ফজলুল হক, কালিয়াকৈর:
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেছেন, আমাদের স্বস্তীর জায়গা হচ্ছে, সাধারণ মানুষকে স্বস্তীতে তাদের গন্তব্যে পাঠাতে পারি। এতেই বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সদস্য স্বস্তী বোধ করি।
গতকাল শনিবার দুপুরে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক পরিদর্শন শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় হাইওয়ে পুলিশের এডিশনাল আইজি, হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি, পুলিশ সুপার সহ হাইওয়ে ও জেলা পুলিশের সকল উর্ধŸতন কর্মকর্তা বৃন্দ।
তিনি আরো বলেন, নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে ঈদযাত্রার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, নৌ পরিবহন মন্ত্রনায়ল, সড়ক-মহাসড়ক বিভাগ, স্বরাষ্ট মন্ত্রণালয়ে মিটিং করা হয়েছে। এছাড়াও জেলা প্রশাসকগন মিটিং করছে। আমরা গত ঈদুল ফিতরেও পরিশ্রম করে নির্বিঘ্নে ঈদযাত্রার ব্যবস্থা করেছিলাম। এটা সে সময় একটা চমৎকার ব্যবস্থা ছিল। সেটা সর্ব মহলে প্রশংসিত হয়েছে। এবারও আমরা সেই প্রত্যয় নিয়ে এসেছি। সকলের সহযোগীতায় গত ঈদের মতো এবার কোরবানী ঈদেও সবাইকে নির্বিঘ্নে যথা সময়ে যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবো।
সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আইজিপি বলেন, সরকার ঈদের ছুটি একদিন আগে বাড়িয়ে দিয়েছে। যাতে করে যাত্রীরা যথা সময়ে গন্তব্যে পৌছাতে পারে। এক সময় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা মোড়ে একটা রোড ছিল। সেসময় এক পাশ বন্ধ করে অপর পাশে দিয়ে গাড়ি চালাতে হতো। কিন্তু সরকার গুরুত্বপূর্ণ চন্দ্রা মোড়ে বিভিন্ন বিকল্প ব্যবস্থা করেছে। এছাড়া বাংলাদেশের অহংকার পদ্মা সেতু সরকার স্থাপন করেছে। যার কারণে সেখান দ্রুতগতিতে সকল যানবাহন চলে যাচ্ছে। মহাসড়কের উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। যার মাধ্যমে সকল রোডে যাত্রী সাধারণ যথা সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছে। এখনো সড়কের কার্যক্রম চলমান। এই সকল কার্যক্রম সম্পূর্ণ শেষ হলে এভাবে শত শত পুলিশের এতো পরিশ্রম করতে হবে না। জনসাধারন যথা সময়ে নির্বিঘ্নে দ্রুত চলে যেতে পারবে।
যাত্রীদের সতর্কতার লক্ষে তিনি বলেন, নিরাপদ ভ্রমনের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং ট্রাফিক ব্যবস্থা দুটিই রাখবো। কারো কোনো প্রয়োজন হলে আমাদের নিকটস্থ পুলিশের সহায়তা নিন। আমরা সর্বক্ষণ আপনাদের পাশে আছি। এরপরও যদি কোনো কিছু দুরত্বে সমস্যা হয় তাহলে ৯৯৯-এ ফোন দিবেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে পুলিশ পৌঁছে যাবে।
আইজিপি বলেন, সমস্ত পরিস্থিতি মোকাবেলায় রেকার, অ্যাম্বুলেন্স, ড্রোন থাকবে। গত ঈদের চেয়ে এবারের ঈদ ভিন্নধর্মী। গত ঈদে চ্যালেন্জ ছিল শুধু যাত্রীদের গন্তব্যে পৌছানো। কিন্তু এবার চ্যালেন্জ যাত্রীদের পাশাপাশি পশুবাহী ট্রাক ও নৌকাগুলো গন্তব্যস্থলে পৌছানো।
গরুর হাটের নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, প্রতিটি পশুর হাট যাতে নিরাপদ রাখা যায়। যে সকল ট্রাক ও নৌকা দিয়ে বিভিন্ন পশুর হাটে পশু নিয়ে আসবে। পশুবহনকারী তাদের গন্তব্যস্থলে ব্যানার টানিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। এর মধ্যে কোথাও পশুবাহী ট্রাক ও নৌকা থামাবে না। যদি কেউ থামাতে চায়, তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কেউ যদি চাঁদাবাজি করে তাহলে আমাদেও জানান, নিকটস্থ পুলিশে জানান এবং ৯৯৯-এ ফোন করেন। আমরা আপনাদের সেবায় আছি, আপনাদের যেকোনো আহবানে সারা দিতে পুলিশ প্রস্তুত আছে। এছাড়াও পুলিশ, সিআইডিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সকল ইউনিট ঈদের সময় আমরা প্রস্তুত থাকবো। যে কোনো সমস্যা মোকাবেলার জন্য দ্রুততম সময়ে আমরা যাতে যেকোন বিপদে আপনাদের পাশে দাঁড়াতে পারি। এর জন্য পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে।
ঈদের সময় জাল টাকার বিস্তারের বিষয়ে তিনি বলেন, জাল টাকা নিয়ে মানুষকে প্রতারণা করে একটি কুচক্র মহল। প্রতিটি মার্কেটে জাল টাকা সনাক্তের জন্য মেশিন স্থাপন করা হবে। কারো সন্দেহ হলে সেখানে নিয়ে পরিক্ষা করতে পারবেন। এছাড়াও জাল টাকার যারা ব্যবসা করে, ইতিমধ্যে তাদের গ্রেপ্তার করা শুরু করেছি। বেশ কিছু চক্র ধরা পড়েছে। অজ্ঞানপার্টি, মলমপার্টিসহ বিভিন্ন অপরাধীদের বিরুদ্ধেও অভিযান চলমান আছে। এসময় যাত্রী সাধারন ও পশু ব্যবসায়ীদের কারো লোভনীয় প্রস্তাবে পড়ে নিজে প্রতারিত না হওয়ার জন্য সতর্ক করেন আইজিপি।
দৈনিক দেশতথ্য// এইচ//

Discussion about this post