীরা যাতে নিরাপদে গন্তব্যে ফিরতে পারেন সেজন্য প্রতিটি আন্তঃনগর ট্রেনের সঙ্গে অতিরিক্ত কোচ সংযুক্ত করার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এছাড়াও পার্বতীপুর-জয়দেবপুর ও খুলনা-জয়দেবপুর রুটে দুই জোড়া ঈদ স্পেশাল ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। যা ঈদের আগে ও ঈদের পরে চলাচল করবে। এজন্য ১২০টি কোচ মেরামতের সঙ্গে নিয়মিত কাজের আরও ৪০টি কোচ মেরামত করা হচ্ছে। সবগুলি কোচ ২৪ মার্চের মধ্যে হস্তান্তরের লক্ষ্য থাকলেও তা ২০ মার্চের মধ্যে রেলওয়ের ট্রাফিক বিভাগে হস্তান্তর করা হবে।